সান নিউজ ডেস্ক : ঢাকা-১৭ আসনের দায়িত্ব নিতে চান বিশিস্ট সমাজসেবক রাকিন আহমেদ ভূঁইয়া ৷ আসন্ন উপ-নির্বাচনে এলাকাবাসীর কাছে সুযোগ ও সমর্থন চেয়েছেন তিনি।
আরও পড়ুন : আ.লীগকে কেউ ধ্বংস করতে পারবে না
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তার একান্ত সচিব ও পলিটিক্যাল সেক্রেটারি মোঃ শিবলী আহমেদ সবুজ।
তিনি বলেন, রাকিন আহমেদ এর আগেও ঢাকা ১৭ আসন এলাকার মানুষের বিভিন্ন বিপদ-আপদে পাশে ছিলেন। এলাকাবাসী চান তিনি এবার উপ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করুক। এলাকাবাসীর এমন মতামতের কারণে তিনি উপনির্বাচনে অংশগ্রহণের সম্মতি প্রকাশ করেছেন।
জানা যায়, তার পিতা ২৫ শে ফেব্রুয়ারি ২০০৯ সালে নৃশংস পিলখানা হত্যাকাণ্ডে শহিদ প্রয়াত বিডিয়ার মহাপরিচালক মেজর জেনারেল শাকিল আহমেদ ।
রাকিন আহমেদ ভূঁইয়া বলেন, দেশ ও দেশের মানুষের জন্য আমার বাবার কি অবদান রয়েছে তা দেশবাসী জানেন। তাঁর এ তেত্রিশ বছরের সামরিক জীবনীতে অসীম বীরত্ব ও সাহসিকতার জন্য দেশে বিদেশে অনেক সম্মাননা পান যার মধ্যে উল্লেখযোগ্যহলো: নিরাপত্তা পদক, দাবানল পদক,১৯৯১ সংসদ নির্বাচন পদক, গোল্ডেন জুবলী পদক, ১৯৯৮ মহাপ্লাবনপদক জেষ্ঠ্য পদক ১ ইত্যাদি । আমি ও বাবার আদর্শ বুকে ধারণ করে দেশের মানুষের জন্য কিছু করতে চাই।
আরও পড়ুন : সীমানা পুনর্নির্ধারণ করে গেজেট
তিনি বলেন, আপনারা আরো জেনে থাকবেন আমার প্রাণ প্রিয় মাতাও দেশের জন্য শহিদ হয়েছেন। এই দেশের প্রতিটি মানুষ জানে আমার পরিবারকে দেশের সার্বভৌমত্ব ও শান্তি রক্ষায় কতটা ত্যাগ স্বীকার করতে হয়েছে। আজ আমি মা-বাবা হারিয়ে এতিম। প্রিয় দেশবাসী আমার অভিভাবক আজ আপনারাই। একজন চৌকস শহিদ সেনা পরিবারের সদস্য হওয়া সত্ত্বেও একসময় আমাকে এই ঢাকা-১৭ আসনের অলিতে গলিতে ঘুপচি ঘরে ঘুমাতে হয়েছে। দিনের পর দিন অনাহারে অর্ধাহারে থাকতে হয়েছে। সহ্য করতে হয়েছে অবর্ণনীয় কষ্ট।
সেজন্য আমি মানুষের কষ্টটা খুব কাছ থেকে দেখেছি। বিশেষ করে আমাকে দেখতে হয়েছে রঙচঙে ঝকঝকে গুলশান-বনানীর সুরম্য অট্টালিকার পাশে শীর্ণকায় কড়াইল, মাটিকাটা,মানিকদি, ভাষানটেক,বালুঘাট, বারনটেক,বাউনিয়া বাসীদের জীবন। সেখানে না ছিল জীবনের আনন্দ আর না ছিল দু’চোখে স্বপ্ন দেখার সাহস, যোগ করেন রাকিন আহমেদ।
আরও পড়ুন : বর্তমানে বেশি লোডশেডিং চলছে
