নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেছেন, ধর্মান্ধতা প্রতিরোধ না করলে বাংলাদেশকে আফগানিস্তানের পরিণতি বরণ করতে হবে।
শনিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর তোপখানা রোডে বাংলাদেশ নারী মুক্তি সংসদ আয়োজিত ‘নারীর প্রতি সহিংসতা ও বৈষম্য বন্ধ ও করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত নারীদের আর্থিক প্রণোদনা প্রদানের দাবিতে অনুষ্ঠিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
নারী মুক্তি সংসদের সভাপতি হাজেরা সুলতানার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক শিউলী শিকদার। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন অ্যাড. জোবায়দা পারভীন, অ্যাড. সুরাইয়া বেগম, মোস্তফা আলমগীর রতন, শাহানা ফেরদৌসী লাকী, ছাত্র মৈত্রীর সভাপতি কাজী আবদুল মোতালেব জুয়েল, রাজিয়া সুলতানা প্রমুখ।
রাশেদ খান মেনন বলেন, আফগানিস্তানে তালেবান ও মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের আঁতাতের ফলে ধর্মান্ধ তালেবান সেখানে ক্ষমতা দখল করেছে। তাদের প্রধান ও প্রথম লক্ষ্য হচ্ছে নারী ও শিশু। তারা সেখানে গঠিত মন্ত্রিসভায় কোনো নারীকে স্থান দেয়নি। স্কুল-কলেজ এমনকি কর্মক্ষেত্রে নারীকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তারা পুনরায় নারীকে গৃহবন্দি করে রেখেছে।
ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি বলেন, আমাদের দেশেও ওই ধর্মান্ধ গোষ্ঠী ইউটিউবসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নারীকে বর্বরোচিত ও রুচিহীনভাবে ‘ট্রল’ করে। এরা তাদেরই দোসর। এরা নারীকে পদদলিত, কোণঠাসা করে রাখতে চায়।
তিনি আরও বলেন, করোনাকালীন মহামারিতে কর্মসংস্থান না থাকায়, সবাইকে ঘরে থাকার বাধ্যবাধকতায় এই সহিংসতা বহুগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। বাল্যবিবাহ রোধে আইন থাকার পরও এটা বেড়েছে। নারীর ক্ষমতায়ন, লিঙ্গ সমতা সৃষ্টি হলেও বাতির নিচে অন্ধকারের মতোই আজও পুরুষতান্ত্রিকতার জাঁতাকলে নারীরা পিষ্ট ও পদদলিত।
রাশেদ খান মেনন বলেন, কর্মজীবী নারীদের বেকারত্ব, অনেক শ্রমজীবী, গার্মেন্টস নারীরা ন্যূনতম প্রণোদনা পাননি। আমরা নারীর যে ক্ষমতায়ন ও লিঙ্গ সমতার কথা বলি, এই লড়াই নারীর একার নয়। এটি নারী-পুরুষের সর্বজনীন লড়াই।
তিনি আরও বলেন, বেগম রোকেয়া, কবি সুফিয়া কামাল, শহীদ জননী জাহানারা ইমাম, শামসুন্নাহার মাহমুদ, কামরুল নাহার লাইলী প্রমুখ মহীয়সী নারীরা নারীর অধিকার তথা মানবাধিকার আদায়ে আমৃত্যু লড়াই সংগ্রাম করেছেন।
ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি মেনন বলেন, নারীর প্রতি সহিংসতা রোধ ও সব ধরনের বৈষম্য নিরসনে আমাদের তাদের কাছ থেকেই প্রেরণা নিয়ে এই লড়াইকে মাঠে নিয়ে যেতে হবে। দেশে বিদ্যমান এই সর্বগ্রাসী ধর্মান্ধতা, বর্বরতা, নৃশংসতা বৈষম্য প্রতিরোধ করতে হবে। নয়ত দেশকে আফগানিস্তানের পরিণতি বরণ করতে হতে পারে।
সান নিউজ/এমকেএইচ