সান নিউজ ডেস্ক: রংপুরে বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশ ঘিরে গণপরিবহন বন্ধ থাকায় আগে ভাগেই সমাবেশস্থলে আসতে শুরু করেছেন বিভিন্ন জেলার নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষ। বাস বন্ধ থাকায় বিকল্প উপায়ে রংপুরে আসছেন তারা। কেউ মাইলের পর মাইল হেঁটে, কেউ ব্যক্তিগত গাড়ি, রিকশা, অটোরিকশা কিংবা মোটরসাইকেলে করে সমাবেশস্থলে আসছেন। পরিস্থিতি দেখেই বোঝা যাচ্ছে ৯ বছর পর বিএনপি এতো বড় জমায়েত করতে যাচ্ছে।
আরও পড়ুন: গণধর্ষণ মামলার আসামি গ্রেফতার
শনিবার (২৯ অক্টোবর) ভোর থেকে নেতাকর্মীরা মিছিল নিয়ে হেঁটে শহরের কালেক্টরেট ঈদগাহ মাঠের সমাবেশস্থলে আসতে শুরু করেন। ইতোমধ্যে মঞ্চে মাইক সংযোগ দেওয়াসহ যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। দ্রব্যমূল্য, লোডশেডিং, দুর্নীতি, লুটপাট, ভোটাধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা, বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তিসহ নয়টি দাবিতে এই সমাবেশের ডাক দিয়েছে বিএনপি। এর আগে চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ ও খুলনায় বিভাগীয় গণসমাবেশ করেছে তারা।
এর আগে ২০১৩ সালে রংপুরে বড় সমাবেশ করে বিএনপি। সেই সমাবেশে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উপস্থিত ছিলেন। তবে আজকের সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে থাকবেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, বিশেষ অতিথি স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু। তারা রাতেই রংপুরে পৌঁছেছেন।
আরও পড়ুন: ক্যাটরিনা কোনো কাজই পারে না
সমাবেশের আগে শুক্রবার ভোর থেকে চলছে পরিবহন মালিক সমিতির ডাকা বাস ধর্মঘট। শনিবার দ্বিতীয় দিনের মতো ঢাকাগামী বাসসহ আন্তঃজেলায় কোনো বাস চলছে না; বন্ধ রয়েছে ট্রাক, মিনিবাস, মাইক্রোবাসও। এর ফলে রংপুরের সঙ্গে সারাদেশের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।
ধর্মঘট চললেও রংপুর বিভাগের আট জেলা বিশেষ করে ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড়, দিনাজপুর, গাইবান্ধা ও লালমনিরহাটের বিভিন্ন উপজেলা থেকে ট্রাক-বাস ভাড়া করে এবং ট্রেনে করে রংপুরে এসে পৌঁছেছেন বিএনপির হাজার হাজার নেতাকর্মী। সেখানে নেতাকর্মীদের জন্য নগরীর ২০টি স্কুল মাঠে অস্থায়ী প্যান্ডেল তৈরি করা হয়েছে। এসব প্যান্ডেলে অবস্থান করছেন দলটির কয়েক হাজার নেতাকর্মী।
আরও পড়ুন: ‘জেলহত্যা দিবস’ রাষ্ট্রীয়ভাবে পালনের দাবি
সমাবেশের সমন্বয়কারী ও বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুল হাবিব দুলু বলেন, ‘সরকার আমাদের সমাবেশ নিয়ে নানা ষড়যন্ত্র করছে। আমাদের নেতাকর্মীদের বাধা দেওয়া হচ্ছে। পরিবহন ধর্মঘটের নামে দেশের মানুষকে হয়রানি করছে।’
‘কোন বাধা আমাদের সমাবেশ ঠেকাতে পারবে না’ উল্লেখ করে দুলু বলেন, ‘মানুষ যে যেভাবে পারছে, সমাবেশে আসছে। দেশের মানুষ তাদের দাবি আদায়ের জন্য এই সমাবেশে তারা যোগ দিচ্ছে।’
আরও পড়ুন: ন্যান্সি পেলোসির বাড়িতে হামলা
সমাবেশের প্রধান সমন্বয়কারী ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেন, ‘সরকার গণপরিবহন বন্ধ করে দেয়ায় এখন আমাদের সমাবেশ ২ দিন হচ্ছে। শুক্রবার থেকেই সমাবেশ শুরু হয়ে গেছে।’ এ সময় তিনি কুড়িগ্রাম-রংপুর মহাসড়ক ও দিনাজপুর-রংপুর মহাসড়কসহ বিভিন্ন আঞ্চলিক সড়কে বিএনপির নেতাকর্মীদের বাধা দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন।
রংপুর মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক শামসুজ্জামান সামু বলেন, ‘আমরা শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করতে চাই। সরকার আমাদের স্বাভাবিকভাবে সমাবেশ সফল করতে দেবে না। আমরা আমাদের মতো করে প্রস্ততি নিয়েছি। গত রাতেই রংপুর শহর লোকে লোকারণ্য হয়ে গেছে।’
সান নিউজ/কেএমএল