নিজস্ব প্রতিবেদক: পবিত্র হজ্জের আনুষ্ঠানিকতা শেষে দেশে ফিরছেন হাজিরা। বৃহস্পতিবার (২০ জুন) থেকে শুরু হয়েছে হজ্জের ফিরতি ফ্লাইট। সোমবার (২৪ জুন) সকাল পর্যন্ত ৩০টি ফ্লাইটে দেশে ফিরেছেন ১১,৬৪০ জন। অপরদিকে হজ্জ পালন করতে গিয়ে সৌদি আরবের ৪৪ জন বাংলাদেশি হাজির মৃত্যু হয়েছে।
আরও পড়ুন: রাশিয়ায় ভয়াবহ হামলায় নিহত,১৫
সোমবার (২৪ জুন) বাংলাদেশ হজ্জ অফিস ঢাকা, সৌদি আরব হজ্জ সম্পর্কিত সবশেষ বুলেটিনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
হেল্পডেস্কের তথ্য মতে, সোমবার সকাল পর্যন্ত ৩০টি ফ্লাইটে দেশে ফিরেছেন ১১,৬৪০ জন হাজী। তার মধ্যে বাংলাদেশ বিমানের ৮টি, সৌদিয়া এয়ার লাইন্সের ১০টি, ফ্লাইনাস এয়ার লাইন্সের ১২টি ফ্লাইট রয়েছে এবং হাজিদের নিয়ে শেষ ফ্লাইটটি দেশে আসবে সোমবার (২২ জুলাই)।
চলতি বছর প্রখর তাপপ্রবাহ ও অসহনীয় গরমের জেরে হজ্জ করতে গিয়ে মৃত্যু ১,৩০০ ছাড়িয়েছে। দেশটিতে তীব্র তাপদাহের কারণে ওই হজ্জযাত্রীরা মারা গেছেন বলে জানিয়েছে দেশটির কর্তৃপক্ষ। অপরদিকে হজ্জ পালন করতে গিয়ে এখন পর্যন্ত মোট ৪৪ জন বংলাদেশি হজ্জযাত্রীর মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশের ধর্ম মন্ত্রণালয়। এরই মধ্যে হজ্জের আনুষ্ঠানিকতা শুরুর আগেই ১৭ জন এবং বাকি ২৭ জনের মৃত্যু হয় হজ্জের আনুষ্ঠানিকতা শুরুর পরে।
আরও পড়ুন: মাদকবিরোধী অভিযানে গ্রেফতার ১৫
এতে মারা যাওয়া হজ্জযাত্রীদের মধ্যে ৩৫ জন পুরুষ ও ৯ জন নারী। তাদের মধ্যে মক্কায় ৩৩ জন, মদিনায় ৪, মিনায় ৬ জন এবং জেদ্দায় ১জন মারা গেছেন।
হজ্জের আনুষ্ঠানিকতা শুরু পর যারা মারা গেছেন তারা হলো, সাতক্ষীরায় আব্দুল গাফফার (৬৩), ফরিদপুর আতাউল হক (৬৯), নোয়াখালী রফিকুল হক (৫৬), খুলনার এম এম এ বকর (৬২), দিনাজপুরে নুর বানু (৬২), ঢাকার সৈয়দ ওয়াহিদুল রহমান (৭১), ফেনীর হালিমা খাতুন (৬২), ঢাকার ডেমরার সৈয়দ তামজিদ আলী (৬৭), খুলনার কামরুল ইসলাম (৭০)। বরিশালের হিজলার আবু বকর সিদ্দিক (৫৯), ঝালকাঠির নূর মোহাম্মদ তালুকদার (৬৮), যশোরের অভয়নগরে শহিদুল ইসলাম (৪৯), ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর সুফিয়া বেগম (৮৭), চট্টগ্রামে রাউজানের আ স ম নুরুউদ্দিন চৌধুরী (৭২), ঢাকার