সিঙ্গাপুর প্রতিনিধি:
বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাস সিঙ্গাপুরেও হানা দিয়েছে। সরকার প্রাণঘাতী ভাইরাসটির সংক্রমণ রোধে নিয়েছে নানা পদক্ষেপ। এরপরও ঠেকানো যাচ্ছে না করোনার সংক্রমণ।
আক্রান্তদের মধ্যে আছেন প্রবাসী বাংলাদেশিরাও। তেমনই করোনায় আক্রান্ত এক প্রবাসী বাংলাদেশি সম্প্রতি দেশবাসীকে এই রোগের ভয়াবহতা বর্ণনা করে সতর্ক থাকার আকুল আহ্বান জানিয়েছেন।
তান তক সিন হাসপাতালের ৯-ডি নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি থাকা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঐ প্রবাসীর লিখেছেন,
"ভাইরাস থেকে দূরে থাকা খুবই দুষ্কর, সব নিয়ম আমি মেনে চলেছিলাম। আমি পুঙ্গল এস এলিভেন ডরমিটরিতে থাকতাম।এই ডরমিটরির ইতিমধ্যে চার শতাধিক বাংলাদেশী করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে।
গত ৬ এপ্রিল থেকে প্রায় ১৩ হাজার অভিবাসী শ্রমিক অধ্যুষিত এই ডরমিটরিটি লক ডাউন করে দিয়েছে সিঙ্গাপুর সরকার।
লকডাউন হওয়ার পর মিনিস্ট্রি অফ ম্যানপাওয়ার (MOM) ও সিঙ্গাপুরের অন্যান্য সংস্থা এই ডরমিটরিতে অবস্থানরত সকলকে খাবার, পানি ও আনুষঙ্গিক সুবিধা সরবরাহের ব্যবস্থা করেছে।
মিনিস্ট্রি অফ ম্যানপাওয়ার থেকে কোন খাবার দিলে ধুয়ে খেতাম। একটা ফল বা ড্রিংকস, হ্যান্ড ওয়াশ বা সাবান দিয়ে ভালোভাবে ধুয়ে তারপর খেতাম। কারো কাছে যেতাম না। দূরত্ব বজায় রেখে চলতাম।
এর মধ্যে আমাদের রুমের এক জনের সর্দি লাগে. পরদিন জ্বর। তারপর হাসপাতালে পরীক্ষা করতে গেলে করোনা পজিটিভ ধরা পড়ে। পরদিন সকালে আরও তিন জন আক্রান্ত হয় আমাদের রুমের।
আমার কোন উপসর্গ নেই, একটু গ্যাস্ট্রিকের অনুভব করছি এই কয়দিন। এছাড়া সবকিছু স্বাভাবিক ছিল। হঠাৎ করে রাতে শরীরের তাপমাত্রা ৩৭ ডিগ্রির উপরে থাকায় সকালবেলা হাসপাতালে পরীক্ষা করার জন্য গেলে করোনা পজিটিভ ধরা পড়ে।
এটা সত্যি যে, রুমে একজনের হলে সবার মধ্যে খুব তাড়াতাড়ি তা ছড়িয়ে পড়ে। সে রুমের যে কোন কর্নারেই থাকুক না কেন। এটা বাতাসে ভেসে বেড়ায় এবং নাকের মধ্যে দিয়ে ঢুকে যায়।
হাত দিয়ে স্পর্শ করতে হয় না ভাইরাস, এমনিতেই শরীরের প্রবেশ করে। আমি তার একটা উদাহরণ দেব। কারণ কোন প্রয়োজনে ফোন ধরার আগেও হ্যান্ড স্যানিটাইজার দিয়ে ভালোভাবে হাত ধুয়েছি, নাক, মুখ স্পর্শ করার আগেও কয়েকবার হাত ভালোভাবে পরিষ্কার করেছি। সকল সর্তকতা অবলম্বন করেছি। আমার কোন উপসর্গই দেখা দেয় নাই।
আমার মতে এই যে গ্যাস্ট্রিক অনুভব কিংবা অন্য সাধারণ জ্বর সর্দি হলেও অবহেলা না করে ডাক্তারের কাছে যাওয়া দরকার, বর্তমান পরিস্থিতিতে যে কোনো ব্যক্তিই করোনা পজিটিভ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
আপনারা আমার এই কথা শেয়ার করতে পারেন কিন্তু আমার নাম প্রকাশ করবেন না। আমার পরিবারের সদস্যরা জানতে পারলে কান্নাকাটি শুরু করবে। ভাবছি পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে পরবর্তীতে পরিবারের সদস্যদের আমার বর্তমান পরিস্থিতি জানাব।
Please pray for me 🙏🙏🙏"