তিনি আরো বলেন, আমি ব্যথিত হয়েছি হতাশায় ভুগেছি দিনের পর দিন। একসময় ভেবেছিলাম আর হয়তো বাঁচতেই পারবো না। তারপরও আল্লাহ পাক আমাকে বাঁচিয়ে রেখেছেন। আমি মনে করি আমি বেঁচে আছি এই আপনাদেরই দোয়ায়। আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি দেশের জন্য দেশের মানুষের জন্য আমাকে কিছু করতে হবে। আপনারা জানেন আমি ঢাকা-১৭ আসনের ,আমি কোন বহিরাগত প্রার্থী নই। আমি এ মাটিরই সন্তান। আমি ক্যান্টনমেন্টেরই সন্তান। কান্টনমেন্টেই আমার শৈশব, যৌবন, আনন্দ এবং বিষাদের গল্পের স্বাক্ষী। এই এলাকার প্রতিটি মানুষ ও অলিগলি আমাকে ভীষণভাবে টানে। আমি প্রয়াত শহিদ পিতার আদর্শ বুকে নিয়ে সত্যিই আপনাদের জন্য কিছু করতে চাই ৷ আমি শ্রদ্ধেয় পিতার অসম্পূর্ণ কাজ এবং স্বপ্নগুলো বাস্তবায়ন করতে চাই।
সমাজসেবক রাকিন আহমেদ বলেন, আপনারা যদি সুযোগ দেন তবে আমাকে আপনাদের নেতা নয় সন্তান হিসেবে, ভাই হিসেবে, বন্ধু হিসেবে আমাকে সব সময় পাবেন। আমার আর বিশেষ কিছু চাইবার নাই আপনাদের কাছে৷ আপনারা একগুন ভালোবাসা দিলে আমি তা আপনাদের শতগুন করে ফেরত দিবো ইন শা আল্লাহ্। আপনারা আমার মরহুম পিতা-মাতা এবং এই দেশবাসীর জন্য দোয়া করবেন। যেন মহান আল্লাহ্ পাক আমাকে দেশের জন্য, দেশের মানুষের জন্য, আপনাদের জন্য কবুল করেন।
তিনি বলেন, আপনারা যদি আপনাদের মূল্যবান ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেন তবে আমি আপনাদের শিক্ষিত, প্রযুক্তি নির্ভর স্মার্ট ঢাকা-১৭ উপহার দিতে চাই। ঢাকা-১৭ তে কম-বেশি রাস্তাঘাট উন্নত। তাই আমি এবার নজর দিতে চাই অপেক্ষাকৃত পিছিয়ে পড়া মানুষদের খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা এবং চিকিৎসায়। উন্নত নগরের পাশে ধুঁকে মরা অসহায় মানুষের কি কষ্ট আমি তা একটু বুক মিলিয়ে বুঝতে চাই।
আরও পড়ুন : বিএনপি আর ক্ষমতায় আসবে না
তিনি আরো বলেন, এছাড়াও জলাবদ্ধতা, পানি ও গ্যাসের সমস্যা নিরসন, পরিবেশগত সমস্যা নিরসন, মশক নিধন,পিছিয়ে পড়া নারী-পুরুষের শতভাগ শিক্ষা, উদ্যোক্তা তৈরী, স্মার্ট নেটওয়ার্কিং, ভিক্ষুকের বিকল্প কর্মসংস্থান, যানজট নিরসন প্রভৃতি বিষয়ে মনোযোগী হতে চাই। আমি সেনা অফিসার সন্তান এবং ক্যান্টনমেন্টের ফুল, ফল, মাটিতে বেড়ে উঠার সুবাদে বাবার দেশ ও দেশের মানুষকে নিয়েকরা বেশ কিছু প্ল্যান, বেশ কিছু স্বপ্ন আমি খুব কাছ থেকে দেখেছি। আমি সেসব ঢাকা-১৭তে প্রয়োগ করে আপনাদের জন্য কিছু করতে চাই।
রাকিন আহমেদ ভূঁইয়া বলেন, আমার বাবার অসমাপ্ত কাজগুলো করতে চাই। আপনারা আমাকে সুযোগ দিন, সমর্থন দিন, আমার পাশে দাঁড়ান। কথা দিলাম আপনার সেবক হয়ে থাকবো আমৃত্যু ইন শা আল্লাহ্।
প্রসঙ্গত, চিত্রনায়ক আকবর হোসেন পাঠান ফারুকের মৃত্যুতে শূন্য হওয়া ঢাকা-১৭ আসনে উপনির্বাচন হবে ১৭ জুলাই।
সান নিউজ/এনকে/জেএইচ