নিজস্ব প্রতিবেদক: স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো.তাজুল ইসলাম বলেছেন, বেগম খালেদা জিয়া স্বাধীনতা বিরোধী পাকিস্তানের দোসরদের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে বসিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের পরিবর্তে রাজাকারদের মুক্তিযুদ্ধা সার্টিফিকেট দেওয়ার ব্যবস্থা করেছিলেন।
বৃহস্পতিবার (১৯ আগস্ট) ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের নগরভবনে আয়োজিত স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৬তম শাহাদাত বার্ষিকী এবং জাতীয় শোক দিবস পালন উপলক্ষে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় এসে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিস্তম্ভ ধ্বংস করে দেয়ার পাশাপাশি প্রকৃত ইতিহাসকে বিকৃত করার চেষ্টায় লিপ্ত ছিলো। মুক্তিযুদ্ধের বিরোধীদেরকে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় এনে স্বাধীন দেশের লাল সবুজের পতাকা ব্যবহারের সুযোগ করে দিয়েছে। স্বাধীনতার সুফল যেন বাঙালির না পায় সে চেষ্টাই করে গেছে বিএনপি ও স্বাধীনতা বিরোধীরা।
মো. তাজুল ইসলাম বলেন, বঙ্গবন্ধু ১৯৭২ সালের ১০ই জানুয়ারি দেশে ফিরে দেখেন, রাস্তা-ঘাট, ব্রিজ-কালভার্ট, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, শিল্প-কারখানা, ব্যাংক-বীমাসহ সকল সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানসমূহ ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। খাদ্য-অন্ন-বস্ত্রহীন দেশের সাত কোটি মানুষকে সাথে নিয়ে শুরু করেন দেশ গঠনের কার্যক্রম এবং এক বছরের মধ্যে ব্যাংক-বীমা, পুলিশ, বিডিআর, আনসার, কোট-কাচারিসহ সমস্ত প্রতিষ্ঠানকে নতুন করে সুসংগঠিত করেন। বঙ্গবন্ধু জানতেন বাঙালার মাটি ও মানুষ দিয়ে উন্নয়নের শ্রেষ্ঠতম আসনে যাওয়া সম্ভব।
মন্ত্রী বলেন, ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান গঠন হওয়ার সময় মাথাপিছু আয় ছিল ৫৯ ডলার। পাকিস্তানের ২৫ বছরের শাসনামলে মাথাপিছু আয় দাঁড়িয়েছিলো ১২৫ ডলারে। আর জাতির পিতা যখন দায়িত্ব গ্রহণ করেন তখন দেশের মাথাপিছু আয় ছিল ৮৯ ডলার। ধ্বংসস্তূপ দেশ হাতে পাওয়ার পরেও মাত্র সাড়ে তিন বছরে মাথাপিছু আয় ২৭৭ ডলারে উন্নীত করেন বঙ্গবন্ধু।
তিনি আরো বলেন, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ,ব্যবসা-বাণিজ্য, চাকরি এবং অর্থনৈতিকভাবে বঞ্চিত করে নির্যাতিত ও নিগৃহীত তৃতীয় শ্রেণীর নাগরিক রূপান্তরিত করার মাধ্যমে পাকিস্তান বাঙালিদের ক্রীতদাস করে রেখেছিলো। এর থেকে মুক্ত করতেই আজীবন লড়াই-সংগ্রাম করে গেছেন জাতির পিতা। এনে দিয়েছেন স্বপ্নের স্বাধীনতা।
বঙ্গবন্ধুকে ১৫ই আগস্ট নির্মমভাবে শহীদ করে দেশের উন্নয়নের অগ্রযাত্রাকে স্তব্ধ করে দেয় স্বাধীনতা বিরোধীরা। এরপর দীর্ঘ ২৫ বছর বাঙালির ভাগ্যের আর কোন উন্নতি হয়নি। সামরিক পোশাক পরে রাজনৈতিক দল গঠন করে মানুষের আশা আকাঙ্ক্ষা ধুলিস্যাৎ করে দিয়েছেন বলে জানান স্থানীয় সরকার মন্ত্রী।
এসময় মো. তাজুল ইসলাম প্রতি ওয়ার্ডকে দশটি সাব-জোনে ভাগ করে সকল শ্রেণী পেশার মানুষকে অন্তর্ভুক্ত করে ডে কমিটি গঠন করা হয়েছে তার মাধ্যমে রিলিফ বিতরণ করোনা, ডেঙ্গুসহ সকল সমস্যা মোকাবেলা করার জন্য কাউন্সিলদের নির্দেশ দেন। এই কমিটিগুলোকে সক্রিয় রাখলে যেকোন সমস্যা ও চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করা সহজ হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
ডিএনসিসির মেয়র মো.আতিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ মুজিবুর রহমান এবং সাধারণ সম্পাদক এসএম মান্নান কচি। এছাড়া, সিটি কর্পোরেশনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও কাউন্সিলরবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
সাননিউজ/ জেআই