সান নিউজ ডেস্ক: জামিন পেলেও মুক্তি পেলেন না ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের বহিষ্কৃত সভাপতি ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাট। সোমবার (২২ আগস্ট) রাত পর্যন্ত মুক্ত হননি তিনি। এর আগে দুপুরে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলায় সম্রাটের জামিন মঞ্জুর করেছেন আদালত। অসুস্থ বিবেচনায় আগামী ১৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তার জামিন মঞ্জুর করেন আদালত।
আরও পড়ুন: যুক্তরাষ্ট্রে সড়ক দুর্ঘটনায় ২ বাংলাদেশি নিহত
ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৬ এর বিচারক আল আসাদ মো. আসিফুজ্জামান শুনানি শেষে ১০ হাজার টাকা মুচলেকায় তার জামিন মঞ্জুর করেন। সম্রাটের বিরুদ্ধে করা চার মামলায় এর আগে তিন মামলায় জামিনে থাকায় তার মুক্তিতে কোনো বাধা ছিল না। এ দিন সকালে তাকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএসএমইউ) থেকে আদালতে হাজির করা হয়।
এর আগে ১১ আগস্ট সম্রাটের জামিন শুনানি ও মামলার চার্জগঠন শুনানির জন্য দিন ধার্য ছিল। সম্রাট অসুস্থ থাকায় কারা কর্তৃপক্ষ তাকে আদালতে না পাঠিয়ে কাস্টডি ওয়ারেন্ট (হাজতি পরোয়ানা) পাঠান। এরপর ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৬ এর বিচারক আল আসাদ মো. আসিফুজ্জামান তার জামিন শুনানি ও চার্জগঠন শুনানির জন্য ২২ আগস্ট দিন ধার্য করেন।
আরও পড়ুন : অফিস সকাল ৮টা থেকে ৩টা
গত ২১ জুন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৬ এর বিচারক আল আসাদ মো. আসিফুজ্জামানের আদালতে সম্রাটের জামিন শুনানি ও মামলার চার্জগঠন শুনানির জন্য দিন ধার্য ছিল। ওইদিনই সম্রাট অসুস্থ থাকায় কারা কর্তৃপক্ষ হাজতি পরোয়ানা পাঠালে বিচারক জামিন ও চার্জগঠন শুনানির জন্য ৬ জুলাই দিন ধার্য করেছিলেন।
গত ২৪ মে আইনজীবীর মাধ্যমে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন সম্রাট। অন্যদিকে দুদকের আইনজীবী তার জামিনের বিরোধিতা করেন। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৬ এর বিচারক আল আসাদ মো. আসিফুজ্জামান তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
আরও পড়ুন: আমরা ক্লাস ফোর-ফাইভের ছাত্র না
একই সঙ্গে জামিন শুনানির জন্য ৯ জুন দিন ধার্য করেন। সম্রাটের আইনজীবী তাকে অ্যাম্বুলেন্সে কারাগারে পাঠানোর আবেদন করেন। আদালত আইনজীবীর আবেদন নামঞ্জুর করেন। এরপর দুপুর আড়াইটার দিকে তাকে পুলিশ পিকআপে করে কেরানীগঞ্জে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়।
গত ১৮ মে দুদক এ মামলায় সম্রাটের জামিন বাতিল করেন বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ। একই সঙ্গে সাতদিনের মধ্যে তাকে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন: সন্তান জন্ম দেওয়া স্বার্থপর সিদ্ধান্ত
জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে করা মামলায় বিচারিক আদালতের দেওয়া জামিন বাতিল চেয়ে গত ১৬ মে হাইকোর্টে আবেদন করেছিল দুদক। এ মামলায় গত ১১ মে সম্রাটকে জামিন দিয়েছিলেন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৬ এর বিচারক আল আসাদ মো. আসিফুজ্জামানের আদালত।
এ মামলায় জামিন পাওয়ার আগে তার বিরুদ্ধে করা আরও তিনটি মামলায় তিনি জামিন পান। চারটি মামলার সবগুলোতে জামিন পাওয়ায় গত ১১ মে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএসএমইউ) প্রিজন সেল থেকে কারামুক্তি পান সম্রাট।
আরও পড়ুন: সঙ্কট সৃষ্টির গভীর ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে
রমনা থানায় দায়ের করা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলায় গত ১১ এপ্রিল জামিন পান সম্রাট। এর একদিন আগেই ১০ এপ্রিল অর্থপাচার ও অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ আইনের পৃথক দুটি মামলায় ঢাকার পৃথক আদালত তার জামিন মঞ্জুর করেন।
প্রসঙ্গত, সারাদেশে ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান চলাকালে ২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর সম্রাট ও তার সহযোগী তৎকালীন যুবলীগ নেতা এনামুল হক ওরফে আরমানকে কুমিল্লা থেকে গ্রেফতার করা হয়। জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ওই বছরের ১২ নভেম্বর সম্রাটের বিরুদ্ধে দুদকের করা মামলায় দুই কোটি ৯৪ লাখ ৮০ হাজার টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়। পরের বছর অর্থাৎ ২০২০ সালের ২৬ নভেম্বর এ মামলায় আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় দুদক। অভিযোগপত্রে সম্রাটের বিরুদ্ধে ২২২ কোটি ৮৮ লাখ ৬২ হাজার ৪৯৩ টাকা জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়।
সান নিউজ/কেএমএল