নিজস্ব প্রতিবেদক: পবিত্র হজ্জের আনুষ্ঠানিকতা শেষ দেশে ফিরছেন ১৯,৪৩৯ জন হাজি। পবিত্র হজ্জ পালন করতে সৌদি আরবে গিয়ে এখন পর্যন্ত মোট ৪৮ জন বাংলাদেশির মৃত্যু হয়েছে।
আরও পড়ুন: মাইক্রোবাসের ওপর উল্টে পড়ল ট্রাক
মঙ্গলবার (২৫ জুন) হজ্জ সম্পর্কিত সবশেষ বুলেটিনে এই তথ্য জানানো হয়েছে। বাংলাদেশ হজ্জ অফিস ঢাকা এবং সৌদি আরব সূত্রে এই তথ্যটি জানিয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের হজ্জ হেল্প ডেস্ক।
হেল্প ডেস্কের তথ্য মতে, বুধবার সকাল পর্যন্ত ৫১টি ফ্লাইটে দেশে ফিরেছেন ১৯,৪৩৯ জন হাজি। এরই মধ্যে বাংলাদেশ বিমান পরিচালনা করেছে ১৩টি, সৌদিয়া এয়ার লাইন্স ২০টি ও ফ্লাইনাস এয়ার ১৮টি ফ্লাইট পরিচালনা করেছে। হাজিদের নিয়ে শেষ ফ্লাইটটি দেশে আসবে আগামী সোমবার (২২ জুলাই)।
এ বছর হজ্জ করতে গিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ ও অসহনীয় গরমের কারণে সৌদি আরবের মৃত্যু হয়েছে ১,৩০০ জনের বেশি। এরই মধ্যে এখন পর্যন্ত মোট ৪৮ জন বংলাদেশির মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়। এ বছর হজ্জের আনুষ্ঠানিকতা শুরুর আগেই ১৭ জন বাংলাদেশির মৃত্যু হয়েছে।
আরও পড়ুন: ৯ অঞ্চলে ঝোড়ো বৃষ্টির আভাস
তবে হজ্জ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (হাব) সভাপতি শাহাদাত হোসেন তছলিম জানায়, হজ্জ করতে গিয়ে এখন পর্যন্ত ৪৮ জন বাংলাদেশির মৃত্যু হয়েছে।
অপরদিকে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের হজ্জ সম্পর্কিত বুলেটিনে ৪৮ জন মারা যাওয়ার যেই তথ্য জানানো হয়েছে ,তাদের মধ্যে ৩৬ জন পুরুষ ও ১২ জন নারী। এদের ৩৭ জন মক্কায়, ৪জন মদিনায়, ৬জন মিনায় এবং জেদ্দায় ১জন মারা গেছেন।
হজ্জের আনুষ্ঠানিকতা শুরু পরে যারা মারা গেছেন তারা হলো - নওগাঁ সদর উপজেলার নাসরিন বনু (৪৭), ঢাকার মাকসুদা খানম (৬৮), খুলনার মনোয়ারা বেগম (৫৯), মেহেরপুরের নুরুজ্জামান বিশ্বাস (৬৭), সাতক্ষীরায় আব্দুল গাফফার (৬৩), ফরিদপুর আতাউল হক (৬৯), নোয়াখালীর রফিকুল হক (৫৬), খুলনার এম এম এ বকর (৬২), দিনাজপুরে নুর বানু (৬২), ঢাকার সৈয়দ ওয়াহিদুল রহমান (৭১), ফেনীর হালিমা খাতুন (৬২), ঢাকার ডেমরার সৈয়দ তামজিদ আলী (৬৭), খুলনার কামরুল ইসলাম (৭০)। বরিশালের হিজলার আবু বকর সিদ্দিক (৫৯), ঝালকাঠির নূর মোহাম্মদ তালুকদার(৬৮), যশোরের অভয়নগরে শহিদুল