নিজস্ব প্রতিবেদক:
জীবিকার তাগিদে সব কিছু ফেলে বিদেশে পাড়ি জমান বাংলাদেশিরা। নানা ঘাত-প্রতিঘাত সহ্য করে দেশের জন্য মহামূল্যবান রেমিটেন্স পাঠান তারা। বিদেশের মাটিতে কোনো প্রবাসী যখন মারা যান, তখন দেশে স্বজনরা ব্যাকুল থাকেন প্রিয়জনের মরদেহ ফিরে পেতে। এই কঠিন সময়ে আর্থিক সংকট প্রতিবন্ধকতা হয়ে দাঁড়ায়। ঠিক সেই সময়ে এগিয়ে আসে বাংলাদেশ বিমান। দীর্ঘদিন ধরে বিনা ভাড়ায় প্রবাসীদের মরদেহ দেশে ফিরিয়ে আনার মত মহৎ কাজটি করে আসছিল এই সংস্থাটি।
কিন্তু হঠাৎ করেই সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে বাংলাদেশ বিমান বিনা খরচে প্রবাসীদের মরদেহ বহন বন্ধ করে দেওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন দেশটির প্রবাসী বাংলাদেশিরা। করোনাকালে প্রবাসীরা যখন নিঃস্ব, তখন বাংলাদেশ বিমানের এই সিদ্ধান্তকে অমানবিক বলছেন তারা।
সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে প্রতি বছর গড়ে ৫শ' থেকে সাড়ে ৫শ' প্রবাসী বাংলাদেশির মরদেহ দেশে আসে। এই সব মরদেহ নানা প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বাংলাদেশে পাঠাতে খরচ পড়ে ৭ থেকে ৮ হাজার দিরহাম বা প্রায় দুই লাখ টাকা। বাংলাদেশ বিমান অসহায় ও নিঃস্ব প্রবাসীদের জন্য কাজটি বিনা ভাড়ায় করে আসছিল। বর্তমানে সেবাটি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় উদ্বিগ্ন প্রবাসীরা। তারা মনে করেন, জীবিকার তাগিদে জীবন সংগ্রামে প্রবাসে পড়ে থাকা নিঃস্ব প্রবাসীদের মরদেহ দেশে পাঠানো সম্ভব নাও হতে পারে।
সামর্থ্যবানরা মরদেহ পাঠাতে সক্ষম হলেও বেশিরভাগ মরদেহের খরচ বহনে আমিরাতে অবস্থানরত বিত্তশালী বাংলাদেশি সামাজিক সংগঠন বা মিশনের কাছে দ্বারস্থ হতে হয় মৃত ব্যক্তির নিকটজনদের।
করোনাকালেও দুবাই ও উত্তর আমিরাতে ৯০ জন এবং আবুধাবি অঞ্চলে ১০২ জন প্রবাসী বাংলাদেশির মরদেহ আমিরাতে দাফন করা হয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশ বিমানের এ সিদ্ধান্তে অনেক প্রবাসীকে করোনা পরবর্তী সময়েও এখানেই দাফন করতে হবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করছে প্রবাসী সংগঠনগুলো। এতে করে এই সকল রেমিটেন্স যোদ্ধাদের প্রতি অমর্যাদা প্রদর্শন দেখানো হবে বলে মনে করছেন অনেক প্রবাসী।
তবে তাদের সকলেরই আশা, যথাযথ কর্তৃপক্ষ এই বিষয়ে ভেবে দেখবেন। এই সংকট নিরসনে সরকার করণীয় নির্ধারণ করবেন এটাই প্রত্যাশা সকলের।
সান নিউজ/ এআর