নিজস্ব প্রতিবেদক: তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, আসন্ন জাতীয় দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে বিএনপি না এলেও আরও অনেক রাজনৈতিক দল অংশ নেবে। গণতন্ত্রের অভিযাত্রা অব্যাহত রাখতে তফসিল অনুসারে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হবে।
আরও পড়ুন: জনগণের সেবার সুযোগ পাই
রোববার (১২ নভেম্বর) সচিবালয়ে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
চলতি সপ্তাহেই নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হতে পারে বলে নির্বাচন কমিশন থেকে বলা হচ্ছে। কিন্তু বিএনপি থেকে বলা হচ্ছে তারা কোনো নির্বাচনে অংশ নেবে না। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের এ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, নির্বাচনে যাওয়া কিংবা না যাওয়া সেই অধিকার যে কোনো রাজনৈতিক দলের আছে। তারা নির্বাচনে যেতে পারে, নাও যেতে পারে। কিন্তু নির্বাচন প্রতিহত করার এখতিয়ার কারও নেই। নির্বাচন প্রতিহত করার কথা বলা মানেই দেশ ও গণতন্ত্রবিরোধী কথা বলা। যারা এমন ধরনের বক্তব্য রাখবে কিংবা অপচেষ্টা চালাবে, তাদের বিরুদ্ধে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আমরা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে প্রতিরোধ গড়ে তুলবো।
তিনি আরও বলেন, সরকার ও রাষ্ট্রের দায়িত্ব হচ্ছে গণতন্ত্রের অভিযাত্রা অব্যাহত রাখা। এজন্য যা কিছু করা দরকার, সেটাই করবো।
আরও পড়ুন: ইসির নতুন দুটি অ্যাপের উদ্বোধন
হাছান মাহমুদ অভিযোগ করে আরও বলেন, দেশের গণতন্ত্র নস্যাৎ করে বিএনপি একটি বিশেষ পরিস্থিতি তৈরি করতে চায়। এই স্বপ্ন দেখতে দেখতে তাদের ১৫ বছর কেটেছে। আগামী কতবছর কাটবে, জানি না।
আবারও বিএনপিকে ছাড়া নির্বাচন হচ্ছে কিনা বা তাদের জন্য অপেক্ষা করা হবে কিনা এমন প্রশ্নে মন্ত্রী বলেন, আমরা চাই, তারা নির্বাচনে আসুক। জনপ্রিয়তার যে দাবি তারা করেন, সেটা যাচাই করুক। তাদের এতো উদ্যামী কর্মী আছে যারা ২০ মিনিটে ময়দান ছেড়ে চলে যায়, তারা কতটুকু নামে আমরাও একটু দেখি। তাদের এতো জাঁদরেল জাঁদরেল নেতা, পুলিশের মাত্র আওয়াজে—কোনো গুলি হয়নি, কাঁদানে গ্যাসও ছাড়া হয়নি —ছোটোবেলায় যে বাজি ফোটাতাম, সেই বাজির আওয়াজে মঞ্চ ছেড়ে চলে গেছেন তারা।
বিএনপি নির্বাচনে আসুক, এসে দেখুক তাদের জনপ্রিয়তা কতটুকু। তাদের কর্মীরা কতটুকু নামেন, নেতাদের ওপর কতটুকু আস্থা রাখেন। আমরা তাদের সাথে নির্বাচন করতে চাই। আর নির্বাচনের অপেক্ষা আমরা করতে পারি না। নির্বাচনের আয়োজক নির্বাচন কমিশন। সেখানে একটি শিডিউল থাকবে, সেই অনুসারে নির্বাচন হবে। সেই সময়ের মধ্যে নির্বাচন হলে তাদের নিয়েই নির্বাচন হবে বলেন তিনি।
আরও পড়ুন: ৪৬ এএসপির পদোন্নতি
যদি বিএনপি নির্বাচনে না আসে, তাহলে কী হবে এমন প্রশ্নে তথ্যমন্ত্রী বলেন, সেক্ষেত্রে গণতন্ত্র অব্যাহত রাখতে নির্বাচন হতে হবে, কোনো একটি দল না এলে আরও অনেক দল আসবে। নির্বাচনে জনগণের ব্যাপক অংশগ্রহণ থাকবে এবং একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হবে।
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে টু প্লাস টু বৈঠক করেছে ভারত। সেই বৈঠকে বাংলাদেশের আসন্ন জাতীয় নির্বাচন নিয়েও কথা হয়েছে। এ বিষয়ে মন্ত্রীর পর্যবেক্ষণ কী প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এই বৈঠক ছিল একান্তই দ্বিপাক্ষিক। সেখানে কী আলোচনা হয়েছে, সেটা পত্রপত্রিকায় এসেছে। ভারতের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের নির্বাচন ও উন্নয়ন তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়। ভারত যেটি বলেছে, সেটি যথার্থ বলেছে। কাজেই বাংলাদেশের নির্বাচন ও উন্নয়ন এ বিষয়ে এ দেশের জনগণই সিদ্ধান্ত নেবেন। নির্বাচনের মাধ্যমে কে ক্ষমতায় আসবে, তাও বাংলাদেশের জনগণ ঠিক করবেন যোগ করে বলেন তিনি।
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি ও তাকে বিদেশে চিকিৎসার আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক প্রধান এ বিষয়ে জানতে চাইলে তথ্যমন্ত্রী বলেন, খালেদা জিয়ার মুক্তি সরকারের হাতে নেই, এটা তো আইনের হাতে, আদালতের হাতে। সরকার চাইলেও তাকে মুক্তি দিতে পারবে না। সরকারের হাতে যতটুকু ক্ষমতা ছিল, তার সাজা স্থগিত রেখে তাকে ঘরে মুক্ত থাকার ব্যবস্থা করা, সেটা সরকার করে দিয়েছে।
সান নিউজ/টিও