সান নিউজ ডেস্ক: ট্যুরিজমো ডো পর্তুগালের প্রেসিডেন্ট লুইস আরাউজো জানিয়েছেন, গত বছরের তুলনায় আগামী এপ্রিলে পর্তুগালের অগ্রিম ফ্লাইট বুকিং ৫০০ শতাংশ বেড়েছে।
আরও পড়ুন: রুশ হামলায় মার্কিন নাগরিক নিহত
বুধবার (১৬ মার্চ) বলসা ট্যুরিজম লিসবোয়া ট্রাভেল মার্কেট (বিটিএল-২০২২) পর্যটন মেলা উদ্বোধনকালে তিনি এ তথ্য জানান।
ইউক্রেন-রাশিয়ার মধ্যে যুদ্ধ চলমান থাকার পরও ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে পর্তুগাল পর্যটকদের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে চলতি বছরের এপ্রিলে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে পর্তুগালে যাওয়ার জন্য ব্যাপক হারে অগ্রিম এয়ারলাইনস টিকিট এবং হোটেল বুকিং হয়েছে।
যদিও এ বুকিং স্বাভাবিক সময় হিসেবে ২০১৯ সালের একই সময়ের তুলনায় সমপরিমাণ নয় তবুও পর্যটন শিল্প ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য এটি কার্যকর ভূমিকা রাখবে।
ট্যুরিজমো ডো পর্তুগালের প্রেসিডেন্ট লুইস আরাউজো বলেন, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ খুব দ্রুত শেষ হলে এবং করোনার যে বিধিনিষেধ রয়েছে তা যদি শিথিল হয়, তাহলে আগামী মাসগুলোতেও এ ধারা বজায় থাকবে। যার মাধ্যমে পর্তুগাল আগামী ২০২৩ সালে করোনা মহামারির আগের অবস্থায় ফিরতে পারবে।
তিনি জানান, যে বিমান সংস্থাগুলোর কর্মকাণ্ড মহামারির আগে পর্তুগাল কেন্দ্রিক ছিল, সেগুলোর ৮০-৯০ শতাংশ ফ্লাইট ইতোমধ্যে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে এসেছে। এছাড়া প্রতিনিয়তই পর্তুগাল কেন্দ্রিক ফ্লাইটের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা খুব অল্প সময়ের মধ্যে আগের অবস্থায় ফিরবে।
মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে গত দুই বছর বন্ধ থাকার পর রাজধানী লিসবনে ৩২তম পর্যটন মেলাটি শুরু হয়েছে। এতে প্রায় ১ হাজার ৪০০ অংশগ্রহণকারী তাদের সেবা ও পণ্য প্রদর্শন করবে। ৮ ইউরো প্রবেশ মূল্যের মাধ্যমে দর্শনার্থীরা মেলাটি পরিদর্শন করতে পারবেন। এটি চলবে আগামী ২০ মার্চ পর্যন্ত।
আরও পড়ুন: ফের ফিল্মফেয়ার জিতলেন জয়া
প্রসঙ্গত, পর্তুগাল দক্ষিণ-পশ্চিম ইউরোপের একটি রাষ্ট্র। এটি আইবেরীয় উপদ্বীপের পশ্চিম অংশে, স্পেনের দক্ষিণে ও পশ্চিমে অবস্থিত। আটলান্টিক মহাসাগরে দেশটির দীর্ঘ উপকূল রয়েছে। এছাড়াও দুইটি স্বায়ত্তশাসিত দ্বীপপুঞ্জ পর্তুগালের নিয়ন্ত্রণাধীন, এগুলি হল আসোরেস দ্বীপপুঞ্জ এবং মাদেইরা দ্বীপপুঞ্জ, যারা উভয়েই আটলান্টিক মহাসাগরে অবস্থিত। লিসবন পর্তুগালের রাজধানী ও বৃহত্তম শহর।
১৯১০ সাল পর্যন্ত পর্তুগালে রাজতন্ত্র প্রচলিত ছিল। ঐ বছর পর্তুগালে প্রথম প্রজাতন্ত্রের আবির্ভাব ঘটে। এর পরবর্তী বছরগুলি ছিল খুব অশান্ত। ১৯২৬ সালে কু-এর মাধ্যমে একনায়কতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা হয় এবং এটি পাঁচ দশক ধরে পর্তুগাল শাসন করে। ১৯৬০-এর দশকে আফ্রিকাতে ঔপনিবেশিক যুদ্ধের কারণে পর্তুগালের সম্পদ হ্রাস পায় এবং জাতীয় অর্থনীতি দুর্বল হয়ে পড়ে। ১৯৭৪ সালে পর্তুগালে একটি বিপ্লব ঘটে এবং একটি সামরিক সরকার ক্ষমতায় আসে। ১৯৭৫ সালে পর্তুগাল তার সমস্ত আফ্রিকান উপনিবেশকে স্বাধীনতা দিয়ে দেয়। ১৯৭৬ সালে প্রণীত নতুন সংবিধানে গণতান্ত্রিক সরকার ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা হয়। তখন থেকে পর্তুগাল ইউরোপের সাথে নতুন করে সম্পর্ক স্থাপন করেছে এবং অর্থনীতির আধুনিকায়নে জোর দিয়েছে। পর্তুগাল ১৯৮৬ সালে ইউরোপীয় সম্প্রদায়ে (পরবর্তীকালে যা ইউরোপীয় ইউনিয়নের পরিণত হয়) যোগদান করে এবং ১৯৯৯ সালে মুদ্রা হিসেবে ইউরো-কে গ্রহণ করে। ১৯৯৯ সালেই পর্তুগাল এশিয়াতে তার শেষ উপনিবেশ মাকাও-কে চীনের কাছে ফেরত দেয়। পর্তুগালে অনেক বাংলাদেশিও বসবাস করেন।
সান নিউজ/এনকে