সান নিউজ ডেস্ক : সরকার প্রধানের নয়াদিল্লি সফর ইস্যু নিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফর প্রসঙ্গে কিছু বলতে চাই না। কারণ আমাদের অভিজ্ঞতা এত তিক্ত, হতাশ হওয়ার মতো। প্রত্যেকবার দেখেছি প্রধানমন্ত্রী ভারতকে দিয়ে এসেছেন কিন্তু নিয়ে আসেননি।’
আরও পড়ুন : দুই বাসের সংঘর্ষে নিহত বেড়ে ৯
মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা প্রত্যেকবার আশা করেছি যে, এবার হয়তো প্রধানমন্ত্রী আমাদের জন্য কিছু নিয়ে আসবেন। দেখেছি তিনি দিয়ে এসেছেন কিন্তু নিয়ে আসেননি। আগে তিনি ঘুরে কী নিয়ে আসেন দেখে তারপর মন্তব্য করব।
সোমবার (৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে সাবেক অর্থমন্ত্রী এম সাইফুর রহমানের ১৩তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে সাইফুর রহমান স্মৃতি পাঠাগার আয়োজিত স্মরণ সভায় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ’৭৫ সালে যে রাজনৈতিক পট পরিবর্তন হয়েছিল, তখন সেটা ছিল সমাজতান্ত্রিক অর্থনীতি। যারা (আওয়ামী লীগ) সমাজতান্ত্রিক অর্থনীতিতে বিশ্বাস করত না তখন তারা সমাজতান্ত্রিক অর্থনীতি প্রতিষ্ঠার কথা বললেন।
আরও পড়ুন : জনপ্রিয়তায় ভীত হয়ে পড়েছে সরকার
তারপরে সমাজতান্ত্রিক অর্থনীতির কোনো কাঠামোই তৈরি হলো না। যেটা তৈরি হলো সেটা লুটপাটের অর্থনীতি। ৭২ থেকে ৭৫ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ছিল সম্পূর্ণ লুটপাটের অর্থনীতি।
তিনি আরও বলেন, এখনো একই অবস্থা চলছে প্রত্যেকটি ক্ষেত্রে। রাস্তা নির্মাণ হচ্ছে, সেতু নির্মাণ হচ্ছে; যে সেতুটা এক বছরে নির্মাণ করা সম্ভব সেটা করা হচ্ছে ১০ থেকে ১৫ বছরে। ঢাকা থেকে টঙ্গীর যে রাস্তা সেটা আজ ১০ বছর ধরে হচ্ছে।
সাবেক অর্থমন্ত্রী প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, সাইফুর রহমান পড়াশোনা করেছিলেন হিসাববিজ্ঞানের ওপর। সে কারণেই কোনটা করলে লাভ হবে আর কোনটা করলে লাভ হবে না, আর কোনটা করলে ঋণগ্রস্ত হবে আর কোনটা করলে লাভবান হবে সেটা তিনি খুব ভালো করে জানতেন।
আরও পড়ুন : ভারত যাওয়া হলো না পররাষ্ট্রমন্ত্রীর
সেই কারণে তিনি অর্থ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নিয়েছিলেন। যে কাজটা দেশের জন্য ভালো মনে করতেন তিনি সেটাই করতেন। আর সেই কাজটা করার জন্য যা যা করা দরকার ছিল তিনি তাই করতেন।
রিজার্ভ-জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধিসহ সঙ্কটের প্রসঙ্গ টেনে বিএনপি মহাসচিব বলেন, যে কাজটা দশ হাজার টাকায় হবে সেটা তারা পঞ্চাশ হাজার টাকা খরচ করছে। বাকি চল্লিশ হাজার টাকা তারা (সরকার) নিজেরা ভাগ করে চুরি করে খাচ্ছে।
এ সময় দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, সাইফুর রহমান একজন দেশপ্রেমিক নেতা ছিলেন, শুধু রাজনীতিবিদ ছিলেন না। আজকে যারা গায়ের জোরে ক্ষমতায় রয়েছে তারা ইভিএমের মাধ্যমে আবার ক্ষমতায় যাওয়ার চেষ্টা করছে। তাদের উদ্দেশ হচ্ছে নেতাদের লুট করার সুযোগ তৈরি করা, ধনী হওয়ার সুযোগ তৈরি করে দেয়া। সাইফুর রহমান ইচ্ছে করলে এই সুযোগ করে দিতে পারতেন। কিন্তু জনগণের কথা চিন্তা করে একটি লোকেরেও এই সুযোগ করে দেননি।
আরও পড়ুন : ভারত যাচ্ছে ২ হাজার ৪৫০ টন ইলিশ
তিনি আরও বলেন, আমাদের দেশ ও জাতির অধঃপতন হয়েছে এই লুটেরা সরকার থেকে। ভোট ডাকাত সরকার থেকে দেশের জনগণকে রক্ষা করতে হবে। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কথা চিন্তা করে, দেশের কথা চিন্তা করে বর্তমান সরকারকে হঠাতে হলে আমাদের সকলকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। জাতীয়তাবাদী শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেনের সভাপতিত্বে এ সময় উপস্থিত ছিলেন দলের ভাইস চেয়ারম্যান ড. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমানুল্লাহ আমান, বিএনপি নেতা নাজিমুদ্দিন আলম ও কামরুজ্জামান রতন প্রমুখ।
সান নিউজ/এইচএন