নিজস্ব প্রতিনিধি:
ফরিদপুর: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে ফরিদপুরের ভাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সফিকুর রহমানের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছে উপজেলা আওয়ামী লীগ।
বুধবার (১২ আগস্ট) বিকেল ৫টার দিকে ফরিদপুর প্রেসক্লাব মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে ভাঙ্গা পৌর আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি এমদাদুল হকের লিখিত বক্তব্য পাঠ করে শোনান উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আকরামুজ্জামান।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ভাঙ্গা থানার ওসি সফিকুর রহমান যোগদানের পর উপজেলা আওয়ামী লীগসহ সকল অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন মিথ্যা অজুহাতে থানায় এনে শারীরিক অত্যাচার, নির্যাতন করে টাকা দাবি করেন। অন্যথায় মাদক, চাঁদাবাজি বা পেইন্ডিং মামলার আসামি হিসেবে চালান দেওয়ার ভয়-ভীতি দেখান। যারা টাকা দিতে পারেন, তাদের থানা থেকে ১৫১ বা ৩৪ ধারায় চালান করা হয়। আর যারা টাকা দিতে পারেন না, তাদের মাদক বা পেইন্ডিং মামলার আসামি হিসেবে কারাগারে যেতে হয়।
লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়, গত ২৫ জুন ওসির বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ এনে ফরিদপুরের পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন ভাঙ্গা পৌর আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি এমদাদুল হক । ওসি বার বার চাপ দেওয়ায় ওই অভিযোগ এমদাদুল প্রত্যাহার না করায় ওসির প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ মদদে গত মঙ্গলবার (১১ আগস্ট) সন্ধ্যা ৭টার দিকে এমদাদুলের ছেলে মো. রীজু মিয়াকে (৩৫) নির্মম ভাবে কুপিয়ে জখম করা হয়।
লিখিত বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রীর কাছে আহ্বান জানিয়ে বলা হয়, তিনি যেন ভাঙ্গা থানার ওসির অপকর্মের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিয়ে নিরীহ জনগণকে রক্ষা করে এবং বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা তথা জননেত্রীর হাতকে শক্তিশালী করার সহযোগিতা করতে সাহায্য করেন।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাবেক কেন্দ্রীয় নেতা বিপুল ঘোষ, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মাসুদ হোসেন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ঝর্ণা হাসান, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক আইভি মাসুদ প্রমুখ।
বিপুল ঘোষ ও সৈয়দ মাসুদ জানান, অভিযোগটি ভাঙ্গার ওসিকে নিয়ে। ভাঙ্গা উপজেলা আওয়ামী লীগের এ অভিযোগের সঙ্গে তারা (জেলা আওয়ামী লীগ) একমত পোষণ করেন বলেই সশরীরে এ সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত হয়েছেন।
অভিযোগ অস্বীকার করে ভাঙ্গা থানার ওসি সফিকুর রহমান দাবি করেন, অনেক নেতা আগে থানার দালালি করতেন। তিনি আসার পর তা বন্ধ করে দেওয়ায় ওইসব নেতারা তার উপর ক্ষুব্ধ হয়েছেন। তিনি বলেন, তার বিরুদ্ধে এ জাতীয় অভিযোগ স্বরাস্ট্র মন্ত্রণালয় ও আইজিপির কাছেও দেওয়া হয়েছে। সে অভিযোগ পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) ও পুলিশে ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) দিয়ে তদন্ত করে কোনো সত্যতা পাওয়া যায়নি।
ওসি আরও বলেন, স্থানীয় বিরোধের জেরে মাদকসহ একজনকে ডিবি পুলিশ গ্রেপ্তার করায় রীজুর ওপর হামলা হয়েছে। এ হামলার ব্যাপারে বুধবার (১২ আগস্ট) বিকেলে পর্যন্ত থানায় কোনো লিখিত অভিযোগ না দেওয়া হলেও পুলিশ হামলায় জড়িত সাতজনকে আটক করেছে।
ওসি বলেন, তার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা সঠিক নয়। তিনি আসার পর এ উপজেলার আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। মাদক, চুরি ডাকাতি কমে গেছে। ফলে থানায়ও মামলার সংখ্যা কমে গেছে।
ফরিদপুরের পুলিশ সুপার মো. আলিমুজ্জামান বলেন, ভাঙ্গা থানার ওসির বিরুদ্ধে তাকে ও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত বিভিন্ন অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে যেসব অভিযোগ আমলযোগ্য তা নিয়ে স্থানীয় পর্যায়ে ও পুলিশ সদর দপ্তরের তদন্ত চলছে। তদন্তে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে ওসির বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সান নিউজ/ এআর