নিনা আফরিন, পটুয়াখালী : শুক্রবার (৪ নভেম্বর) সকাল থেকে পটুয়াখালীতে বাস ধর্মঘট শুরু হয়েছে। জেলার অভ্যন্তরীণ সব রুটে যাত্রীবাহী বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। চলছে না দূরপাল্লার কোনো বাসও।
আরও পড়ুন : প্রতিহিংসা থেকেই খালেদা জিয়াকে জেলে পাঠাতে চান
বৃহস্পতিবার (৩ নভেম্বর) সন্ধ্যায় মহাসড়কে থ্রি–হুইলার ও অটোরিকশা চলাচল বন্ধের দাবিতে পটুয়াখালী জেলা বাস মালিক সমিতি বাস চলাচল বন্ধ রাখার ঘোষণা দেয় বাস মালিক সমিতি। সকাল থেকে তা ধীরে ধীরে কার্যকর হতে দেখা গেছে।
তবে বিএনপি নেতারা বলছেন, বরিশাল বিভাগীয় গণসমাবেশে পটুয়াখালী থেকে যাতে দলীয় নেতা–কর্মীরা উপস্থিতি হতে না পারেন সে জন্য ধর্মঘটের নামে বাস বন্ধ রাখা হয়েছে। আগেভাগেই অনেক নেতাকর্মী বরিশালে পৌঁছে গেছেন বলে দাবি করেছেন বিএনপি ।
সরেজমিন পটুয়াখালী বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে দেখা যায়, অভ্যন্তরীণ রুটের বাসগুলো বাস টার্মিনালে সারিবদ্ধভাবে সাজিয়ে রাখা হয়েছে। বাসচালক ও শ্রমিকদের তেমন কারো দেখা মিলছে না । টার্মিনালে দূরপাল্লার বাস কাউন্টারগুলোও বন্ধ রয়েছে।
আরও পড়ুন : আ’লীগের নেতারা কেউ পালায় না
বাস কাউন্টারে দায়িত্বে থাকা একজন নাম প্রকাশ না শর্তে বলেন, আগামীকাল শনিবার (৫ নভেম্বর) বরিশালে সমাবেশ, তাই শুক্রবার ও শনিবার বাস বন্ধ থাকবে।
এদিকে বাস বন্ধ থাকায় মহাসড়ক জুড়ে দেখা যায়, তিন চাকার কিছু অটোরিকশা চলাচল করছে। ভাড়ায়চালিত মোটরসাইকেলগুলো অধিক ভাড়ায় যাত্রী নিয়ে চলাচল করছে।
সুদিপ কুমার(৩ ৩ ) নামের একজন পর্যটক জানান,ঢাকা থেকে পটুয়াখালী পর্যন্ত এসেছি লঞ্চে। ভেবেছিলাম পটুয়াখালীর সৌন্দর্য দেখে বাসে করে কুয়াকাটা যাবো। কিন্তু বাস স্টান্ড এসে শুনি বাস ধর্মঘট চলছে । এখন বেশি টাকা দিয়ে ভাড়ায়চালিত মোটরসাইকেলে কুয়াকাটা যেতে হচ্ছে।
আরও পড়ুন : বাড়াবাড়ি করলে খালেদাকে জেলে পাঠাবো
এদিকে বাস ধর্মঘটের খবরে পর্যটনকেন্দ্র কুয়াকাটায় পর্যটকদের আগমন কমে গেছে।
কুয়াকাটা হোটেল মোটেল ওনার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মোতালেব শরীফ জানান , কুয়াকাটা হোটেল মোটেলের অনেক বুকিং বাতিল করা হয়েছে । এ ছাড়া তাঁরা হোটেলের পক্ষ থেকে বুকিং করা অনেক পর্যটকদেরও ধর্মঘটের বিষয়টি জানিয়ে দিয়েছেন।
পটুয়াখালী জেলা বাস মালিক সমিতির সভাপতি রিয়াজউদ্দিন মৃধা জানান, মহাসড়কে থ্রি–হুইলার চলাচল করায় দুর্ঘটনা ও প্রাণহানির ঘটনাও ঘটে। জেলা বাস মালিক সমিতির পক্ষ থেকে মহাসড়কে অবৈধ এই বিপজ্জনক যান চলাচল বন্ধের দাবি জানিয়ে আসছেন।
আরও পড়ুন : সেই ছাত্রলীগ নেত্রী বহিষ্কার
এ নিয়ে উচ্চ আদালতে নিষেধাজ্ঞ রয়েছে। মহাসড়কগুলোতে দুর্ঘটনার জন্য এ থ্রি-হুইলার অনেকাংশে দায়ী। এই অবৈধ যান চলাচল বন্ধের দাবিতে এই ধর্মঘট কর্মসূচি।
পটুয়াখালী জেলা বিএনপির সদস্যসচিব শ্রেহাংশু সরকার কুট্টি মুঠোফোনে জানান, বিএনপির সমাবেশে দলীয় নেতা–কর্মীদের উপস্থিতি ঠেকাতে এই রকম বাস ধর্মঘট ডাকা হবে বলে মনে করা হচ্ছিল। খুলনাসহ বিভাগীয় শহরগুলোর বিএনপির সমাবেশের আগেও এভাবে বাস বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল।
বাস বন্ধের বিষয়টি আগেই চিন্তা করে গতকাল সকাল থেকে নেতা–কর্মীরা বরিশালের পথে রওনা হয়েছেন। পথে নানা ধরনের বাধার মুখে পড়তে হতে পারেন এই আশঙ্কায় দলীয় নেতা–কর্মীরা ছোট ছোট দলে বিভক্ত হয়ে বরিশালে পৌঁছাতে শুরু করেছে।
সান নিউজ/এইচএন