ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক:
পৃথিবী বাদে এখন পর্যন্ত অন্য কোথাও মানুষের জন্য বাসযোগ্য জায়গার খোঁজ পাননি বিজ্ঞানীরা। সৌরজগতের লোহিত গ্রহ মঙ্গল কিছুটা আশা জাগালেও তা পূরণ হতে অপেক্ষা করতে হবে আরও বহু বছর।
এ জন্য বিজ্ঞানীদের বিকল্প জায়গার খোঁজও থেমে নেই। এ ক্ষেত্রে তাঁদের আশাবাদী করে তুলেছে সৌরজগতের সবচেয়ে বড় গ্রহ বৃহস্পতির চাঁদ ইউরোপা। খবর রয়টার্স।
সৌরজগতের পঞ্চম গ্রহ বৃহস্পতির অবস্থান মঙ্গলের পরেই। এখন পর্যন্ত বৃহস্পতির ৭৯টি চাঁদের সন্ধান পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। এর মধ্যে ইউরোপা একটি। এর ভূগর্ভস্থ মহাসাগরের উৎপত্তির রহস্য উদ্ঘাটন করেছেন বিজ্ঞানীরা। এরপরই তাঁরা বৃহস্পতির এই চাঁদ নিয়ে আশাবাদী হয়ে উঠেছেন। এ-সংক্রান্ত একটি গবেষণা নিবন্ধ গত বুধবার অনুষ্ঠিত ভূতাত্ত্বিক সম্মেলনে উপস্থাপন করা হয়েছে। গবেষণাটি করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার বিজ্ঞানীরা।
অবশ্য ইউরোপাকে ঘিরে বিজ্ঞানীরা বেশ আগে থেকেই আশাবাদী। বরফের আস্তরণে ঢাকা এর ভূগর্ভস্থ মহাসাগরকে এত দিন ভিনগ্রহবাসী বা এলিয়েনের দেশ বলে ধারণা করেছেন তাঁরা। মঙ্গল ও শনির চাঁদ এনসেলাদুস নিয়েও একই রকম জল্পনা রয়েছে বিজ্ঞানী মহলে।
ইউরোপা আকারে পৃথিবীর একমাত্র উপগ্রহ চাঁদের চেয়ে কিছুটা ছোট। বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, ইউরোপার ওই মহাসাগরটি ৬৫ থেকে ১৬০ কিলোমিটার গভীর হতে পারে। এতে পানির পরিমাণ পৃথিবীর মহাসাগরগুলোর ধারণকৃত পানির দ্বিগুণ হতে পারে।
নতুন ওই গবেষণা নিবন্ধে বলা হয়, ইউরোপার ওই ভূগর্ভস্থ মহাসাগরের উৎপত্তির রহস্য উদ্ঘাটনের পর বিজ্ঞানীরা নিশ্চিত যে সেখানে অতীতে অণুজীবের উপস্থিতি ছিল। বিশেষ করে ওই মহাসাগরে বিপুল পানির উপস্থিতি সেটাই প্রমাণ করে। নিবন্ধে আরও বলা হয়, ইউরোপার কেন্দ্রে থাকা তেজস্ক্রিয় উপাদানের ক্ষয়ের ফলে সৃষ্ট তাপের কারণে একসময় সেখানকার পানিসমৃদ্ধ ভূগর্ভস্থ উপাদানগুলো পানি ছেড়ে দিয়েছিল। আর সেই পানি দিয়েই তৈরি হয়েছে ওই মহাসাগর। আর এই জলরাশিতে ঢেউ তৈরি হচ্ছে বৃহস্পতির সঙ্গে ইউরোপার মধ্যকার মহাকর্ষীয় বলের প্রভাবে। এতে অবশ্য বৃহস্পতির দুই বড় চাঁদ আইও ও গেনিমেডেরও প্রভাব রয়েছে।
এই গবেষণায় নেতৃত্ব দিয়েছেন নাসার জেট প্রোপালশন ল্যাবরেটরির গবেষক মোহিত মেলওয়ানি দেসওয়ানি। তিনি বলেন, ‘আমাদের ধারণা, ইউরোপার ওই মহাসাগরটি আগে বাসযোগ্য ছিল। কারণ, আমাদের কাছে যে মডেল রয়েছে, সেটি অনুসারে মহাসাগরটি মৃদু অম্লীয়। এতে কার্বন ডাই-অক্সাইড ও কিছু সালফারের লবণও আছে। তিনি আরও বলেন, তরল পানির উপস্থিতি বাসযোগ্যতা প্রমাণের প্রথম ধাপ।
সান নিউজ/ আরএইচ