নিজস্ব প্রতিবেদক: সরকার পদত্যাগের ‘একদফা’ দাবিসহ আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার প্রতিবাদে সপ্তম দফায় আরও ৪৮ ঘণ্টা সর্বাত্মক অবরোধ কর্মসূচির ডাক দিয়েছে বিএনপি।
আরও পড়ুন: বিচার বিভাগে সরকারের প্রভাব নেই
এবার শুক্র ও শনিবার ২ দিন বিরতি দিয়ে রোববার (২৬ নভেম্বর) ভোর ৬ টা থেকে শুরু করে মঙ্গলবার (২৮ নভেম্বর) ভোর ৬ টা পর্যন্ত সারা দেশে এ কর্মসূচি দেওয়া হবে।
বৃহস্পতিবার (২৩ নভেম্বর) বিকেলে ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এ কর্মসূচি ঘোষণা করে দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, আওয়ামী সরকারের পদত্যাগ ও নির্বাচনকালীন নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার পুনপ্রতিষ্ঠা, বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও বিদেশে উন্নত চিকিৎসা, দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ সকল বিএনপি নেতাকর্মীদের মুক্তিসহ ‘একদফা’ দাবি আদায়ের লক্ষ্যে এবং অবৈধ তফসিল ঘোষণার প্রতিবাদে আগামী রোববার ভোর ৬ টা থেকে মঙ্গলবার ভোর ৬ টা পর্যন্ত ৪৮ ঘণ্টা সর্বাত্মক অবরোধ কর্মসূচি পালিত হবে।
আরও পড়ুন: বিএনপি অফিসে প্রশাসন তালা দেয়নি
এ সময় তিনি বলেন, এক বিশেষ পরিস্থিতি ও দুর্যোগ-দুর্বিপাকের মধ্যে আপনাদের সাথে কথা বলতে হচ্ছে। দেশের বৃহত্তম রাজনৈতিক দল বিএনপির নেতাকর্মীরা স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারছেন না, স্বাভাবিকভাবে চলাচল করতে পারছেন না।
সরকার জনগণের সাথে প্রতিনিয়ত ধাপ্পাবাজি করছে। সরকারপ্রধান বলেছেন, নির্বাচনে আসুন কার কত দৌড়, আমরা দেখি। নির্বাচনে দৌড়াবেন তো আপনি।
আপনার মনের মতো করে তৈরি করা আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, নির্বাচন কমিশন ও প্রশাসন, তাদেরকে নিয়ে আপনি দৌড়াবেন। জনগণ তো প্রতিযোগিতার জন্য দৌড়াতে পারবে না। কারণ জনগণকে আপনি বন্দি করে রেখেছেন।
আরও পড়ুন: পদে ফিরছেন না জাহাঙ্গীর
রিজভী বলেন, গণতান্ত্রকামী মানুষ আজ বন্দি জীবন যাপন করছে। বিএনপির অধিকাংশ নেতাকে মিথ্যা মামলা দিয়ে কারাগারে দিয়েছেন।
আমাদের দলের তৃণমূল থেকে শুরু করে কেন্দ্রীয় নেতাদের জেলে ঢুকিয়েছেন। মাঠ খালি করে একা দৌড়ানোর জন্য আপনি রাষ্ট্রশক্তি ব্যবহার করেছেন।
আমরা গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল, আন্ডারগ্রাউন্ড দল নই। আমরা রাস্তায় প্রতিবাদ করি সকল অন্যায়ের। এই অপরাধেই গ্রেফতার করছেন। গ্রেফতারের জন্য মহাউৎসব শুরু করেছেন।
প্রসঙ্গত, গত ২৮ অক্টোবর বিএনপির মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে পুলিশের সাথে বিএনপির সংঘর্ষে ১ পুলিশ সদস্য নিহতসহ অনেকে আহত হন। সমাবেশ ভন্ডুলের প্রতিবাদে পরদিন হরতালের ডাক দেয় বিএনপি।
এ দিন বিএনপি মহসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে গ্রেফতার করা হয়। পরের কয়েকদিনে মির্জা আব্বাস, আমীর খসরু, মোয়াজ্জেম হোসেন আলালসহ বিএনপির শীর্ষ পর্যায়ের প্রায় সব কেন্দ্রীয় নেতাকে গ্রেফতার করা হয়।
আরও পড়ুন: নির্বাচন নিয়ে কোনো চাপ নেই
এসব গ্রেফতারের প্রতিবাদে ও আগে থেকে চলা সরকারের পদত্যাগের ‘একদফা’ দাবিতে গত ৩১ অক্টোবর থেকে লাগাতার কর্মসূচি দিয়ে আসছে বিএনপি। পরে তফসিল ঘোষণার প্রতিবাদে ২ দিন হরতাল পালন করে তারা।
আজ সারা দেশে ষষ্ঠ দফায় ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ কর্মসূচি পালন করছে বিএনপি ও শরিকরা। আগামীকাল শুক্রবার ভোর ৬ টায় এ কর্মসূচি শেষ হবে।
গত ২৮ অক্টোবর মহাসমাবেশের পর ২৯ অক্টোবর হরতালপালন করে দলটি। এরপর ৩১ অক্টোবর, ১ ও ২ নভেম্বর মোট ৩ দিনের অবরোধ কর্মসূচি পালন করা হয়।
৫ ও ৬ নভেম্বর দ্বিতীয় দফা, ৮ ও ৯ নভেম্বর তৃতীয় দফা, ১১ ও ১২ নভেম্বর চতুর্থ দফা এবং ১৫ ও ১৭ নভেম্বর পঞ্চম দফায় ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ কর্মসূচি পালন করে তারা।
সান নিউজ/এনজে