নিজস্ব প্রতিনিধি: আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের মন্তব্য করেন নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপি সনাতন ধর্মাবলম্বীসহ অন্য ধর্মের মানুষের উপর চাপ সৃষ্টি করতে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে এবং তাদেরকে হুমকি দিচ্ছে।
আরও পড়ুন: মার্কিন রাষ্ট্রদূতের বাসায় রাজনৈতিক নেতারা
রোববার (১৩ আগস্ট) এই নেতা এক বিবৃতিতে এ কথা জানান।
এ নেতা আরও জানান, সাম্প্রদায়িকতাকে পুঁজি করে বিএনপি রাজনীতি করে। তাদের রাজনীতি পাকিস্তানি ভাবাদর্শের রাজনীতি, উগ্রবাদ ও সাম্প্রদায়িকতার রাজনীতি।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম সনাতন ধর্মাবলম্বীদের উদ্দেশ্যে বিভ্রান্তিকর ও দূরভিসন্ধিমূলক বক্তব্যের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।
আরও পড়ুন: সেপ্টেম্বর জুড়ে চূড়ান্ত আন্দোলন
ওবায়দুল কাদের জানান, ২০০১ সালে অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পরে তাদের হামলার লক্ষ্যবস্তু ছিল সংখ্যালঘুদের ধর্মীয় উপসনালয়, বাড়িঘর ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। তখনকার মন্ত্রী, এমপিদের নির্দেশে বিভিন্ন জায়গায় হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষের উপর হামলা চালিয়েছে বিএনপির সন্ত্রাসী বাহিনী। সারাদেশে ৫০ হাজার নারী ও শিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছিল। ভোলার চরফ্যাশনে ১ রাতে বিএনপি ক্যাডারবাহিনী কর্তৃক ২০০ জন নারী গণধর্ষণের শিকার হয়েছিল।
তিনি আরও জানান, তাদের অত্যাচারের হাত থেকে শিশু-বৃদ্ধ কেউ রেহাই পায়নি। নির্বাচন যত কাছে আসছে বিএনপিরা সনাতন ধর্মাবলম্বীসহ অন্য ধর্মের মানুষের উপর প্রভাব সৃষ্টি করতে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে এবং তাদের হুমকি দিচ্ছে।
আরও পড়ুন: ত্যাগী নেতাদের মূল্যায়নের নির্দেশ
বিবৃতিতে তিনি জানান, সংখ্যালঘু সম্প্রদায় নয় শুধু , আওয়ামী লীগের হাজারো নেতাকর্মীকে শিকার হতে হয়েছে। অশুভ জোটের শাসনামলে আওয়ামী লীগের ২৪ হাজার নেতাকর্মীকে হত্যা করা হয় এবং অসংখ্য নেতাকর্মী ক্ষতের দগদগে চিহ্ন বহনের পাশাপাশি মানবেতর জীবনযাপন করছে।
ওবায়দুল কাদের জানান, ভারতের বাবরি মসজিদের ঘটনার সময় হিন্দু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা নিয়ে নিলর্জ্জ মিথ্যাচার করেছে উল্লেখ করে সে সময় বিএনপির ক্যাডারবাহিনী ও তাদের উগ্রসাম্প্রদায়িক দোসরদের হামলায় রক্তাক্ত প্রান্তরে পরিণত হয় বাংলাদেশ।
আওয়ামী লীগ এ নেতা জানান, তৎকালীন বিএনপি সরকার হিন্দু সম্প্রদায় ও তাদের উপাসনালয়, বাড়িঘরের সুরক্ষা দিতে সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ হয়েছিল। শুধুমাত্র ঢাকা শহরেই অসংখ্য মন্দির ভাঙচুর ও সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ওপর পৈচাশিক হামলা ও নির্যাতন করা হয়েছিল।
আরও পড়ুন: সন্ধ্যায় আওয়ামী লীগের বৈঠক
ওবায়দুল কাদের বলেন, শুধু হিন্দু সম্প্রদায়ই নয়, বিএনপি তখন সাধারণ মানুষের ন্যূনতম নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছিল।বিএনপির রাজনীতি ধর্মকে পুঁজি করে এবং উগ্রসাম্প্রদায়িক অপশক্তির ওপর নির্ভর করে পরিচালিত হয়ে আসছে। যার প্রমাণ ২০০১ পরবর্তী সময়েও পরিলক্ষিত হয়।
প্রসঙ্গত তিনি জানান, তাদের তত্ত্বাবধানে বাংলা ভাইয়ের মতো জঙ্গি নেতার সৃষ্টি হয়েছিল; জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছিল ; একুশে আগস্টের নারকীয় গ্রেনেড হামলা। ১ সাথে দেশের ৬৩টি জেলায় ৫ শতাধিক স্থানে সিরিজ বোমা হামলা চালানো হয়। মির্জা ফখরুলরা যতই মিথ্যাচার করুক না কেন, বাংলাদেশের মানুষ বিএনপি শাসনামলে তাদের পৃষ্ঠপোষকতায় সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের সেই ভয়াবহ উত্থানের কথা ভুলে নি।
এ নেতা আরও জানায়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবিসংবাদিত নেতৃত্বে দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রামের পথপরিক্রমায় ১৯৭১ সালে ৯ মাসের সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে ৩০ লাখ শহীদের রক্তের বিনিময়ে পাকিস্তানি শাসক ও তাদের দোসর উগ্র-সাম্প্রদায়িক অপশক্তিকে পরাজিত করে অসাম্প্রদায়িক প্রগতিশীল জাতিরাষ্ট্র হিসেবে স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত হয়।
আরও পড়ুন: খালেদা জিয়াকে বিদেশে পাঠানোর দাবি
তিনি জানান, রাষ্ট্রের মূলনীতি হিসেবে বাঙালি জাতীয়তাবাদ, গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র ও ধর্ম নিরপেক্ষতাকে ধর্ম-বর্ণ জাতি-লিঙ্গ শ্রেণি-পেশা নির্বিশেষে দেশের সব নাগরিকের সমান অধিকার নিশ্চিত করা হয়। আওয়ামী লীগ সেই অঙ্গীকারকে ধরে রেখেই রাজনীতি করে আসছে।
সবশেষে তিনি জানান, আওয়ামী লীগ বিশ্বাস করে, দেশের সকল নাগরিক সমান; সবার ধর্ম পালনের সমান স্বাধীনতা ,অধিকার রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সে নীতি অনুযায়ী রাষ্ট্র পরিচালনা করে সব সম্প্রদায়ের মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা করে তাদের সুরক্ষা ও নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করেছেন।
সান নিউজ/এএ