নিজস্ব প্রতিবেদক: ঢাকায় কোনো বস্তি, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ থাকবে না জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সবাই সুন্দর পরিবেশে বসবাস করবে। সেই ব্যবস্থা করে দেব। এ পদক্ষেপও আমরা নিয়েছি। মানুষের কল্যাণে কাজ করাই আমাদের লক্ষ্য। এ লক্ষ্য নিয়েই আমরা কাজ করি।
আরও পড়ুন: বঙ্গবাজারসহ ৪ প্রকল্পের উদ্বোধন
শনিবার (২৫ মে) সকালে পুড়ে যাওয়া বঙ্গবাজারের স্থানে ১০তলা বঙ্গবাজার পাইকারি মার্কেট ও শাহবাগে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী শিশু উদ্যানের আধুনিকায়নসহ ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ৪টি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের জন্য ফ্ল্যাট করে দিচ্ছি ও বস্তিবাসীদের জন্য ভাড়া ভিত্তিক ফ্ল্যাট নির্মাণ করে দিচ্ছি। যে বস্তিতে যেরকম ভাড়া, সেরকম ভাড়াই দেবে। কিন্তু তারা ফ্ল্যাটে থাকবে।
তিনি আরও বলেন, শুধু বড়লোকরাই ফ্ল্যাটে থাকবে সেটা হতে পারে না। রিকশাওয়ালা থেকে শুরু করে দিনমজুররাও ফ্ল্যাটে থাকবে। স্বল্প ভাড়া, কেউ যদি প্রতিদিন ভাড়া দিতে চায়, সেই ব্যবস্থাও আছে।
আরও পড়ুন: কাউকে জেলে পাঠানোর এজেন্ডা নেই
কেউ যদি ৭ দিনের ভাড়া দিতে চায়, সে ব্যবস্থা আছে। কেউ মাসের ভাড়া দিতে চাইলে, সে ব্যবস্থাও হবে। আমরা ইতিমধ্যে ৩০০ পরিবার তুলেছি।
এ সময় পরিবেশ রক্ষার গাছ লাগানোর আহ্বান জানিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, যাদের এক টুকরো জমি আছে তারা একটা ফুলের গাছ, একটা ফলের গাছ হলেও লাগান। যাদের গ্রামের বাড়ি আছে, সেখানে যেন অনাবাদি জমি না থাকে সেদিকে দৃষ্টি দিতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের যুবসমাজ লেখাপড়া করে কাজ পায় না, সেখানে আমরা স্টার্টআপ প্রোগ্রাম নিয়েছি। যারা কম্পিউটার বা ডিজিটাল সিস্টেম শিখবে, তারা ছাড়াও অন্য সকলে এখানে ব্যবসা বাণিজ্য করতে পারবে।
আরও পড়ুন: বঙ্গবাজার নির্মাণ কাজের উদ্বোধন আজ
কোম্পানির আইন পরিবর্তন করে এক ব্যক্তি যাতে কোম্পানি খুলতে পারে, সেই ব্যবস্থাও করে দিয়েছি। এছাড়া একটা কর্মসংস্থান ব্যাংক করেছি, যে ব্যাংক থেকে বিনা জামানতে আমাদের তরুণরা কমপক্ষে ২ লাখ টাকা নিতে পারে। এককভাবে বা কয়েকজন মিলে যাতে বিভিন্ন ব্যবসা দাঁড় করাতে পারেন।
পাস করে চাকরির সন্ধানে না ছোটার পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, নিজেই নিজের বস হবেন। নিজে চাকরি দেবেন, নিজে উদ্যোক্তা হবেন, নিজে চাকরি দিতে পারবেন, সেভাবে তরুণদের জন্য সুযোগ সৃষ্টি করে দেয়া হয়েছে এবং তার জন্য ট্রেনিং দেয়া হচ্ছে।
শেখ হাসিনা বলেন, সারা বাংলাদেশে আমরা কম্পিউটার ট্রেনিং ও ইনকিউবেটর সেন্টার করে দিচ্ছি। স্কুলে স্কুলে কম্পিউটার ল্যাব করে দিচ্ছি। ট্রেনিংয়ের সাথে সাথে সব ধরনের সুযোগ আমরা করে দিচ্ছি।
আরও পড়ুন: জাতীয় কবির জন্মবার্ষিকী
শুধু দেশেই নয়, বিদেশে কাজ করতে গেলেও উপযুক্ত ট্রেনিং নিয়ে যাওয়া ভালো। দালাল ধরে টাকা খরচ করে ভূমধ্যসাগরে ডুবে মরার চেয়ে নিজের দেশে থেকে কাজ করা অনেক লাভজনক। এ ব্যাপারে মানুষকে উজ্জীবিত করতে হবে।
যুব সমাজকে লেখাপড়া করতে হবে। মাদক, নেশা, দুর্নীতি, জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাস থেকে দূরে থাকতে হবে। একটা মাদকাসক্ত সন্তান যদি থাকে, তাহলে সেই পরিবার ধ্বংস হয়ে যায়। যারা মাদক সেবন করে তারা পরবর্তীতে নিজেরাই অসুস্থ হয়ে যায়। নিজেদের ঘর-সংসার হয় না। একটা সচেতনতা সৃষ্টি করা দরকার।
ঈদুল আজহায় যেখানে-সেখানে পশু কোরবানি না করার নির্দেশনা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, আগামীতে পশু কোরবানির জন্য আরও আধুনিক ব্যবস্থা রাখতে বলা হয়েছে সিটি কর্পোরেশনগুলোকে। শুধু সিটি কর্পোরেশন নয়, দেশব্যাপী আধুনিক ব্যবস্থা রাখতে হবে, সেই নির্দেশনাও দেয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: সারাদেশে তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে
যাতে শহর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকে এবং পানির যাতে অপচয় না হয়ে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। জলাশয় ভরাট করা যাবে না, ভরাট করে বহুতল ভবন নির্মাণ করাও যাবে না।
তিনি বলেন, দেশ যত উন্নত হচ্ছে মানুষের কাজ-কর্ম ততো বাড়ছে। আধুনিকতার সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে হয়। এরই মধ্যে ঢাকাবাসীর যাতায়াতের জন্য একটি মেট্রো রেলপথ তৈরি করা হয়েছে। আরও কয়েকটি মেট্রো রেলপথ নির্মাণ করা হবে। কিছু ওপর দিয়ে যাবে, কিছু পাতাল দিয়ে যাবে। সেভাবেই পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম। স্বাগত বক্তব্য রাখেন স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সচিব মুহম্মদ ইব্রাহিম। আরও বক্তব্য রাখেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস ও ঢাকা-৮ আসনের সংসদ সদস্য আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম।
সান নিউজ/এনজে