নিজস্ব প্রতিবেদক: ৬ষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের তৃতীয় ধাপে আজ ৮৭ উপজেলায় ভোটগ্রহণ হয়েছে। এখন চলছে ভোট গণনা।
আরও পড়ুন: এভারেস্টে ভারতীয় পর্বতারোহীর মৃত্যু
বুধবার (২৯ মে) সকাল ৮টায় শুরু হয়ে বিরতিহীনভাবে ভোটগ্রহণ চলে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। এ নির্বাচনেও অধিকাংশ উপজেলার ভোটকেন্দ্রে ছিল ভোটার সংকট।
এর মধ্যে কিছু জায়গায় সংঘর্ষ, প্রিসাইডিং কর্মকর্তা আটক, আচরণবিধি লঙ্ঘন-অনিয়ম ও ইভিএম মেশিন বিকলসহ বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনা ঘটে। সেই সঙ্গে অনিয়মের অভিযোগে কয়েকটি কেন্দ্রের এজেন্টদেরও কারাদণ্ড হয়েছে।
এ ধাপের নির্বাচনে সারাদেশে ভোটকেন্দ্রে ভোটারদের উপস্থিতি ছিল অনেক কম। প্রথম ৪ ঘণ্টায় ভোট পড়েছে ২০ শতাংশের কম। দুপুরে নির্বাচন কমিশন ভবনে এ তথ্য জানান নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিব মো. জাহাংগীর আলম।
আরও পড়ুন: ঢাকায় আসছেন আইএমও’র মহাসচিব
এ সময় ইসি সচিব বলেন, মোবাইল নেটওয়ার্ক ঠিকমতো কাজ না করায় এ পর্যন্ত ঠিক কত শতাংশ ভোট পড়েছে তার পুরো তথ্য সংগ্রহ করতে পারছি না। এজন্য ম্যানুয়ালি তথ্য সংগ্রহ করছি।
যে কেন্দ্রগুলোর তথ্য পেয়েছি, সেখানে ২০ শতাংশের নিচে ভোট পড়েছে বলে জানা গেছে। এটা প্রাথমিক তথ্য। দুপুর পর্যন্ত কোথাও ১৫, কোথাও ১৬, কোথাও ২০ শতাংশ ভোট পড়েছে বলে প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছি।
এ নির্বাচনে রাজশাহী, ফরিদপুর, কুমিল্লা, ফেনী, রংপুর, নীলফামারী, কুষ্টিয়া, পাবনা, নোয়াখালী, বগুড়া, সুনামগঞ্জ, জামালপুরসহ অধিকাংশ জেলার ভোটকেন্দ্রে সারাদিন ভোটার উপস্থিতি কম দেখা গেছে। এছাড়া বিভিন্নস্থানে বিক্ষিপ্ত কিছু ঘটনাও ঘটেছে।
আরও পড়ুন: বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় কাজ করছি
নোয়াখালীতে ৩ উপজেলায় (সদর, বেগমগঞ্জ ও কোম্পানীগঞ্জ) ভোটগ্রহণ হয়েছে। এর মধ্যে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে কোম্পানীগঞ্জ চেয়ারম্যান প্রার্থী গোলাম শরিফ চৌধুরী পিপুলের (আনারস) একজন সমর্থককে মেরে মাথা ফাটিয়ে দিয়েছেন অপর প্রার্থী মিজানুর রহমান বাদলের (দোয়াত-কলম) সমর্থকেরা।
ভুক্তভোগী আবদুল আজিজ চর এলাহী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবদুর রাজ্জাকের বড় ভাই। দুপুর ১২টায় এ উপজেলায় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ছোটভাই শাহাদাত হোসেনসহ (টেলিফোন) ২ চেয়ারম্যান প্রার্থী ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন।
অপর প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বাদল (দোয়াত-কলম)।
আরও পড়ুন: কাঠের স্যাটেলাইট বানাল জাপান
জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে ভোট ডাকাতি, কেন্দ্র দখল, জাল ভোটসহ এজেন্ট বের করে দেয়ার অভিযোগ তুলে ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন তারা।
তবে যশোরের বাঘারপাড়া ও অভয়নগর উপজেলায় ভোটারদের ভালো উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে। এ জেলার দুটি উপজেলায় মোট ১৫১টি ভোটকেন্দ্রে ইভিএম মেশিনের মাধ্যমে এ ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
এর আগে যশোরের ৫টি উপজেলা যথাক্রমে মনিরামপুর, কেশবপুর, শার্শা, ঝিকরগাছা ও চৌগাছা উপজেলা নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। ৫টি উপজেলা থেকে বাঘারপাড়া উপজেলা নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি বেশি ছিল।
বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত ফেনী সদর, দাগনভূঞা ও সোনাগাজী উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে জাল ভোট দিতে গিয়ে সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তা ও পোলিং এজেন্টসহ বিভিন্ন ভোটকেন্দ্র থেকে ১০ জনকে আটক করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: পানির দাম বাড়াল ওয়াসা
পুলিশ জানায়, সকালের দিকে জাল ভোট দেয়ার চেষ্টা করলে সদর উপজেলার ফেনী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্র থেকে ৬ জন, পিটিআই কেন্দ্রে থেকে একজন পোলিং এজেন্ট ও একজন সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তা, দাগনভূঞা উপজেলার গজারিয়া কেন্দ্রে একজন এবং সোনাগাজী উপজেলার রাজাপুর মাস্টার মুজিবুল হক একাডেমি কেন্দ্রে থেকে একজনকে আটক করা হয়েছে।
এদিকে তৃতীয় ধাপে ১০৯ উপজেলায় ভোটগ্রহণের কথা থাকলেও ঘূর্ণিঝড় রেমালের কারণে সোমবার (২৭ মে) ১৯টি এবং মঙ্গলবার (২৮ মে) ৩টি উপজেলার ভোট স্থগিত করা হয়। ফলে আজ ৮৭টি উপজেলায় ভোট অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আরও পড়ুন: কুয়াকাটা সৈকতে ভেসে এলো মৃত হরিণ
স্থগিত হওয়া উপজেলাগুলো হলো- বাগেরহাটের শরণখোলা, মোরেলগঞ্জ ও মোংলা; খুলনার কয়রা, ডুমুরিয়া ও পাইকগাছা; বরিশালের গৌরনদী, আগৈলঝাড়া; পটুয়াখালী সদর, দুমকী ও মির্জাগঞ্জ; পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া, ভোলার তজুমদ্দিন, লালমোহন; ঝালকাঠির রাজাপুর ও কাঠালিয়া, বরগুনার বামনা ও পাথরঘাটা এবং রাঙামাটি জেলার বাঘাইছড়ি উপজেলা, নেত্রকোণা জেলার খালিয়াজুরী; চাঁদপুর জেলার কচুয়া ও ফরিদগঞ্জ উপজেলা।
এছাড়া খালিয়াজুরী উপজেলায় সড়ক সংযোগ বিচ্ছিন্ন এবং কচুয়া ও ফরিদগঞ্জ উপজেলায় ইভিএমের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন থাকায় নির্বাচন স্থগিত করা হয়।
এ ধাপে ১১৫২ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে চেয়ারম্যান পদে ৩৯৭ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৪৫৬ জন ও নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদে ২৯৯ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।
সান নিউজ/এনজে
