নিজস্ব প্রতিনিধি:
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) বর্তমান মেয়াদের নির্দিষ্ট সময় শেষে অতিরিক্ত তিন মাসও সোমবার (২২ জুন) শেষ হয়েছে। ডাকসুর সাধারণ সম্পাদক (জিএস) গোলাম রাব্বানী এদিন রাতে পদ ছাড়ার কথা জানিয়েছেন।
অন্যদিকে ডাকসুর সহ-সভাপতি (ভিপি) নুরুল হক নুর বলছেন, উপাচার্যের সিদ্ধান্তের পর পদ ছাড়বেন তিনি। তবে পরবর্তী নির্বাচন অনুষ্ঠিত না হওয়া পর্যন্ত দায়িত্বে থাকতে চান তারা দুজনই। যদিও বিষয়টি পদাধিকারবলে ডাকসুর সভাপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানের ওপর ছেড়ে দিয়েছেন তারা। তবে ভিসি বলছেন, গঠনতন্ত্রের বাইরে যাওয়ার কোনও সুযোগ নেই।
ডাকসুর গঠনতন্ত্রের ৬-এর (গ) ধারায় বলা আছে, সংসদে নির্বাচিত কার্যনির্বাহী পদাধিকারীগণ ৩৬৫ দিনের জন্য কার্যালয়ের দায়িত্ব পালন করবেন। যদি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নির্বাচন সম্পন্ন না করা যায়, তাহলে কার্যনির্বাহী পদাধিকারীরা অতিরিক্ত ৯০ দিন দায়িত্ব পালন করবেন। ওই ৯০ দিনের আগে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে নির্বাচন অনুষ্ঠানের পূর্ব পর্যন্ত তারা দায়িত্ব পালন করবেন। নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়া মাত্র পূর্বতন সংসদ স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভেঙে যাবে। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী বর্ধিত ৯০ দিন সময় পার হয়ে গেলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ওই সংসদ ভেঙে যাবে।
গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, ডাকসুর বর্তমান সংসদ আজ সোমবার (২২ জুন) স্বয়ংক্রিয়ভাবে বাতিল হয়ে যাওয়ার কথা।
তবে ডাকসু ভিপি ও জিএস জানিয়েছেন, পরবর্তী নির্বাচন পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করার প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা করতে তারা ভিসির সঙ্গে বৈঠকে বসবেন। কিন্তু শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত উপাচার্যের সঙ্গে আলোচনায় বসতে পারেননি তারা।
এ ব্যাপারে ভিপি নুর বলেন, এখনও সভাপতির সঙ্গে আমরা আলোচনায় বসিনি। রাতে বসার চেষ্টা করব। বিশ্ববিদ্যালয় যেহেতু বন্ধ ছিল, আমরা নির্দিষ্ট সময়ে দায়িত্ব পালন করতে পারিনি, আর ডাকসু সচল রাখতে পরবর্তী নির্বাচন পর্যন্ত দায়িত্বে থাকতে চাই। পদ ছাড়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আনুষ্ঠানিক কোনও আলোচনা ছাড়া পদ ছাড়বো কীভাবে? উপাচার্য যদি বলেন তাহলে ছেড়ে দেবো।
সাধারণ সম্পাদক (জিএস) গোলাম রাব্বানী জানান, নৈতিকভাবে আজই পদ ছেড়ে দেবেন তিনি। তবে পরবর্তী নির্বাচন পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করতে চান রাব্বানী। এ বিষয়টি উপাচার্যের সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করছে জানিয়ে রাব্বানী বলেন, নৈতিকভাবে আজ রাতেই পদ ছেড়ে দেবো। আমি তো জোর করে পদে থাকতে পারি না।
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, ডাকসুর গঠনতন্ত্র ও সংশ্লিষ্ট বিধিবিধান দেখেই সবকিছু করা হবে। গঠনতন্ত্রের বাইরে যাওয়ার কোনও সুযোগ নেই। ভিপি- জিএসের সঙ্গে আলোচনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি পাল্টা প্রশ্ন রেখে বলেন, ‘কীসের মিটিং?’
এদিকে ডাকসুর সহ-সাধারণ (এজিএস) সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে নিজের দায়িত্ব শেষ হওয়ার কথা জানান। পরবর্তী নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত দায়িত্বে থাকার যে দাবি ভিপি ও জিএস তুলেছেন—এ বিষয়টিকে ‘অনৈতিক’ বলে মন্তব্য করেন তিনি বলেন, ডাকসুর মেয়াদ ২২ জুন শেষ। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে পরবর্তী নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য দাবি জানাচ্ছি।