নিজস্ব প্রতিবেদক:
দুই আসনের উপ-নির্বাচনে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থীরা। বগুড়া-১ (সোনাতলা-সারিয়াকান্দি) আসনে সাহাদারা মান্নান ও যশোর-৬ (কেশবপুর) আসনে যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদার বিপুল ভোটে বিজয়ী হন।
সাহাদারা মান্নান এক লাখ ৪৫ হাজার ২৯৫ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী ইয়াসির রহমতুল্লাাহ ইন্তাজ ট্রাক প্রতীকে পেয়েছেন এক হাজার ৫৬৩ ভোট। জাতীয় পার্টির প্রার্থী মোকছেদুল আলম লাঙ্গল প্রতীকে ভোট পেয়েছেন ৯৬৯। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের সময়সীমা উর্ত্তীণ হওয়ার পর বিএনপির ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী এ কে এম আহসানুল তৈয়ব জাকির দলীয় সিদ্ধান্তে নির্বাচন বয়কট করেন। অন্য দুই প্রার্থী হলেন- প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক দলের (পিডিপি) মো. রনি (বাঘ) ও বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের নজরুল ইসলাম (বটগাছ)।
অন্যদিকে ১ লাখ ২৪ হাজার ৩ ভোট পেয়ে নির্বাচিত শাহীন চাকলাদারের নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির প্রার্থী আবুল হোসেন আজাদ ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ২ হাজার ১২ ভোট। তবে বিএনপি কেন্দ্রীয়ভাবে নির্বাচন বর্জন করায় মাঠে ছিলেন না আবুল হোসেন আজাদ। তিনজনের মধ্যে অন্য প্রার্থী জাতীয় পার্টির হাবিবুর রহমান লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ১ হাজার ৬৭৮।
স্বাস্থ্য সুরক্ষা মেনে স্বতঃস্ফূর্ত উপস্থিতিতে মঙ্গলবার (১৪ জুলাই) এ দুই আসনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। ভোটগণনা শেষে রাতে বেসরকারিভাবে ফল ঘোষণা করা হয়।
দুই রিটার্নিং কর্মকর্তা যথাক্রমে বগুড়া জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মাহাবুব আলম শাহ ও কেশবপুর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা বজলুর রশীদ স্ব স্ব আসনের ফল ঘোষণা করেন।
সকাল ৯টা থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হয়, চলে বিকেল ৫টা পর্যন্ত। করোনাভাইরাস সংক্রমণের মধ্যে সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা মেনে এ উপ-নির্বাচন করে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। কেন্দ্রগুলোতে কঠোর নিরাপত্তার পাশাপাশি তাই সংক্রমণ রোধে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ভোট নেওয়া হয়। কেন্দ্রে কেন্দ্রে ব্যানারসহ হ্যান্ড স্যানিটাইজার, সাবান, টিস্যু পেপার ও হাত ধোয়ার ব্যবস্থাও রাখা হয়।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনসহ টানা তিনবার নির্বাচিত বগুড়া-১ আসনের সংসদ সদস্য আবদুল মান্নান গত ১৮ জানুয়ারি মারা গেলে আসনটি শূন্য ঘোষণা করে সংসদ সচিবালয়। অন্যদিকে যশোর-৬ (কেশবপুর) আসনের সংসদ সদস্য ইসমাত আরা সাদেক গত ২১ জানুয়ারি মারা গেলে আসনটি শূন্য হয়।
এরপর গত ১৬ ফেব্রুয়ারি শূন্য দুই আসনে উপ-নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে ইসি। ভোটগ্রহণের কথা ছিল গত ২৯ মার্চ। কিন্তু করোনার কারণে ভোটের এক সপ্তাহ আগে ২১ মার্চ নির্বাচন স্থগিত করা হয়। তবে সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা হিসেবে ১৮০ দিন সময় শেষ হয়ে আসায় করোনার মধ্যেই আবার ভোটের সিদ্ধান্ত দেয় ইসি। তবে করোনার মধ্যে ভোট করায় দুই আসনেই নির্বাচন বর্জন করেছে বিএনপি।
ভোট উপলক্ষে নির্বাচনী এলাকায় সাধারণ ছুটি ও মোটরসাইকেল ছাড়াও গণপরিবহন চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি ছিল। অপরাধের বিচার কাজ সম্পন্ন করতে নিয়োগ পান মোট চারজন বিচারিক হাকিম।
বগুড়া-১ আসনে মোট ৩ লাখ ১৭ হাজার ৫৬৯ জন ভোটার ছিলেন। ভোটগ্রহণ হয়েছে ১২৩টি ভোটকেন্দ্রে। বন্যার কারণে ১৪টি ভোটকেন্দ্র অন্যত্র স্থানান্তরিত হয়।
অন্যদিকে যশোর-৬ আসনে ভোটার ছিলেন ২ লাখ ৪ হাজার ৩৯৭ জন। ৭৯টি ভোটকেন্দ্রে মোট ভোট দেন ১ লাখ ২৯ হাজার ৬৭ জন ভোটার। ভোট পড়েছে ৬৩ দশমিক ৫৭ শতাংশ।এর মধ্যে বাতিল হয়েছে ১ হাজার ৩৭৪ ভোট।
যশোর জেলা নির্বাচন অফিস সূত্র জানিয়েছে, ভোটগ্রহণ অবাধ, সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ ও নিরাপদ করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিপুল সংখ্যক সদস্য নিয়োজিত ছিল। নির্বাচনী এলাকায় ২ জন জুডিশিয়াল ও ১৪ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন করেছেন। ছয় প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন ছিল। এছাড়াও ১৮টি মোবাইল টিম ও স্ট্রাইকিং ফোর্সের ৬টি টিম নির্বাচনের মাঠে সার্বক্ষণিক করেছে। প্রতিটি কেন্দ্রে পুলিশ, আনসার-ভিডিপি সদস্যদের নিয়োজিত রাখা হয়।
সান নিউজ/ এআর