নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে (এসইজেড) কাতারের বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন।
আরও পড়ুন: কাতারের সঙ্গে ১০ চুক্তি-সমঝোতা সই
মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) দুপুরে বঙ্গভবনে কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল-থানির সাথে এক সৌজন্য সাক্ষাতে এ আহ্বান জানান তিনি। বৈঠক শেষে রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব মো. জয়নাল আবেদীন এ বিষয়ে ব্রিফ করেন।
বৈঠকে রাষ্ট্রপতি বলেন, খাদ্য সরবরাহের চেইনগুলো-উৎপাদন থেকে ব্যবহার পর্যন্ত-কৃষি-উৎপাদন ও প্রক্রিয়াকরণ, খাদ্য প্যাকেজিং, স্মার্ট এগ্রিকালচার, সার উৎপাদনসহ বিভিন্ন খাতে কাতারের বিনিয়োগকে স্বাগত জানাবে বাংলাদেশ।
এ সময় উপসাগরীয় অঞ্চলে কাতারকে বাংলাদেশের একটি মূল্যবান উন্নয়ন অংশীদার হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে তিনি বলেন, আমিরের সফর এবং ২ দেশের মধ্যে সম্পাদিত ১০টি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) আগামী দিনে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতাকে আরও সম্প্রসারিত ও গভীরতর করবে।
আরও পড়ুন: ঢাকা ছাড়লেন কাতারের আমির
বাংলাদেশ সরকার বিদেশী বিনিয়োগের জন্য ১০০টি অর্থনৈতিক বিশেষ অঞ্চল স্থাপন করেছে। কাতারের বিনিয়োগকারীরা পেট্রো-কেমিক্যাল, জ্বালানি, মেশিনারিজ, তথ্য-প্রযুক্তি, ইলেকট্রনিক্স, সিরামিক, কৃষি-ব্যবসা, খাদ্য প্রক্রিয়াকরণের মতো কিছু ক্ষেত্রে ব্যাপক প্রণোদনা পেতে পারে ও সহায়তা করতে পারে।
রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন প্রায় ৩.৭৫ লাখ বাংলাদেশিকে কর্মসংস্থানের সুযোগ দেয়ার জন্য কাতার সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, এ জনবল কাতার ও বাংলাদেশ উভয় দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে প্রতিনিয়তই অবদান রাখছেন।
বৈঠকে কাতারের আমিরকে আরও তরুণ, দক্ষ ও আধা-দক্ষ জনশক্তি, আইটি বিশেষজ্ঞ, পেশাদার প্রযুক্তিবিদ নিয়োগের আহ্বান জানান রাষ্ট্রপতি।
আরও পড়ুন: চতুর্থ ধাপের ভোটগ্রহণ ৫ জুন
রাষ্ট্রপতি বাংলাদেশকে তরল প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) দেয়ার জন্য কাতার সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়ে কাতারের কাছে দীর্ঘমেয়াদি জ্বালানি সহায়তা চেয়েছেন।
তিনি বাণিজ্য ও ব্যবসায়িক সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে উভয় পক্ষকে আরও বেশি কার্যকর ভূমিকা রাখার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
এ সময় রাষ্ট্রপতি চলমান ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে আলোচনার সুবিধার্থে কাতারের (মিশর ও যুক্তরাষ্ট্রের সাথে) প্রচেষ্টার ভূয়সী প্রশংসা করেন।
কাতারের আমির প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের প্রশংসা করেন এবং আশ্বাস দেন যে, আগামী দিনেগুলোতে বাংলাদেশের জন্য প্রয়োজনীয় সব ধরনের সহায়তা অব্যাহত থাকবে।
আরও পড়ুন: দেশবিরোধী অপশক্তি ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে
তিনি আরও বলেন, কাতার ও বাংলাদেশ স্বাক্ষরিত বিভিন্ন চুক্তি ও সমঝোতা স্মারকসমূহ ২ দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক ও বহুপাক্ষিক সম্পর্ক উন্নয়নে আরও কার্যকরি ভূমিকা রাখবে।
উভয় নেতা সৌজন্য সাক্ষাতকালে তাদের কুশল বিনিময় করেন এবং আনন্দ প্রকাশ করে। এ সফর ২ দেশের মধ্যে বহুমুখী অংশীদারিত্বকে আরও জোরদার করার উপায় নির্ধারণ করবে।
বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন- পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, বিদ্যুৎ, জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু, পররাষ্ট্র সচিব এবং বঙ্গভবনের সংশিষ্ট সচিবগণ।
আরও পড়ুন: হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে ৪ নির্দেশনা
অপরদিকে কাতারের প্রতিনিধি দলে ছিলেন-আমিরি দেওয়ান প্রধান শেখ সৌদ বিন আবদুল রহমান আল-থানি, বাণিজ্য ও শিল্পমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন হামাদ আল-থানি, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী সোলতান বিন সাদ আল-মুরাইখি ও বাংলাদেশে নিযুক্ত কাতারের রাষ্ট্রদূত সেরায়া বিন আলী আল-কাহতানি।
বৈঠক শেষে আমির ফটো সেশনেও অংশ নেন। তিনি সেখানে রক্ষিত দর্শনার্থী বইতেও স্বাক্ষর করেন তিনি। বঙ্গভবনের ক্রেডেনশিয়াল হলে মধ্যাহ্ন ভোজে অংশ নেন কাতারের আমির ও তার সফরসঙ্গীরা।
এ ভোজে অংশ নেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী, প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান, মন্ত্রী পরিষদের সদস্য, উপদেষ্টা বৃন্দ ও কয়েকজন বিশিষ্ট ব্যক্তিরা। কাতারের আমিরের সম্মানে একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানেরও আয়োজন করা হয়।
সান নিউজ/এনজে