পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন বলেছেন, রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে নিরাপত্তা ও সম্মানের সাথে ফিরেয়ে দিতে চেষ্টা করছে বাংলাদেশ। কিন্তু এ বিষয়ে আন্তরিক নয় মিয়ানমার।
বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় চিত্রশালা মিলনায়তনে রোহিঙ্গা গণহত্যা নিয়ে আলোকচিত্র প্রদর্শনীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
মন্ত্রী আরও বলেন, বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি হলো- সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়। এভাবেই এগিয়ে যেতে চাই আমরা। প্রতিবেশি দেশগুলোর সাথে আমাদের সু-সম্পর্ক রয়েছে। ভারত, নেপাল, ভূটান, এমনিক মিয়ানামারের সঙ্গেও। আমরা ঝগড়া-বিবাদে যেতে চাই না। সেজন্যই মিয়ানমারের সাথে রোহিঙ্গা প্রত্যাবর্তনেরে বিষয়টি আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করার চেষ্টা করছি।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মিয়ানমার রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেওয়ার কথা বললেও তারা এ বিষয়ে আন্তরিক নয়। আমরা তাদের এক লাখ রোহিঙ্গার তালিকা দিয়েছিলাম। কিন্তু তারা মাত্র আট হাজার রোহিঙ্গাকে ফিরিয়ে নিতে রাজি হয়েছে। দুই দফা তারিখ নির্ধারণ করা হলেও প্র্রত্যাবাসন সম্ভব হয়নি।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ মানবিক দিক থেকে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছিল। কিন্তু তাদের জোর করে দেশে ফেরত পাঠাতে চায় না। তারা যেন নিরাপত্তা ও সম্মান নিয়ে নিজ দেশে ফিরতে পারে, সে লক্ষ্যে কাজ চলছে।
মন্ত্রী বলেন, আমরা মিয়ানমার সরকারকে বলেছি, তোমাদের জনগণ তোমাদের বিশ্বাস করছে না। তোমরা রোহিঙ্গা নেতাদের দেশে ফিরিয়ে নিয়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থা দেখাও। তাহলে তাদের মধ্যে বিশ্বাসযোগ্যতা তৈরি হবে। এ বিষয়ে মিয়ানমারকে চিঠি দিলেও কোন জবাব আসেনি।
মন্ত্রী বলেন, কক্সবাজারের জীবনযাত্রা পরিবর্তন হচ্ছে। স্থানীয় জনসংখ্যা তুলনায় রোহিঙ্গাদের সংখ্যা অন্তত ৬ লাখ বেশি। যার কারণে কক্সবাজারের জিনিসপত্রের দাম বেড়েছে। চাকরি পাচ্ছে না সেখানকার তরুণরা। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়ার সংখ্যাও বেড়েছে।
রোহিঙ্গা সঙ্কটের কারণে বাংলাদেশ সরকারের ৫ হাজার ৬৩৬ কোটি টাকা খরচ হয়েছে। এ অর্থ আমরা আমাদের উন্নয়ন প্রকল্পে ব্যয় করতে পারতাম। বিশ্বের অনেক দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিলেও তা যথেষ্ট নয়।