ইসলাম (৪৯), ঝিনাইদহে কোটচাঁদপুর সুফিয়া বেগম (৮৭), চট্টগ্রামের রাউজানের আ স ম নুরুউদ্দিন চৌধুরী (৭২),ঢাকার মোহাম্মদপুরের জহিরুল ইসলাম (৭৩), মাদারীপুরের শিবচরের ইদ্রিস খান (৫৬), ঢাকার বাড্ডার উম্মে কুলসুম (৪৭), ঢাকার বংশালের মনির হোসেন (৫৯), কিশোরগঞ্জের ফাতেমা ইয়াসমিন (৫৩), পিরোজপুরের নার্গিস (৬০), ঢাকা নিউ মার্কেটের আমিনুল ইসলাম (৬৫), নোয়াখালীর মোয়াজ্জেম হোসেন (৬৮), রংপুরের সিদ্দিকুর রহমান (৪৮), ঢাকার ক্যান্টনমেন্ট থানার মানিক তোফাজ্জল হক (৭০), ঢাকার মোহাম্মদপুরের রওশন আরা বেগম (৭২), বগুড়ার সোনাতলা উপজেলার রেজাউল করিম মন্ডল (৬১), টাঙ্গাইল সদরের আলমগীর হোসেন খান (৭৩)।
আরও পড়ুন: লরির ধাক্কায় নিহত ১
হজ্জ ডেস্কের তথ্য মতে, হজ্জের আনুষ্ঠানিকতা শুরুর আগে সর্বশেষ গত বুধবার (১২ জুন) সৌদিতে ২ বাংলাদেশি মারা যায় তারা হলো - মো. শাহ আলম (৭৭) ও সুফিয়া খাতুন (৬২)। তাদের বাড়ি কুমিল্লা ও কিশোরগঞ্জ। চলতি হজ্জ মৌসুমে সৌদি আরবে ১ম বাংলাদেশি হিসেবে গত বুধবার (১৫ মে) মো. আসাদুজ্জামান নামে ১ হজ্জযাত্রী মারা যায়।
ঐ সময়ে মারা যাওয়া বাকি হজ্জযাত্রীরা হলো- নেত্রকোনা জেলার কেন্দুয়া উপজেলার মো. আসাদুজ্জামান (৫৭), ভোলা জেলার মো. মোস্তফা (৯০), কুড়িগ্রাম জেলার লুৎফর রহমান (৬৫), ঢাকা জেলার নবাবগঞ্জের মুরতাজুর রহমান (৬৩), চট্টগ্রাম জেলার রাউজান উপজেলার মোহাম্মদ ইদ্রিস (৬৪), ঢাকা জেলার মোহাম্মদ শাহজাহান (৪৮), কুমিল্লা জেলার আলী ইমাম ভুঁইয়া (৬৫), কক্সবাজার জেলার মহেশখালী উপজেলার মো. জামাল উদ্দিন (৬৯), কক্সবাজার জেলার রামু উপজেলার মোহাম্মদ নুরুল আলম (৬১), কক্সবাজার জেলার চকরিয়া উপজেলার মাকসুদ আহমদ (৬১), ফরিদপুর জেলার মমতাজ বেগম (৬৩), ঢাকার রামপুরার বাসিন্দা আরিফুল ইসলাম (৫৭), গাইবান্ধা জেলার গোবিন্দপুর উপজেলার মো. সোলাইমান (৭৩), রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার শাহজাদ আলী (৫৫) এবং রংপুরে তারাগঞ্জের গোলাম কুদ্দুস (৫৪)।
আরও পড়ুন: বাড়ল স্বর্ণের দাম
সৌদির আইন অনুযায়ী, যদি কোনো ব্যক্তি হজ্জ করতে গিয়ে যদি মারা যায়, তাহলে তার লাশ সৌদি আরবে দাফন করা হয়। তাদেরকে নিজ দেশে আনতে দেওয়া হয় না। এ সময় পরিবার-পরিজনের কোনো আপত্তিও গ্রহণ করা হয় না। মক্কায় হজ্জযাত্রী মারা গেলে তাদের জানাজা মসজিদুল হারামে হয়।
সান নিউজ/এমএইচ