প্রবাস ডেস্ক : দক্ষিণ আফ্রিকায় বাংলাদেশি ব্যবসায়ীকে হত্যার পর করোনায় মৃত সাজিয়ে মরদেহ দেশে পাঠানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত ২৫ জুলাই রাফিদুলের মরদেহ দেশে পৌঁছায়। মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলার চাঁড়িগ্রাম ইউনিয়নে তার দাফন সম্পন্ন হয়েছে।
নিহত মাওলানা রাফিদুল ইসলাম (২৬) বাংলাদেশি শরিফ ও ভারতীয় বংশোদ্ভূত স্থানীয় নাগরিক কিরণ প্যাটেলের সঙ্গে শেয়ারে দোকান দিয়ে ও অনলাইনে ব্যবসা করে আসছিলেন। তিনি উত্তরা বাইতুস সালাম মাদরাসা থেকে হেফজ সম্পন্ন করেন।
মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) নর্থ প্রিটোরিয়ায় শ্বাসরোধ করে তাকে তার ব্যবসায়িক অংশীদ্বার হত্যা করেন বলে অভিযোগ রাফিদুলের বাবা মোহাম্মদ বাদল মিয়ার।
তিনি বলেন, ‘আমার ছেলে গত জুনের শুরুতে সাত লাখ টাকা শরিফের মাধ্যমে কিরণের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে দেশে পাঠানোর জন্যে দেয়। সেই টাকা দেশে না পাঠিয়ে বিভিন্ন ব্যাংকিং জটিলতা দেখিয়ে দীর্ঘ দেড়মাস পর্যন্ত ঘুরিয়েছে শরিফ ও কিরণ। এ নিয়ে তাদের মধ্যে ঝামেলা হয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমার ছেলের হত্যাকারী চক্র তাকে করোনায় মৃত সাজিয়ে দ্রুত লাশ দেশে পাঠিয়ে দেয়। দেশে মরদেহ এলে জানাজা শেষে দাফনের আগে রাফিদুল ইসলামের গায়ে আঘাতের কারণে পিঠে, দুই হাতের কনুই ওপরে জমাট কালো রক্ত দেখা গেছে। এছাড়া, নাক দিয়ে রক্ত গড়িয়ে পড়েছে এমন জমাট রক্ত পাওয়া গেছে।’
বাবা বাদল মিয়া বলেন, ‘করোনায় মারা গেলে মরদেহ কীভাবে দেশে পাঠানো যায়? সেটা দক্ষিণ আফ্রিকা কিছুতেই করতে দিত না। এ থেকে বুঝতে পারছি মো. শরিফ ও কিরণ প্যাটেলের সংঘবদ্ধ চক্র আমার ছেলের টাকা আত্মসাৎ করতে তাকে হত্যা করেছে।’
তিনি বলেন, ‘আমি বাংলাদেশ সরকারের স্বরাষ্ট্র ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং দক্ষিণ আফ্রিকায় বাংলাদেশ দূতাবাসের কাছে সহযোগিতা চাই। আমার ছেলের মরদেহ কবর থেকে তুলে ময়নাতদন্তের মাধ্যমে তার মৃত্যুর সঠিক কারণ উদঘাটন করে দায়ীদের যেন শাস্তির আওতায় আনা হয়।’
প্রধান অভিযুক্ত ভারতীয় বংশোদ্ভূত স্থানীয় নাগরিক কিরণ প্যাটেল ঘটনার পর থেকে গা ঢাকা দিয়েছেন। তার ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে।
বাংলাদেশি মোহাম্মদ শরিফের সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘রাফিদুল ইসলাম আমার খুব কাছের মানুষ ছিল। সে তার ভালো-মন্দ সব বিষয় আমার সঙ্গে শেয়ার করতো। রাফিদুল করোনায় মারা গেছে। আমি জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তার চিকিৎসার জন্য তাকে নিয়ে হাসপাতালে হাসপাতালে ছোটাছুটি করেছি।
যদি করোনায় মৃত্যু হয় তাহলে মরদেহ কীভাবে দেশে পাঠানো গেল জানতে চাইলে শরিফ বলেন, ‘সবকিছু আমি করেছি। আমরা পাঠানোর ব্যবস্থা করেছি।’
সাননিউজ/এমএইচ