নিজস্ব প্রতিবেদক: ফাঁসির আসামিদের মৃত্যুদণ্ডাদেশ চূড়ান্ত হওয়ার আগে তাদের কনডেম সেলে বন্দি রাখা যাবে না বলে হাইকোর্টের দেয়া এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
আরও পড়ুন: ঢাকায় মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী লু
মঙ্গলবার (১৪ মে) বিষয়টি নিশ্চিত করে অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন বলেন, হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করবে রাষ্ট্রপক্ষ।
গতকাল মৃত্যুদণ্ডাদেশ চূড়ান্ত হওয়ার আগে আসামিদের কনডেম সেলে রাখা অবৈধ ঘোষণা করেন হাইকোর্ট। বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি মো. বজলুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ দীর্ঘ সাড়ে ৩ ঘণ্টাব্যাপী এ রায় ঘোষণা করেন।
রায়ে বলা হয়েছে, মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামির আপিল, রিভিউ, রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা প্রার্থনার ধাপগুলো নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত আসামিকে কনডেম সেলে রাখা যাবে না।
আরও পড়ুন: সৌদি পৌঁছালেন ১৫৫১৫ হজযাত্রী
এ সময় বর্তমানে মৃত্যুদণ্ডাদেশ চূড়ান্ত হওয়ার আগে সারা দেশে যত আসামিকে কনডেম সেলে রাখা হয়েছে, তাদের ২ বছরের মধ্যে ক্রমান্বয়ে সাধারণ সেলে রাখতে বলা হয়েছে। বিশেষ কারণে (স্বাস্থ্যগত কারণ, সংক্রামক রোগ) কোনো ব্যক্তিকে নির্জন কক্ষে রাখতে পারবে কারা কর্তৃপক্ষ। সেক্ষেত্রে শুনানি হবে ওই ব্যক্তির উপস্থিতিতে।
অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন। তার সঙ্গে ছিলেন অ্যাডভোকেট আসাদ উদ্দিন।
অপরদিকে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত তালুকদার। তার সঙ্গে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল এমএমজি সারোয়ার পায়েল ও নাসিম ইসলাম রাজু।
আরও পড়ুন: বায়ুদূষণে আজ ঢাকা নবম
আইনজীবীরা জানান, এটি একটি ঐতিহাসিক রায়। গত ১২ ডিসেম্বর মৃত্যুদণ্ডাদেশ চূড়ান্ত হওয়ার আগে আসামিদের কনডেম সেলে বন্দি রাখা কেন বেআইনি হবে না এবং কেন জেল কোডের ৯৮০ বিধি অসাংবিধানিক ঘোষণা করা হবে না, এ মর্মে জারি করা রুলের শুনানি হয়।
শুনানি শেষে মামলাটি রায় ঘোষণার জন্য অপেক্ষমাণ রাখেন বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি মো. বজলুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ।
২০২৩ সালের ৫ এপ্রিল এ বিষয়ে রুল জারি করেছিলেন হাইকোর্ট। সেই সঙ্গে কনডেম সেলে রাখা বন্দিদের বিষয়ে ৬ মাসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেয়া হয়। এ আদেশ দেন বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের হাইকোর্ট বেঞ্চ।
আরও পড়ুন: ডেঙ্গু নিয়ে হাসপাতালে আরও ৩৬ জন
প্রসঙ্গত, ২০২২ সালের ৩ সেপ্টেম্বর মামলা চূড়ান্তভাবে নিষ্পত্তি হওয়ার আগে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিকে কনডেম সেলে রাখার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়। সে সময় চট্টগ্রাম কারাগারে কনডেম সেলে থাকা জিল্লুর রহমানসহ মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ৩ বন্দির পক্ষে আইনজীবী শিশির মনির এ রিট দায়ের করেন।
রিট আবেদনকারীরা হলেন- চট্টগ্রাম কারাগারের কনডেম সেলে থাকা সাতকানিয়ার জিল্লুর রহমান, সিলেট কারাগারে থাকা সুনামগঞ্জের আব্দুল বশির ও কুমিল্লা কারাগারে থাকা খাগড়াছড়ির শাহ আলম। এ ৩ মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামির আপিল হাইকোর্ট বিভাগে বিচারাধীন।
সান নিউজ/এনজে