নিজস্ব প্রতিবেদক:
রংপুর: ত্যাগী নেতাকর্মীদের অবমূল্যায়ন, অযোগ্যদের নিয়ে কমিটি গঠন ও এক ইউনিয়ন থেকে আহবায়ক-সদস্য সচিবসহ অধিকাংশ পদ দেওয়ার অভিযোগে রংপুর সদর উপজেলা ছাত্রদলের নতুন কমিটি নিয়ে তৃণমূলে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। এ নিয়ে উপজেলা ছাত্রদলসহ বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা মিশ্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। অনেকেই এই কমিটিকে এক ইউনিয়নভিত্তিক উপজেলা কমিটি ও হাস্যকর বলে মন্তব্য করেছেন। অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করে এই কমিটিকে পকেট কমিটি হিসাবে আখ্যায়িত করেছেন।
ছাত্রদলের ত্যাগী নেতাকর্মী দাবিদাররা অবিলম্বে এই কমিটি বাতিল করে সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন করে কমিটি গঠনের দাবি জানান।
তৃণমূলের নেতাকর্মীদের অভিযোগ, উপজেলার ৫টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত হলেও সদ্য ঘোষিত কমিটিতে একটি ইউনিয়নকে প্রধান্য দেয়া হয়েছে। আহবায়ক, নয়জন যুগ্ম আহবায়কের মধ্যে ছয়জন, সদস্য সচিবসহ ২০ সদস্যের কমিটির অধিকাংশেরই বাড়ি উপজেলার সদ্যপুষ্করনী পালিচড়া ইউনিয়নে। আর বাকি চার ইউনিয়ন মিলে হাতে গোনা কয়েকটি পদ দেওয়া হয়েছে।
তারা বলেন, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি ও এক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের যোগসাজশে তাদের আত্মীয়-স্বজন ও অযোগ্যদের দিয়ে সদর উপজেলার পকেট কমিটি গঠন করা হয়েছে। যা নিয়ে ইতোমধ্যেই সমালোচনার ঝড় উঠেছে। এই কমিটি দ্রুত বাতিল না করা হলে অনেকেই স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করবেন।
সূত্রে জানা গেছে, রংপুর সদর উপজেলা ছাত্রদলের ঘোষিত কমিটির আহবায়ক মামুনুর রশিদের বাড়ি উপজেলার সদ্যপুষ্করুনী ইউনিয়নের কেশবপুর গ্রামে, সদস্য সচিব আব্দুর রাফির বাড়ি পালিচড়া কেরানীপাড়া এবং একই ইউনিয়নের বকশিপড়ায় যুগ্ম আহবায়ক ওয়ালিদ মিয়া, মাধবপুরে মিঠুন মিয়া ও পালিচড়ায় আরেক যুগ্ম আহবায়ক আবু সূফিয়ানের বাড়ি। আরও ৩ জন যুগ্ম আহবায়কসহ কমিটির অধিকাংশ সদস্যের বাড়িও ওই ইউনিয়নে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সদর উপজেলা ছাত্রদলের কয়েকজন নেতাকর্মীর অভিযোগ, যাদের ইউনিয়ন-ওয়ার্ড পর্যায়ে নেতৃত্ব দেওয়ার যোগ্যতা নেই, তাদের উপজেলা কমিটিতে গুরুত্বপূর্ণ পদ দেওয়া হয়েছে। সদ্য ঘোষিত কমিটির অনেকের বাবাসহ পরিবারের সদস্যরা ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত।
কয়েকজন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘ছাত্রদলের রাজনীতি করতে গিয়ে অনেক নির্যাতনের শিকার হয়েছি। নিজের ও পরিবারের অর্থিক ক্ষতি করেছি। দলীয় সভা-সমাবেশে নিয়মিত উপস্থিত ছিলাম। অথচ আমাদের মূল্যায়ন করা হলো না। সদর উপজেলায় যে কমিটি করা হয়েছে, তাতে অনেক যুগ্ম আহবায়ক আছেন, সদস্য আছেন, যারা জীবনে কখনো বিএনপি-ছাত্রদলের দলীয় কার্যালয়ে যাননি। এমনকি চেনেনও না। তারা কিভাবে এত বড় পদ পায় তা বোধ্যগম্য নয়।’
সদ্য গঠিত সদর উপজেলা ছাত্রদলের আহবায়ক মামুনুর রশিদ এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
রংপুর জেলা ছাত্রদলের সভাপতি মনিরুজ্জামান হিজবুল বলেন, যারা অতীতে দলের জন্য কাজ করেছেন, তাদের নিয়েই কমিটি গঠিত হয়েছে।
সান নিউজ/ এআর