সান নিউজ ডেস্ক: বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বন্যাদুর্গত মানুষের দিকে না তাকিয়ে ‘সরকার পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী উৎসব নিয়ে ব্যস্ত।
আরও পড়ুন: মধ্যাঞ্চলে বন্যার আশঙ্কা
শনিবার (১৮ জুন) দুপুরে রাজধানীর ভাটারায় ঢাকা উত্তরের কয়েকটি ওয়ার্ড সম্মেলনে তিনি এই মন্তব্য করেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা মনে করি, এই দুঃসময়ে, এই দুর্যোগের সময়ে, জনগণের এই কষ্টের সময়ে, সরকার ব্যস্ত হয়ে আছে উৎসব নিয়ে। তারা পদ্মা ব্রিজের উদ্বোধন নিয়ে এত ব্যস্ত যে, তারা মানুষের কল্যাণের দিকে তাকানোর কোনো সময় নেই, মানুষের কষ্টের দিকে তাকানোর সময় নেই।’
তিনি বলেন, ‘আমরা দাবি করছি, বন্যা কবলিত অঞ্চলগুলোকে দুর্গত অঞ্চল হিসেবে ঘোষণা করা হোক এবং এই সব অঞ্চলের জনগণের জন্য ত্রাণের ব্যবস্থা করা হোক কোনো বিলম্ব না করে। আমরা অবিলম্বে সরকারকে বন্যা কবলিত এলাকাগুলোতে গিয়ে দুর্গত মানুষের জন্য ত্রাণের ব্যবস্থা করে এবং বন্যা যেন না হয় তার ব্যবস্থা করার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি।’
আরও পড়ুন: বন্যা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন প্রধানমন্ত্রী
বন্যা পরিস্থিতির চিত্র তুলে ধরে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সারা দেশে আজকে বন্যার ধারাল ছোবল। সিলেট, সুনামগঞ্জ থেকে শুরু করে উত্তরে লালমনিরহাট, কুড়ি্গ্রামসহ সব অঞ্চল বন্যার পানিতে ডুবে গেছে। গতকালের যে নিউজ সেই নিউজ হচ্ছে ফারাক্কার সব বাঁধ খুলে দেওয়া হয়েছে এবং ফারাক্কা বাঁধ দিয়ে পদ্মা-মেঘনা-যমুনা সব নদীর পানি এখন বাড়তে থাকবে। এদেশের মানুষকে ভাসিয়ে দেবে, তাদের বহুদিনের কষ্ট করা যে ফসল সেই ফলসকে নষ্ট করবে, তাদের বাড়ি-ঘর নষ্ট করবে, তাদের গোবাদি পশু নষ্ট করবে, তাদের সব সম্পদ ভাসিয়ে নিয়ে চলে যাবে।’
বন্যা মোকাবিলায় সরকারের ব্যর্থতার কথা তুলে ধরে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘কেন এই বন্যা? ক্লাইমেট চেঞ্জ হচ্ছে সেজন্য বন্যা আসতে পারে। কিন্তু সেই বন্যাকে মোকাবিলার জন্য বা সেই বন্যায় যাতে কম ক্ষতি হয় সেটা দেখার দায়িত্ব সরকারের। তারা গত এক যুগেও ভারতের সঙ্গে যেসব অভিন্ন নদী রয়েছে, সেই অভিন্ন নদীগুলোর পানিবন্টনের যে চুক্তি সেই চুক্তি করতে সক্ষম হয় নাই।’
তিনি বলেন, ‘আমাদেরকে বহুদিন ধরে তিস্তা নদীর পানি চুক্তির মূলা দেখানো হচ্ছে। কিন্তু তা আজ পর্যন্ত করা হয় নাই। ফারাক্কার পানি হঠাৎ করেই যে তারা (ভারত) গেইট খুলে দেয় তখন যে পানির ঢল আসে সেই ঢল সামলানো সম্ভব হয় না। আজকে সিলেট-সুনামগঞ্জ অঞ্চলে একই ঘটনাগুলো ঘটছে। আজকে এটার জন্য সম্পূর্ণভাবে এই সরকারের নতজানু পররাষ্ট্র নীতি এবং তার জনগণের প্রতি যে অবহেলা সেটাই প্রমাণ।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘বন্যা হবে না কেন? যেসব হাওর ও নদীগুলো বাঁধ এবং ব্রিজ দেওয়া হয়েছে অপরিকল্পিতভাবে। সেখানে এত দুর্নীতি হয়েছে যে, সব বাঁধ ভেঙে যাচ্ছে এবং নতুন করে যেসব রাস্তা তৈরি করা হয়েছে- তা ভেঙে যাচ্ছে। সব কিছু সয়লাব হয়ে যাচ্ছে। সেজন্য আজকে এমন একটা অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে আমাদের দেশে।’
রাজধানীর ভাটারা বাজারে কাছে ভাটারা থানা বিএনপির ওয়ার্ড সম্মেলন হয়। এই সম্মেলনের মধ্য দিয়ে উত্তর মহানগর বিএনপির ১৭, ৩৯ ও ৪০নং ওয়ার্ডের নতুন নেতৃত্ব নির্বাচন হবে।
সান নিউজ/এনকে