আন্তর্জাতিক ডেস্ক : যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা সম্প্রতি জানিয়েছে, ২১ ডিসেম্বর বৃহস্পতি ও শনি এতটা কাছাকাছি চলে আসবে যে গ্রহ দুটিকে দেখে যুগ্ম গ্রহ বলে বিভ্রম হতে পারে অনেকের। আগামী ১৬ থেকে ২৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত সৌরমণ্ডলের দুই বৃহত্তম গ্রহ বৃহস্পতি ও শনি একে অপরের এতটা কাছাকাছি চলে আসবে যে প্রায় ৮০০ বছরে গ্রহযুগলকে এতটা কাছাকাছি অবস্থানে দেখা যায়নি।
যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসের রাইস ইউনিভার্সিটির পদার্থ ও জ্যোতির্বিজ্ঞানের অধ্যাপক তথা জ্যোতির্বিদ প্যাট্রিক হার্টিগান বলেন, ‘এই দুই গ্রহের বিন্যাস অত্যন্ত বিরল। প্রতি ২০ বছর অন্তর ব্যবধানের তারতম্য ঘটে।’ তিনি আরও বলেন, ‘কিন্তু এবারের যুগলবন্দি অত্যন্ত বিরল। কারণ এই সময় গ্রহ দুটি একে অপরের অনেক কাছে চলে আসবে। এমন এক মহাজাগতিক কাণ্ড দেখার জন্য বহু বছর অপেক্ষা করতে হয় বিজ্ঞানীদের।’
অধ্যাপক প্যাট্রিক জানান, সবশেষ ১২২৬ সালের ৪ মার্চ ভোরে কাছাকাছি এসেছিল বৃহস্পতি ও শনি। আবারও যে গ্রহ দুটি কাছাকাছি আসছে তা রাতের আকাশ দেখতে পছন্দ করেন এমন অনেকেই বেশ কিছুদিন ধরে খেয়াল করে থাকবেন। এখন রাতের আকাশে নজর রাখলে গ্রহ দুটির দূরত্ব আরও কমেছে বলে বোঝা যায়।
১৬ থেকে ২৫ ডিসেম্বরের মধ্যে সূর্যাস্তের পর পশ্চিম আকাশে এই দুই গ্রহকে কাছাকাছি দেখা যাবে বলে জানিয়েছেন পদার্থ ও জ্যোতির্বিজ্ঞানের অধ্যাপক তথা জ্যোতির্বিদ প্যাট্রিক হার্টিগান। ২১ ডিসেম্বর ‘যুগ্মগ্রহ’এর আকার ধারণ করার সময় দুই গ্রহের মধ্যে পূর্ণচন্দ্রের ব্যাসের এক পঞ্চমাংশ দূরত্ব থাকবে। তখন দূরবীক্ষণ যন্ত্র দিয়ে দেখলে গ্রহ দুটির উপগ্রহগুলো দেখা যেতে পারে বলে জানান তিনি।
তবে আপাতদৃষ্টিতে দুই গ্রহকে যতই কাছাকাছি দেখা যাক না কেন, বাস্তবে তাদের মধ্যে কয়েক শ হাজার লাখ মাইলের দূরত্ব বজায় থাকবে বলে জানিয়েছে মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা। পৃথিবীর সব প্রান্ত থেকেই যুগলবন্দি দেখা যাবে। তবে নিরক্ষরেখা বরাবর অবস্থিত দেশগুলো থেকে সবচেয়ে ভালোভাবে তা চোখে পড়বে। গ্রহ দুটি এতটাই উজ্জ্বল থাকবে যে গোধূলিতেও আকাশে তাদের দেখা মিলবে।
তবে এবার এই যুগলবন্দি দেখতে না পেলে গ্রহ দুটিকে ফের কাছাকাছি অবস্থানে দেখতে ২০৮০ সালের ১৫ মার্চ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। তারপর ফের ২৪০০ সালে একে অপরের কাছাকাছি আসবে এই দুই গ্রহ।
সান নিউজ/এসএ