নিনা আফরিন, পটুয়াখালী প্রতিনিধি: যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ বলেছেন, সকল বাধা কাটিয়ে বর্তমান আওয়ামী যুবলীগ আলোর পথে এগিয়ে যাচ্ছে। ভবিষ্যতে যুবলীগ বাংলাদেশের নেতৃত্ব দেবে।
সোমবার (২০ ডিসেম্বর) দুপুরে পটুয়াখালী কাজী আবুল কাসেম স্টেডিয়ামে দীর্ঘ ১৬ বছর পর জেলা যুবলীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনের উদ্বোধনী অধিবেশনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। এর আগে বেলুন ফেস্টুন, জাতীয় পতাকা ও শান্তির প্রতিক পায়রা উড়িয়ে সম্মেলনে উদ্বোধন করেন তিনি।
যুবলীগ চেয়ারম্যান আরও বলেন, ১৯৭১ সালে বিজয় হয়েছিলো চেতনার এবং মূল্যবোধের আর এই বিজয়ের মাসে দেশ প্রেম ভিত্তিক রাজনীতির বিজয় হবে। রাজনৈতিক সংস্কৃতিক পরিবর্তনের বার্তা নিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে বলেও ঘোষণা দেন তিনি।
শেখ ফজলে শামস পরশ বলেন, রাজনীতি করলে মানুষের অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। সাংগঠনিক পদ কোন বাজার থেকে কেনা পণ্য নয়। রাজনৈতিক পদ-পদবী অবৈধ কোন কাজে ব্যবহার না করা এবং দূর্নীতি মুক্ত সমাজ গঠনে নেতৃত্ব দিতে যুবলীগের নেতাকর্মীদের নির্দেশনা দেন তিনি।
জেলা যুবলীগের আহবায়ক এড. আরিফুজ্জামান রনির সভাপতিত্বে ও যুগ্ম আহবায়ক এড. মো. শহিদুল ইসলাম শহিদের সঞ্চালনায় সম্মেলনে প্রধান বক্তা ছিলেন কেন্দ্রীয় যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব মোঃ মাইনুল হোসেন খান নিখিল।
অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন, সাবেক ধর্ম প্রতিমন্ত্রী এড. মো. শাহজাহান মিয়া এমপি, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা কাজী আলমগীর, সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা ভিপি আবদুল মান্নান, মো. মহিবুর রহমান মুহিব এমপি, এসএম শাহাজাদা এমপি, কাজী কানিজ সুলতানা এমপি, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা খলিলুর রহমান মোহন, কেন্দ্রীয় যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ বদিউল আলম, সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী মো. মাজহারুল ইসলাম, এড. ড. শামীম আল সাইফুল সোহাগ, উপ-বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক মো. রাশেদুল হাসান সুপ্ত।
প্রসঙ্গত, ২০০৫ সালের ৭ জুলাই জেলা আওয়ামী যুবলীগের সর্বশেষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ওই সম্মেলনে অভ্যন্তরীণ বিরোধে বিবাদমান দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষে সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী মাহমুদুর রহমান পলাশ মৃধাসহ অন্তত ১০ গুরুতর আহত হন এবং ১১ জুলাই পলাশ মৃধা মারা যান।
পরবর্তীতে ২৯ জুলাই টুঙ্গিপাড়ায় এক বিশেষ কাউন্সিল অধিবেশনে আহসান হাবিব খানকে সভাপতি ও কাওসার আহমেদ মৃধাকে সাধারণ সম্পাদক করে জেলা আওয়ামী যুবলীগের কমিটি ঘোষণা করা হয়। ২০১২ সালের ২৮ ডিসেম্বর সংগঠনের সভাপতি আহসান হাবিব খান মৃত্যুবরণ করেন।
পরবর্তীতে ২০১৩ সালের ২৫ এপ্রিল অ্যাডভোকেট মো. আরিফুজ্জামান রনিকে আহবায়ক ও অ্যাডভোকেট মো. শহীদুল ইসলাম শহীদকে যুগ্ম-আহবায়ক করে জেলা আওয়ামী যুবলীগের ৩১ সদস্য বিশিষ্ট আহবায়ক কমিটি গঠন করা হয়।
এদিকে, দীর্ঘ ১৬ বছর পর অনুষ্ঠিত জেলা আওয়ামী যুবলীগের এই সম্মেলনে কাকে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচন করা হচ্ছে তা নিয়ে শহরজুড়ে এখন চলছে নানা জল্পনা-কল্পনা। যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির একাধিক নেতা জানান, এবার ক্লিন ইজেমের যোগ্য যুবনেতাদের মধ্য থেকেই নেতৃত্ব নির্বাচন করা হবে। কারণ যুবলীগের ঐতিহ্য এবং ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হয় এমন কারো নেতৃত্বে আসার সম্ভবনা নেই।
এদিকে, অনুসন্ধানে জানা গেছে সংগঠনের সভাপতির পদের জন্য বর্তমান আহবায়ক অ্যাডভোকেট মো. আরিফুজ্জামান রনি, যুবলীগ জেলা কমিটির সদস্য মো. হাফিজুর রহমান, জেলা যুবলীগের সাবেক যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আবুল কাসেম এবং সাধারণ সম্পাদক পদের জন্য বর্তমান যুগ্ম-আহবায়ক অ্যাডভোকেট মো. শহীদুল ইসলাম শহীদ, সদর উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ও ভাইস চেয়ারম্যান সৈয়দ মো. সোহেল, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মো. নাসির উদ্দিন হাওলাদার ও হাসান সিকদার, সাবেক সাধারণ সম্পাদক শাহানুর রহমান সুজন, পটুয়াখালী সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক আহবায়ক রেজাউল করিম সোয়েব, ছাত্রলীগ নেতা জামাল হোসেনের নাম শোনা যাচ্ছে।
সান নিউজ/নিনা আফরিন/এমকেএইচ