নিজস্ব প্রতিবেদক:
চলমান করোনা মহামারিতে উপনির্বাচনে অংশগ্রহণে আগ্রহ নেই বিএনপির। তাই আগামী ১৪ জুলাই অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া যশোর-৬ ও বগুড়া-১ আসনের উপনির্বাচন পেছানোর দাবি জানানো হবে দলটির পক্ষ থেকে। নির্বাচন কমিশন দাবি না মেনে নিলে উপনির্বাচন বর্জনও করতে পারে দলটি। তবে দলটির স্থায়ী কমিটির বৈঠকের পরে এই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানা যাবে।
রোববার (৫ জুলাই) বিকালে উপনির্বাচন অংশগ্রহণের বিষয়ে দলীয় সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠক ডাকা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘উপনির্বাচন নিয়ে দলের মধ্যে কোনও আলোচনা হয়নি। দেশে করোনা মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়ছে। এই সময় নির্বাচন!’
বৈঠকের আগে তিনি আরও বলেন, ‘বিকালে দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠক আছে। সেখানে উপনির্বাচন নিয়ে আলোচনা হতে পারে।’
বিএনপির নেতারা বলছে, করোনার কারণে এই দুটি আসনের উপনির্বাচন পেছানো হয়েছিল। আগের তুলনায় এখন দেশে করোনা সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার ঊর্ধ্বমুখী। দেশে মহামারিতে মৃত্যুর মিছিল যখন বাড়ছে তখন নির্বাচন কমিশন সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতার কারণে দেখিয়ে আবার নতুন করে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করেছে। তাহলে প্রশ্ন আসে মানুষের জন্য সংবিধান, নাকি সংবিধানের জন্য মানুষ। মানুষের জীবন বাঁচলে পরেও নির্বাচন করা যাবে। ফলে বিএনপির পক্ষ থেকে নির্বাচন পেছানোর দাবি জানানো হবে। নির্বাচন পেছানো না হলে সেক্ষেত্রে এই দুই আসনের উপনির্বাচন বর্জন করা হতে পারে। তবে বিশেষ করে বগুড়াতে বর্তমানে করোনা মাহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়েছে। সেখানকার স্থানীয় নেতাকর্মীরা নির্বাচনে অংশ নেওয়ার বিপক্ষে।
বগুড়া জেলা বিএনপির নেতৃবৃন্দদের মত, ‘উত্তরাঞ্চলের মধ্যে বগুড়ায় করোনার প্রভাব সবচেয়ে বেশি। এই সময়ে কিভাবে নির্বাচনের প্রচার-প্রচারণা করবে মানুষ? চাইলে কী কারও বাড়িতে ভোট চাইতে যেতে পারবো? আর আজ ৫ তারিখ, নির্বাচনের বাকি আছে মাত্র ৯ দিন। এই সময়ের মধ্যে দল কিভাবে নির্বাচনের প্রস্তুতি নেবে।’
শুধু তাই নয়, জেলার অনেক নেতাকর্মী করোনায় আক্রান্ত। এই জন্য নির্বাচন নিয়ে দলের নেতাকর্মীদের আগ্রহ নেই। বিষয়টি কেন্দ্রকে জানানো হয়েছে, বলেন তারা। এখন নির্বাচন নিয়ে কেন্দ্রীয় বিএনপির কী সিদ্ধান্ত নেবে তা এখনও জানা যায়নি। আজ-কালের মধ্যে কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত পাওয়া যেতে পারে বলে তারা আশা প্রকাশ করেন।
প্রসঙ্গত, গত ২৯ মার্চ যশোর-৬ এবং বগুড়া-১ আসনের উপনির্বাচন অনুষ্ঠানের কথা থাকলেও করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারণে ভোট গ্রহণের সপ্তাহখানেক আগে তা স্থগিত করা হয়। আসন দুটির মধ্যে বগুড়ার আসন শূন্য হয় ১৮ জানুয়ারি এবং যশোরের আসন শূন্য হয় ২১ জানুয়ারি। ইতোমধ্যে আসন দুটির উপনির্বাচন অনুষ্ঠানের ৯০ দিন পার হয়েছে। সংবিধান প্রদত্ত সিইসির হাতে থাকা পরবর্তী ৯০ দিন পার হবে যথাক্রমে ১৫ ও ১৮ জুলাই। এর আগে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি বগুড়া-১ ও যশোর-৬ আসনের উপনির্বাচনে একেএম আহসানুল তৈয়ব জাকির ও আবুল হোসেন আজাদকে দলীয় মনোনয়ন দিয়েছিল বিএনপি।