সান নিউজ ডেস্ক:
দীর্ঘ ২৮ বছর পর গত বছরের ১১ মার্চ অনুষ্ঠিত হয়েছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) নির্বাচন। আর নির্বাচিত প্রতিনিধিরা দায়িত্ব নিয়েছিলেন গত বছরের ২৩ মার্চ। সে অনুযায়ী এ বছরের ২২ মার্চ এক বছর পূর্ণ হয় ডাকসুর বর্তমান সংসদের। নির্দিষ্ট সময়ে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা না করায় গঠনতন্ত্র অনুযায়ী বর্তমান সংসদের মেয়াদ স্বয়ংক্রিয়ভাবে আরও তিন মাস অর্থাৎ ৯০ দিন বাড়ে।
গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ৯০ দিন বর্ধিত সময় অতিক্রম করার পর এ সংসদ স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভেঙে যাবে। সে হিসেবে ডাকসুর বর্তমান সংসদ আজ সোমবার (২২ জুন) ভেঙে যাওয়ার কথা। তবে এরপরও দায়িত্ব চালিয়ে যাওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন ডাকসুর ভিপি নুরুল হক নুর ও জিএস গোলাম রাব্বানী। পরবর্তী নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করতে চান তারা।
ডাকসুর গঠনতন্ত্রের ৬-এর (গ) ধারায় বলা আছে, সংসদে নির্বাচিত কার্যনির্বাহী পদাধিকারীগণ ৩৬৫ দিনের জন্য কার্যালয়ের দায়িত্ব পালন করবেন। যদি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নির্বাচন সম্পন্ন না করা যায়, তাহলে কার্যনির্বাহী পদাধিকারীরা অতিরিক্ত ৯০ দিন দায়িত্ব পালন করবেন। ওই ৯০ দিনের আগে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে নির্বাচন অনুষ্ঠানের পূর্ব পর্যন্ত তারা দায়িত্ব পালন করবেন। নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়া মাত্র পূর্বতন সংসদ স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভেঙে যাবে। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী বর্ধিত ৯০ দিন সময় পার হয়ে গেলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ওই সংসদ ভেঙে যাবে।
গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ডাকসুর বর্তমান সংসদ সোমবার (২২ জুন) ভেঙে যাবে। তবে ডাকসুর ভিপি ও জিএস বলছেন, বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকায় তারা দায়িত্ব পালন করতে পারেননি। তাই পরবর্তী নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করতে চান তারা।
তবে এ দাবি গঠনতন্ত্রের বিপরীত হলেও বিষয়টি নিয়ে পদাধিকার বলে ডাকসুর সভাপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানের সঙ্গে শিগগিরই আলোচনায় বসবেন তারা। একই সঙ্গে তারা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে পরবর্তী নির্বাচন দেওয়ার বিষয়ে জোর দাবি জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে ডাকসুর ভিপি নুরুল হক নুর জানান, ‘বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকায় আমরা নির্দিষ্ট সময়ের দায়িত্ব পালন করতে পারিনি। তাই আমাদের দাবি, বর্তমান সংসদের মেয়াদ শেষ হলেও পরবর্তী নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত আমরা যাতে দায়িত্ব পালন করতে পারি। এ বিষয়ে শিগগিরই ডাকসুর সভাপতির সঙ্গে আমরা আলোচনায় বসবো। তবে অবশ্যই ডাকসু নির্বাচনের ধারাবাহিকতা বজায় রাখার দাবি জানাচ্ছি। দেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে এ প্রত্যাশা থাকবে।’
সাধারণ সম্পাদক (জিএস) গোলাম রাব্বানী বলেন, ‘নাই মামার চেয়ে কানা মামা অনেক ভালো। বর্তমান সংসদ বাতিল হয়ে যাওয়ার চেয়ে পরবর্তী নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত এ সংসদ যাতে দায়িত্ব পালন করতে পারে, সে দাবি আমরা উপাচার্যের কাছে উপস্থাপন করবো। করোনা পরিস্থিতির কারণে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকায় আমরা নির্দিষ্ট সময়ের দায়িত্ব পালন করতে পারিনি। সেজন্য পরবর্তী নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করতে চাই।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডাকসুর সভাপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, ‘সবকিছু নিয়ম অনুযায়ী হবে এবং নিয়মের মধ্যেই হবে।’