নিজস্ব প্রতিবেদক: নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলন সাধারণ শিক্ষার্থীদের নয় বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, একটি রাজনৈতিক দলের উস্কানিতে শিক্ষার্থীরা রাস্তায় নেমেছে। ভিডিও ফুটেজ দেখে উস্কানিদাতাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
শনিবার (৪ ডিসেম্বর) রাজধানীর মানিক মিয়া এভিনিউতে বিআরটিএ আয়োজিত সড়ক নিরাপত্তা এবং গণসচেতনতা বৃদ্ধিমূলক কার্যক্রমে অংশ নিয়ে তিনি এ কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, নিরাপদ সড়ক ও অর্ধেক বাস ভাড়া নিয়ে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে সব দাবি মেনে নেওয়া হয়েছে। তারপরও কাদের অনুপ্রবেশে মধ্যরাতে আন্দোলন হচ্ছে। যে কোন ঘটনা মুহূর্তের মধ্যে বাঁশের কেল্লা লাইভ করছে। স্কুলের পোশাক পরে একটি দলের মহানগরের নেত্রী এসব উস্কানি দিচ্ছেন এমন ভিডিও ফুটেজ আছে।
সম্প্রতি ঘটে যাওয়া দুই-তিনটি দুর্ঘটনার তথ্য তুলে ধরে সড়ক মন্ত্রী বলেন, সড়কে দুর্ঘটনা কাম্য নয়, দুঃখজনক। রামপুরায় দুর্ঘটনার পর বিভিন্ন অভিযোগ উঠেছে, প্রশ্ন উঠেছে। দুর্ঘটনার ১০-১২ মিনিট পর হাজার হাজার মানুষ কোথা থেকে এলো। এত রাতে দুর্ঘটনার খবর ১০-১২ মিনিটের মধ্যে কীভাবে ছড়াল। মৃত্যুর সংবাদ দুঃখজনক। বিভিন্ন প্রশ্ন থাকার পরও আমরা দুর্ঘটনা এড়াতে বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছি। আমরা শিক্ষার্থীদের হাফ ভাড়ার বিষয়টি মেনে নিয়েছি।
তিনি বলেন, নিরাপদ সড়কের আন্দোলন অযৌক্তিক না, আমি স্বীকার করি। ছাত্র-ছাত্রীরা যখন আন্দোলন থামিয়ে পড়াশোনায় মনোনিবেশ করছে ঠিক তখনই রাজনৈতিক উস্কানি দিয়ে তাদের মাঠে নামানো হচ্ছে। এটা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক।
ছাত্র-ছাত্রীদের উদ্দেশ্যে ওবায়দুল কাদের বলেন, করোনা মহামারীর কারণে ছাত্র-ছাত্রীদের পড়াশোনার অনেক ক্ষতি হয়েছে। অনেক মূল্যবান সময় নষ্ট হয়ে গেছে। তারা ক্যাম্পাসে ফিরে যাবে, পড়াশোনায় মনোনিবেশ করবে ছাত্র-ছাত্রীদের প্রতি এটাই আমাদের পরামর্শ।
বিএনপি নেতাদের উদ্দেশ্যে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুর নৃশংসতম হত্যাকান্ডের মাস্টারমাইন্ড ছিলেন তাদের নেতা। বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার পর তারা এ দেশকে পাকিস্তানি ভাবধারায় চালাতে চেয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ ও মূল্যবোধ নির্বাসনে পাঠিয়ে দিয়ে তারা পাকিস্তানি ভাবধারার ব্যবস্থা শুরু করেছিল। ৯৬ সালে আমরা ক্ষমতায় আসার আগে পর্যন্ত পাকিস্তানি সাম্প্রদায়িক ধারায় বাংলাদেশ পরিচালিত হচ্ছিল।
তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার জন্য তারা কি করেছেন, সাত বছর মামলাটা ঝুলিয়ে রেখেছেন। বিএনপির একটা এতবড় দল, সেখানে এত বড় বড় আইনজীবী রয়েছেন, আইন যুদ্ধে তারা কিছুই করেনি। খালেদা জিয়ার জন্য দৃশ্যমান কার্যকর একটি মিছিল কারো চোখে পড়েনি। এখন তারা আবার মায়া কান্না করছেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, দেশের সর্বাধুনিক হাসপাতালে তার চিকিৎসা চলছে। বিদেশ থেকে যদি কোন বিশেষজ্ঞ ডাক্তার আনতে হয়, সে বিষয়েও সরকারের কোনো আপত্তি নেই।
তিনি বলেন, একজন দন্ডিত ব্যক্তির সাজা স্থগিত করে বাইরে থাকার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। সর্বোচ্চ চিকিৎসার সুযোগও তিনি নিচ্ছেন। জিয়াউর রহমান এবং বেগম খালেদা জিয়ার আমলে কাকে তারা বিদেশে যাওয়ার বা চিকিৎসা নেওয়ার সুযোগ দিয়েছেন? এখন তারা বড় বড় কথা বলছেন।
সড়ক নিরাপত্তা ও গণ সচেতনতা বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ)। তারই অংশ হিসেবে শনিবার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে রাজধানীর মানিক মিয়া এভিনিউ, কলাবাগান মাঠ সংলগ্ন রাস্তা এবং কাকলি পুলিশ বক্স সংলগ্ন রাস্তায় একযোগে সড়ক নিরাপত্তামূলক রোড শো শুরু হয়েছে।
এ কর্মসূচিতে স্টিকার ও লিফলেট বিতরণ করা হচ্ছে। এই কার্যক্রমে উপস্থিত ছিলেন সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব মো. নজরুল ইসলাম, বিআরটিএ-এর চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ মজুমদার।
সান নিউজ/এস