সান নিউজ ডেস্ক : আজকাল বাবা মায়েদের নতুন চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে সন্তানদের যাচ্ছেতাই খাদ্যাভ্যাস। যার কারণে একদিকে শিশুরা অপুষ্টিজনিত রোগে ভুগছে অন্যদিকে স্থূলতার হারও বাড়ছে সমান তালে।
যুক্তরাজ্য জুড়ে, শিশুদের স্থূলতা সম্প্রতি রেকর্ড পরিমাণে দাঁড়িয়েছে। এবং স্থূলতার এই প্রবণতা একটি শহরে সবচেয়ে বেশি। তবে সাম্প্রতিক এক জরিপ থেকে জানা যায় যে, ওই শহরটি তাদের শিশু স্থূলতার হার ৬.৪% কমাতে সক্ষম হয়েছে।
স্থূলতার মোকাবেলা করার জন্য শহরটি যেসব কৌশল হাতে নিয়েছিল তার মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ ছিল প্রি-স্কুল শিশুদের উপর মনোযোগ দেয়া এবং সুস্থ থাকার ব্যাপারে শিশুদের উৎসাহী করতে বাবা মায়েদের ক্লাস করানো।
তবে শিশুর সঙ্গে খাবারের বিষয়টি কিভাবে উপস্থাপন করতে হয় সেটা বাবা-মা অথবা শিশুর যত্নকারীর পক্ষে পুরোপুরি বোঝা সবসময় সহজ হয়না। এক্ষেত্রে চলুন জেনে নেয়া যাক যে তারা শিশুর সুস্বাস্থ্যের জন্য সবচেয়ে সেরা কি করতে পারেন।
পছন্দমতো বেছে নেয়া
শিশুদের একদম অল্প বয়স থেকে এক বা একাধিক স্বাস্থ্যকর খাবারের বিকল্প থেকে নিজের পছন্দমতো খাবারটি বেছে নেয়ার সুযোগ দিতে হবে। এটা তাদের মধ্যে স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার অভ্যাস তৈরিতে সাহায্য করে। এটি শিশুদের কোন খাবার খেতে অস্বীকার করার ঝুঁকি কমিয়ে আনতে সেইসঙ্গে তাদের নিয়ন্ত্রণে থাকতেও সাহায্য করে। আমরা যখন শিশুদের একটি বিকল্প দিই না, তখন তারা একদম চুপ হয়ে যেতে পারে এবং কিছুটা হতাশ হতে পারে।
ছোট ছোট পদক্ষেপ
যেসব শিশু খাওয়ার ব্যাপারে বেশ অস্থির এবং উদাসীন তাদের সঠিক খাদ্যাভ্যাস গড়ে তোলা এতোটা সহজ নয়। শুরু থেকেই ছোট ছোট পরিবর্তন আনলে শিশুদের খাবার সময়ে তর্ক এড়ানোর চাপ কমবে। এটি গুরুত্বপূর্ণ যে শিশুরা পছন্দ করে এমন কিছু নিরাপদ খাবার তার থালায় রয়েছে এবং অল্প পরিমাণে হলেও সেই খাবারে নতুন কিছু আছে।
পুরস্কার
স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার জন্য পুরস্কার এবং প্রশংসা ভাল অভ্যাস গড়ে তুলতে শক্তিশালী ভূমিকা রাখতে পারে ।
পুরষ্কারগুলো যেন তাদের খাদ্যের সাথে সম্পর্কিত না হয়। বরং পার্কে যাওয়ার মতো কিছু কার্যকলাপ, কিছু রঙ করা বা চার্টে স্টিকার স্থাপন করার মতো ছোট ছোট বিষয় হয়।
তিনি সব সময় ঘুষ বা ঘুষের মতো দেখায় এমন পুরস্কার এড়িয়ে যেতে হবে। আপনি কখনোই বাচ্চাকে এটা বলবেন না যে, যদি সে পুরো খাবারটা খায় তাহলে আপনি তাকে একটি চকোলেট বা কিছু আইসক্রিম দেবেন। কারণ এতে সে মনে করবে, যে খাবারটি আপনি তাকে খেতে বলছেন সেটা পুরস্কারে পাওয়া খাবারের চাইতে মূল্যহীন।"
চাই সুস্বাস্থ্য, সুন্দর চেহারা নয়
বিশেষ করে একটু বড় বাচ্চাদের জন্য, খাদ্য ও ওজন একটি সংবেদনশীল বিষয় হতে পারে। কারণ তাদের মধ্যে নিজেদের চেহারা নিয়ে বা তাদের দেখতে কেমন লাগে সে বিষয়ে উদ্বেগ কাজ করে। যেটা কিনা তাদের আত্মসম্মানের ওপর বড় ধরণের প্রভাব ফেলতে পারে।
সাম্প্রতিক এক গবেষণায় দেখা গেছে, যে স্থূলতা এবং মানসিক স্বাস্থ্য ঘনিষ্ঠভাবে সংযুক্ত। একজন, স্থূল শিশু বিভিন্ন ধরণের মানসিক সমস্যা যেমন অতি উদ্বিগ্নতা এবং মন খারাপের মতো সমস্যায় তুলনামূলক বেশি ভোগে। এই বয়সী শিশুদের সঙ্গে খাদ্য বিষয়ক কথোপকথন এমন হতে হবে, যেন তারা এটা না ভাবে যে, স্বাস্থ্যকর খাবার তার চেহারার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট।
তাদেরকে সুস্থ হওয়ার জন্য উৎসাহিত করুন, এই কারণে নয় যে তাদের চেহারায় কোন পরিবর্তন আনবে। বরং এই কারণে যে সুস্থ থাকলে তারা ভালো বোধ করবে। যখন কারো ওজনের প্রসঙ্গটি সামনে আসে, তখন ওজনের সমস্যা মোকাবেলায় বুঝে শুনে ভাষা ব্যবহার করা বেশ গুরুত্বপূর্ণ। শিশুদের খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন আনার আগে পুরো পরিবারকে পরিবর্তন আনতে উৎসাহিত করতে হবে। এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ যেনো শিশুরা একলা বোধ না করে।
আমরা পুরো পরিবার নিয়ে স্বাস্থ্যবান হই। এতে শিশুরা নিজেদের স্বাস্থ্য নিয়ে সচেতন হবে ঠিকই। তবে তারা এটা ভাববে না যে তাদের বাবা-মা তাদের ওজন নিয়ে চিন্তিত।
সান নিউজ/এসএ