মোহাম্মদপুরের জহিরুল ইসলাম (৭৩), মাদারীপুরের শিবচরের ইদ্রিস খান (৫৬), ঢাকার বাড্ডার উম্মে কুলসুম (৪৭), ঢাকার বংশালের মনির হোসেন (৫৯), কিশোরগঞ্জের ফাতেমা ইয়াসমিন (৫৩), পিরোজপুরের নার্গিস (৬০), ঢাকা নিউ মার্কেটের আমিনুল ইসলাম ((৬৫), নোয়াখালীর মোয়াজ্জেম হোসেন (৬৮), রংপুরের সিদ্দিকুর রহমান (৪৮), ঢাকা ক্যান্টনমেন্টের মানিক তোফাজ্জল হক (৭০), ঢাকার মোহাম্মদপুরের রওশন আরা বেগম (৭২), বগুড়ার সোনাতলা উপজেলার রেজাউল করিম মন্ডল (৬১), টাঙ্গাইল সদরের আলমগীর হোসেন খান (৭৩)।
আরও পড়ুন: মরিচ ক্ষেতে চালকের লাশ
হজ্জ ডেস্কের মতে, হজ্জের আনুষ্ঠানিকাতা শুরুর আগে সর্বশেষ গত বুধবার (১২ জুন) সৌদিতে ২জন মারা যায়। মারা যাওয়া ২জন হলো, মো. শাহ আলম (৭৭) ও সুফিয়া খাতুন (৬২)। মৃতের বাড়ি যথাক্রমে কুমিল্লা ও কিশোরগঞ্জ। চলতি হজ্জ মৌসুমে সৌদি আরবে ১ম বাংলাদেশি হিসেবে গত বুধবার (১৫ মে) মো. আসাদুজ্জামান নামে ১ হজ্জযাত্রী মারা যায়।
মারা যাওয়া অপর হজ্জযাত্রীরা হলো, নেত্রকোনা জেলার কেন্দুয়া উপজেলার মো. আসাদুজ্জামান (৫৭), ভোলার মো. মোস্তফা (৯০), কুড়িগ্রাম জেলার লুৎফর রহমান (৬৫), ঢাকা জেলার নবাবগঞ্জের মুরতাজুর রহমান (৬৩), চট্টগ্রাম জেলার রাউজান উপজেলার মোহাম্মদ ইদ্রিস (৬৪), ঢাকা জেলার মোহাম্মদ শাহজাহান (৪৮), কুমিল্লা জেলার আলী ইমাম ভুঁইয়া (৬৫), কক্সবাজার জেলা মহেশখালী উপজেলার মো. জামাল উদ্দিন (৬৯), কক্সবাজার জেলার রামু উপজেলার মোহাম্মদ নুরুল আলম (৬১), চকরিয়া উপজেলার মাকসুদ আহমদ (৬১), ফরিদপুর জেলার মমতাজ বেগম (৬৩), ঢাকার রামপুরার বাসিন্দা আরিফুল ইসলাম (৫৭), গাইবান্ধা জেলা গোবিন্দপুর উপজেলার মো. সোলাইমান (৭৩), রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার শাহজাদ আলী (৫৫) এবং রংপুরে তারাগঞ্জের গোলাম কুদ্দুস (৫৪)।
আরও পড়ুন: জয়ন্তী অনুষ্ঠানে ২ গ্রুপের সংঘর্ষ
সৌদির আইন অনুযায়ী, কোনো ব্যক্তি হজ্জ করতে গিয়ে যদি মারা যায়, তাহলে তাদের লাশ সৌদি আরবে দাফন করা হয়। তাদের লাশ নিজ দেশে আনতে দেওয়া হয় না। এ সময় পরিবার-পরিজনের কোনো আপত্তি গ্রাহ্য করা হয় না। যদি মক্কায় হজ্জ যাত্রী মারা গেলে তাদেরকে মসজিদুল হারামে জানাজা হয়।
সান নিউজ/এমএইচ