নিজস্ব প্রতিনিধি:
ফরিদপুর: ফরিদপুর সদর উপজেলার ডিক্রিরচর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান স্থানীয় যুবলীগের আহবায়ক মো. মেহেদী হাসান মিন্টুর বিরুদ্ধে নানা ষড়যন্ত্র ও মিথ্যাচারের অভিযোগ তুলে এর প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছেন তার সমর্থক এলাকাবাসী ও আওয়ামী লীগের নেতারা।
ফরিদপুরের বহুল আলোচিত দুই ভাই শহর আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন বরকত ও ফরিদপুর প্রেসক্লাবের অব্যাহতিপ্রাপ্ত সভাপতি ইমতিয়াজ হাসান রুবেলের দুই হাজার কোটি টাকা মানিলন্ডারিং মামলায় তাদেরই জবানবন্দিতে ইউপি চেয়ারম্যান মিন্টুর নাম এসেছে। একটি জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় বলা হয়েছে, গ্রেপ্তারকৃত বরকত-রুবেল আদালতে দেওয়া ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক ওই জবানবন্দিতে তাদের ৬০ জন সহযোগীর নাম প্রকাশ করেছেন। এর মধ্যে ১৬ জন গ্রেপ্তার হলেও মিন্টুসহ বাকি ৪৪ জন এখনো ধরাছোয়ার বাইরে। মিন্টু ও তার সমর্থকরা বলছেন, এটি তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ও এরই অংশ হচ্ছে বরকত-রুবেলের এসব মিথ্যাচার।
বৃহস্পতিবার (৬ আগস্ট) বিকেল ৫টায় ইউনিয়নের সিঅ্যান্ডবি ঘাট আইজুদ্দিন মাতুব্বরের ডাঙ্গী এলাকায় মানববন্ধন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করে ইউপি চেয়ারম্যান মিন্টু নিজেও ওই দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যাচারের অভিযোগ আনেন।
মানববন্ধনে বক্তব্য দেন ডিক্রিরচর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ফজলুর রহমান ফজল, ওয়ার্ড আওয়ামী সাধারণ সম্পাদক হায়দার খান, ইউনিয়ন শ্রমিকলীগের সভাপতি মো. দেলোয়ার হোসেন, যুবলীগ নেতা আলমগীর ফকির ও ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব মরহুম শামসুদ্দিন মোল্যার পুত্র ছাত্রলীগ নেতা শিপন মোল্যা প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, এই অঞ্চলে মিন্টু চেয়ারম্যানের পরিবার ৫০ বছরেরও বেশি সময় ধরে আওয়ামী লীগের লড়াই-সংগ্রামে রয়েছে। বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে হামলা, মামলা, কারাভোগের শিকার হয়েছে। আর এখন আওয়ামী লীগ সরকার আমলেও হাইব্রিড দ্বারা লাঞ্ছিত, শোষিত। নেত্রীর দেওয়া মনোনয়নপত্র ছিনতাই করে নেওয়া হয় মিন্টু ফকিরের কাছ থেকে। তারপরও এলাকার মানুষ ব্যালটের মাধ্যমে সেই অপমানের জবাব দিয়েছেন মিন্টুকে বিপুল ভোটে চেয়ারম্যান নির্বাচিত করে।
মতবিনিময় সভায় ইউপি চেয়ারম্যান মিন্টু বলেন, ‘আমি এক নির্যাতিত আওয়ামী লীগ পরিবারের সন্তান। বিএনপি-জামায়াত আমলেও আমাদের বিরুদ্ধে অত্যাচার, জুলুম চলেছে। জীবন বাঁচাতে দেশ ছেড়ে পালিয়েছি তখন। আজ দল ক্ষমতায় থাকার সময়ও নির্যাতিত হচ্ছি। এলাকার মানুষের আস্থা আর ভালোবাসায় বেঁচে আছি। রুবেল-বরকত কিছুদিন আগেও রাজনৈতিকভাবে আমার বিরুদ্ধে ছিলেন। ষড়যন্ত্র করেছেন একের পর এক। আমাকে জিম্মি করে আমার ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান থেকে ২৫ লাখ টাকা চাঁদা নিয়েছেন ফরিদপুর প্রেসক্লাবের কথা বলে। এখন আমার বিরুদ্ধে যে বক্তব্য দিয়েছেন, তা সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট ও ষড়যন্ত্রমূলক। আমি তাদের বিরুদ্ধে মামলা করবো।’
এতোদিন কথা বলেননি কেন? উত্তরে তিনি বলেন, ‘আপনারাতো দেখেছেন, লিখেছেন, হাতুড়ি বাহিনী, হেলমেট বাহিনীর নির্মম অত্যাচারের কথা। জীবনের ভয়ে কথা বলতে পারিনি সেদিন। তারপরও সাংবাদিকদের লেখার জন্য আমি ধন্যবাদ জানাই। ধন্যবাদ জানাই দুর্নীতিবিরোধী অভিযান শুরু করার জন্য দলীয় সভানেত্রী, প্রধানমন্ত্রী, মানবতার মাতা শেখ হাসিনাকে।’
সান নিউজ/ এআর