স্টাফ রিপোর্টার : বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু পেশাজীবীসহ দেশের সব মানুষকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, বর্তমান সরকারকে হঠাতে না পারলে, তারা অবৈধভাবে ক্ষমতায় থাকলে আগামী দিনে দেশের স্বাধীনতা আরও বিপন্ন হবে।
আরও পড়ুন : ব্যালট ভোটগ্রহণে বিএনপির আগ্রহ নেই
মঙ্গলবার (৪ এপ্রিল) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বাংলাদেশ ইয়ূথ ফোরামের উদ্যোগে ডিজিটাল নিরাপত্তা কালো আইন বাতিল, প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমানের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক মামলা প্রত্যাহার, দিগন্ত টিভি, চ্যানেল ওয়ান, ইসলামিক টিভি, দৈনিক আমার দেশ, দৈনিক দিনকালসহ সব বন্ধ গণমাধ্যম খুলে দেওয়ার দাবিতে এক মানববন্ধনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
দুদু বলেন, এই সরকার দেশে ভয়ের সংস্কৃতি তৈরি করতে চাচ্ছে। তারা দেশের জনগণকে ভয় দেখিয়ে ঘরে রাখার পাশাপাশি সাংবাদিকদেরকে ভয় দেখিয়ে তাদের লেখার, বলার স্বাধীনতা কেড়ে নিতে চাচ্ছে। কর্তৃতবাদী, স্বৈরাচারী সরকারের কাছ থেকে গণতান্ত্রিক কোন কিছুর আশা করা যায় না।
আরও পড়ুন : সরকারকে কাঁদতে কাঁদতে বাড়ি যেতে হবে
অন্ধকার যুগ আবার ফিরে এসেছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, গত ১০ থেকে ১৫ বছর দেশে একটি শ্বাসরুদ্ধ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। শুধু মতিউর রহমানের ওপর প্রথম আক্রমণ আসে নাই। মাহমুদুর রহমানের ওপর আক্রমণ এসেছে। বিশিষ্ট বুদ্ধিজীবী সাংবাদিক শফিক রেহমানের ওপর আক্রমণ এসেছে।
তিনি এমন আক্রমণের শিকার হয়েছেন যে এই বৃদ্ধ বয়সে তাকে দেশ ছাড়তে হয়েছে। এছাড়াও কয়েকটি গণমাধ্যম যেমন-আমার দেশ, দিনকাল, দিগন্ত টিভি, ইসলামী টিভি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এসব কার্যক্রম দেখলে সেই বাকশালের কথা মনে পড়ে যায়। যখন চারটি পত্রিকা রেখে বাকি সব বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। সে সময় সব রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। এক নেতার এক দেশ করা হয়েছিল। সে ছাড়া আর কেউ নেতা হতে পারবে না। আর কোন রাজনৈতিক দল থাকবে না দেশে কোন সংবাদমাধ্যম থাকবে না। সেই অন্ধকার যুগ যেন আবার ফিরে এসেছে।
আরও পড়ুন : রাজনীতিবিদদের সম্মানে বিএনপির ইফতার আজ
ছাত্রদলের সাবেক এই সভাপতি বলেন, এই দেশ যে জন্য স্বাধীন করা হয়েছিল সবকিছু আজ পদদলিত হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যেন একটি দলের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। প্রশাসন যেন একটি দলের প্রশাসন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সারা জীবন গণতন্ত্রের পক্ষে কাজ করে এসেছে। সেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সম্মতি স্বৈরতন্ত্রের পক্ষ নিয়েছে। আমাদের সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব তাদের সংগঠন এই স্বৈরতন্ত্রের সরকারের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে, বিবৃতি দিচ্ছে।
তিনি বলেন, জাতিসংঘ থেকে বলা হয়েছে ডিজিটাল আইন বাতিল করুন। আর আইনমন্ত্রী বলেছেন, এটা বাতিল করার প্রয়োজন নেই। মানুষ খেতে পাচ্ছে না, কাজ নাই, চাকরি নাই। আর এই কথা মানুষ বলতে পারবে না। আর বললেও সাংবাদিকরা লিখতে পারবে না। কি ভয়ংকর ব্যাপার!
আরও পড়ুন : কাউলিবেড়ায় আপনার সঙ্গে খেলা হবে
দুদু বলেন, প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান, আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমানসহ যেসব সাংবাদিক ও সম্পাদকের ওপর মামলা করা হয়েছে সব মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছি। এর পাশাপাশি ডিজিটাল আইনের এ টু জেড বাতিলের দাবি জানাচ্ছি। সময় আছে, এসব দাবি মেনে নিন।
দাবি মেনে না নিলে যখন আন্দোলন শুরু হবে, এসব কালাকানুন আপনাদের বাতিল করা লাগবে না। আপনারা নিজেরাই পুরো বাতিল হয়ে যাবেন। আপনাদের পালানো ছাড়া কোনো পথ থাকবে না।
আরও পড়ুন : আমাদের কোনো ছন্দপতন নেই
বাংলাদেশ ইয়ূথ ফোরামের সভাপতি সাইদুর রহমানের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে বিএনপির শিশু বিষয়ক সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ, সাংবাদিক নেতা কাদের গণি চৌধুরী, বাছির জামাল, রাশিদুল হক প্রমুখ বক্তব্য দেন।
সান নিউজ/এইচএন