আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ভারতের উত্তরপ্রদেশ পুলিশের জঙ্গিদমন শাখা ও কলকাতা পুলিশ যৌথ অভিযান চালিয়ে কলকাতায় মানবপাচারকারী চক্রের হোতাসহ ২০ বাংলাদেশিকে আটক করেছে পুলিশ। রোববার (১২ ডিসেম্বর) আনন্দপুর থানা সংলগ্ন গুলশান কলোনির একটি বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করে কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ। এর মধ্যে আটক মফিজুরের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে তিনি জাল পরিচয়পত্র বানিয়ে মানবপাচার করে আসছিলেন। তাকে ট্রানজিট রিমান্ডে নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, আগামী ১৯ ডিসেম্বর কলকাতা পৌরসভার নির্বাচন। নির্বাচন উপলক্ষে জোরদার করা হয়েছে নিরাপত্তা ব্যবস্থা, করা হচ্ছে তল্লাশি। এ পরিস্থিতিতে কলকাতা পুলিশের হাতে আটক হলো মানবপাচারকারী চক্রের হোতাসহ ২০ বাংলাদেশি। কেন তারা ভারতে গেছেন তার কোনো সদুত্তর দিতে পারেনি আটক বাংলাদেশিরা । তাই তাদেরকে থানায় রাখা হয়েছে। তারা পুলিশকে কোনো বৈধ কাগজপত্রও দেখাতে পারেনি।
আনন্দবাজার পত্রিকার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, জিজ্ঞাসাবাদ করে একাধিক চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে। ধৃতদের বিদেশে পাঠানোর জন্য বাংলাদেশ থেকে কলকাতায় আনেন মূল অভিযুক্ত মফিজুর রহমান। এ জন্য এ জন্য দেড় থেকে দু’লক্ষ টাকা করে নিয়েছেন তিনি। দুবাই, গ্রিস, অস্ট্রেলিয়া ও নেদারল্যান্ডসে পাঠানোর জন্য ওই টাকা নিতেন অভিযুক্ত মফিজুর রহমান। প্রথমে তাদের ভারতে এনে জাল আধার কার্ড, প্যান কার্ড, ভোটার কার্ড বানাতেন মাহফুজুর। তার পর ভুয়া ভিসা এবং পাসপোর্ট বানিয়ে বিদেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করতেন। আটক বাংলাদেশিদের একই ভাবে বিদেশে পাঠানোর পরিকল্পনা করেন তিনি। মফিজুর রহমানের কাছ থেকে প্রচুর জাল নথি উদ্ধার করা হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, পুলিশ জানায়, তারা গোপন সূত্রে খবর পেয়েছিল যে, কিছু লোকজন শহরে আসছে। কিন্তু তার কোনও নির্দিষ্ট তথ্য ছিল না তাঁদের কাছে। এমন সময়ে এক আসামিকে ধরতে যোগীর রাজ্য খ্যাত উত্তর প্রদেশের পুলিশ আসে কলকাতা শহরে। তাঁরা সাহায্য চায় কলকাতা পুলিশের। আর সেই সাহায্য করতে গিয়ে আনন্দপুর এলাকার গুলশান কলোনিতে হানা দেয় কলকাতা এবং লক্ষ্ণৌ পুলিশের টিম। তখনই ২০ বাংলাদেশি নাগরিকের হদিস পায় যৌথ বাহিনী। ২০ জনকেই আটক করে তাঁরা।
এদিকে, হিন্দুস্তান টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, আটক মানবপাচারকারী চক্রের মূলহোতার নাম মফিজুর রহমান। হিউম্যান ট্রাফিকিংয়ের ক্যাসে উত্তরপ্রদেশ পুলিশ তাকে দীর্ঘদিন ধরে খুঁজে রেড়াচ্ছেন। এরই ধারাবাহিকতায় গোপন সূত্রে খবর পেয়ে গুলশান কলোনির ওই বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তাকেসহ ২০ জনকে আটক করা হয়। পৌরসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে এই ঘটনা খতিয়ে দেখতে চাইছে পুলিশ। ২০ জন বাংলাদেশির একসঙ্গে আগমন তাই ভাঁজ ফেলেছে কলকাতা পুলিশের কপালে। তবে তাঁদের নাম-পরিচয় নিয়ে বিস্তারিত কিছুই জানায়নি পুলিশ।
সান নিউজ/এমকেএইচ