নিজস্ব প্রতিবেদক: নিয়ম নীতির বেড়াজালেই আটকে আছে বুয়েট উদ্ভাবিত করোনা চিকিৎসার যন্ত্র অক্সিজেট। ঢাকা মেডিকেলে ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে ভালো ফল পেলেও এখন পর্যন্ত কোন বড় কোম্পানি তা তৈরি করতে রাজি হয়নি।
এখন ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের অনুমোদন নিয়ে বুয়েটেই স্বল্প পরিসরে অক্সিজেট উৎপাদন করার চিন্তাভাবনা করছেন উদ্ভাবকরা।
করোনায় গুরুতর আক্রান্তদের উচ্চমাত্রায় অক্সিজেন সরবরাহ করতে হাইফ্লো ন্যাজাল ক্যানুলা অথবা আইসিইউয়ের দরকার। কিন্তু রোগীর তুলনায় দেশে এই সুবিধা একেবারেই অপ্রতুল। সংকট সমাধানে নতুন ধরণের সিপ্যাপ তৈরি করে বুয়েটের ছাত্র শিক্ষকদের একটি দল।
যা দিয়ে হাইফ্লো ন্যাজাল ক্যানোলার প্রায় সমপরিমাণ অক্সিজেন সাপোর্ট দেয়া যায় করোনা রোগীকে। উদ্ভাবকরা সিপ্যাপটির নাম দেয় অক্সিজেট।
উদ্ভাবনের পর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা রোগীদের উপর প্রায় ১০ মাস ধরে ট্রায়াল চলছে অক্সিজেটের। ফলাফলও সন্তোষজনক বলে জানালেন ঢাকা মেডিকেলের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাজমুল হক।
তিনি বলেন, 'এটার একটি ভালো ফলাফল আমরা পাচ্ছি। তা না হলে পরবর্তী পর্যায়ে যাওয়ার কোন আগ্রহ হতোনা। আমরা দেখতে পাচ্ছি যে এটার ব্যবহার ভালো, এতে রোগীরা কম দামে ভালো অক্রিজেন সাপ্লাই পাবে।'
ভালো ফলাফলের পরেও সহসাই সারাদেশের হাসপাতালে ছড়িয়ে দেয়া সম্ভব হচ্ছেনা অক্সিজেট। বাংলাদেশ চিকিৎসা গবেষণা পরিষদের অনুমোদন মিললেও নিয়ম জটিলতায় এখনও মেলেনি ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের অনুমোদন। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ড. তওফিক হাসান বলেন, 'আমরা আবেদন করিনি। কারণ তারা বলেছেন, বিশ্ববিদ্যালয় তো এটা করতে পারবেনা। এর জন্য আইএসও স্ট্যান্টার্ড মেডিকেল ডিভাইস বা ফ্যাক্টরি থাকতে হয়।'
বুধবার নিজেরাই স্বল্প পরিসরে তৈরির অনুমোদন চেয়ে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরে আবেদন করেছেন উদ্ভাবকরা। এ বিষয়ে ড. তওফিক হাসান জানান, বাংলাদেশে যে নিয়ম রয়েছে তাতে কেউ মেডিকেল ডিভাইস বিষয়ে উদ্দোক্তা হতে পারবেনা। কারণ, আমি যদি উদ্দোক্তা হই, তাহলে নিয়ম মতে আমি ছোট। আমার কোন ফ্যাক্টরি নাই। তবে কর্তৃপক্ষ বিবেচনা করলে আমরা হয়তো ভালোকিছু দিতে পারবো।
দ্রুত যন্ত্রটি সারাদেশের হাসপাতালে ছড়িয়ে দেয়া সম্ভব হলে অক্সিজেন এবং হাইফ্লো ন্যাজাল ক্যানোলার ঘাটতি অনেকাংশেই পূরণ করা সম্ভব হত।
সান নিউজ/এমএম