নিজস্ব প্রতিবেদক: বহুতল নতুন ভবন নির্মাণের জন্য রাজধানীর ফুলবাড়িয়ায় অবস্থিত বঙ্গবাজারে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন (ডিএসসিসি)। ভ্রাম্যমাণ আদালতের এ অভিযানে ভেঙে ফেলা হচ্ছে অস্থায়ী দোকানগুলো।
আরও পড়ুন: সয়াবিন তেলের দাম বাড়ল
মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) সকাল ৯টা থেকেই এ অভিযান শুরু হয়। ডিএসসিসির সম্পত্তি বিভাগের উদ্যোগে এ কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে বলে জানা গেছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, বঙ্গবাজারে একটি ভেকু দিয়ে বাঁশের কাঠামো সরিয়ে দেয়া হচ্ছে। সিটি কর্পোরেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিত থেকে বিষয়টি দেখভাল করছেন। এ সময় বেশ কয়েকজন ব্যবসায়ী মোবাইলে উচ্ছেদের দৃশ্য ধারণ করছিলেন। তবে এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি তারা।
এর আগে গতকাল দুপুরে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে বঙ্গবাজারের অবৈধ অস্থায়ী দোকানগুলো ভেঙে দেয়ার কার্যক্রম শুরু করে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন।
এ বিষয়ে ডিএসসিসির মুখপাত্র আবু নাছের জানান, নতুন করে মার্কেট করার লক্ষ্যে এসব অবৈধ দোকান উচ্ছেদ করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: সাভারে এসি বিস্ফোরণ, দগ্ধ ৬
গত বছরের ৪ এপ্রিল ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ভস্মীভূত হয়ে যায় রাজধানীর সবচেয়ে পুরোনো ও জনপ্রিয় পাইকারি কাপড়ের মার্কেট বঙ্গবাজার। মূলত পুড়ে যাওয়া বঙ্গবাজারকে আধুনিক রূপদান ও ব্যবসায়িক পরিবেশ সৃষ্টির উদ্যোগ নিয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন।
উল্লেখ্য, গত বছরের ৪ এপ্রিল ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে বঙ্গবাজার পুরোপুরি ভস্মীভূত হয়। এ আগুন মহানগর শপিং কমপ্লেক্স, এনেক্সকো টাওয়ার, বঙ্গ হোমিও মার্কেট ও বঙ্গ ইসলামিয়া মার্কেটের কিছু অংশেও ছড়িয়ে পড়ে। ভয়াবহ এ অগ্নিকাণ্ডে ৩৮৪৫ ব্যবসায়ী ক্ষতিগ্রস্ত হন বলে তদন্ত প্রতিবেদনে উঠে আসে।
এ অগ্নিকাণ্ডে প্রায় ৩০৩ কোটি টাকার আর্থিক ক্ষতি হয় বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। পরবর্তীতে পুড়ে যাওয়া মার্কেটের ফাঁকা স্থানে শামিয়ানা ও ছোট ছোট চৌকি বসিয়ে কোনোমতে ব্যবসা পরিচালনা করছেন ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা।
আরও পড়ুন: কাঁটাতারে ঘেরা হয়েছে এমভি আবদুল্লাহ
ডিএসসিসির সংশ্লিষ্ট দফতর সূত্রে জানা যায়, বঙ্গবাজারের নাম পরিবর্তন করে রাখা হচ্ছে বঙ্গবাজার পাইকারি নগর বিপণি বিতান। ভবনটি নির্মাণে সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৩৮ কোটি টাকা।
১০ তলা বিশিষ্ট ভবনের গ্রাউন্ড ফ্লোর ও বেজমেন্ট ছাড়াও থাকবে মোট ৮টি ফ্লোর। ১.৭৯ একর জায়গার ওপর নির্মিত হতে যাওয়া এ ভবনে থাকবে ৩০৪২টি দোকান।
ভবনটিতে থাকবে ৮টি লিফট। এর মধ্যে ৪টি থাকবে ক্রেতা-বিক্রেতাদের জন্য এবং বাকি ৪টি কার্গো লিফট মালামাল ওঠা-নামার জন্য।
নতুন ভবনটির গ্রাউন্ড ফ্লোরে মোট ৩৮৪টি, প্রথম তলায় ৩৬৬টি, দ্বিতীয় তলায় ৩৯৭টি, তৃতীয় তলায় ৩৮৭টি, চতুর্থ তলায় ৪০৪টি, পঞ্চম তলায় ৩৮৭টি, ষষ্ঠ তলায় ৪০৪টি ও সপ্তম তলায় ৩১৩টি দোকান থাকবে। প্রতিটি দোকানের আয়তন হবে ৮০-১০০ স্কয়ার ফুট।
আরও পড়ুন: ফরিদপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ১৩
অষ্টম তলায় থাকবে দোকান মালিক সমিতির অফিস, কর্মচারী ও নিরাপত্তাকর্মীদের আবাসন ব্যবস্থা। ভবনের পার্কিংয়ে প্রায় ১৮৫টি গাড়ি ও ১১০টি মোটরসাইকেল পার্কিং করা যাবে। খাবারের দোকান রাখা হবে ২২টি। এছাড়া নকশায় আরও ৮১টির বেশি দোকান রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে।
মূলত মার্কেটটি বঙ্গবাজার কমপ্লেক্স, আদর্শ ইউনিট, মহানগর ইউনিট ও গুলিস্তান ইউনিট নিয়ে গঠিত ছিল।
সান নিউজ/এনজে