নিজস্ব প্রতিনিধি, নারায়ণগঞ্জ: নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য শামীম ওসমানের পরিবারের সদস্যদের কবরস্থানে দেয়া শ্মশানের মাটি সরিয়ে নিয়েছে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন (নাসিক)।
মঙ্গলবার (১০ আগস্ট) দুপুরে সরেজমিনে শহরের মাসদাইর এলাকায় নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন কেন্দ্রীয় কবরস্থানে গিয়ে এমন চিত্র দেখা গেছে।
এর আগে সোমবার (৯ আগস্ট) দুপুরে ওই কবরস্থান পরিদর্শনে যান শামীম ওসমান। এ সময় কবরস্থানে শ্মশানের মাটি ফেলার চিত্র দেখে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি। পরে কবরগুলো থেকে মাটি সরিয়ে নিতে সেখানের দায়িত্বরতদের ৪৮ ঘণ্টা সময় দেন। আল্টিমেটামের পরপরই সিটি করপোরেশনের ঠিকাদার মামুন মাটি সরানোর কাজ শুরু করেন। আজ দুপুরের মধ্যেই কবরগুলোর ওপর থেকে মাটি সরিয়ে ফেলা হয়।
জানা গেছে, ওসমান পরিবারের কবর ছাড়াও বীর মুক্তিযোদ্ধাদের কবরস্থ করার জন্য সংরক্ষিত অংশের কবরগুলোর ওপর পাশে থাকা শ্মশানের পুকুর কেটে তোলা মাটি ফেলে ঢেকে দেওয়া হয়। অনেক মুক্তিযোদ্ধার কবরের সাইনবোর্ড, বেষ্টনী পর্যন্ত তুলে ফেলা হয়। শ্মশানের মাটি কবরস্থানে রেখে রীতিমতো টিলা বানিয়ে রাখা হয়।
শ্মশানের পুকুর কেটে কবরের ওপর মাটি ফেলায় শামীম ওসমানের দাদা খান সাহেব এম ওসমান আলী, দাদি জামিলা ওসমান, বাবা ভাষাসৈনিক ও মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক আবুল খায়ের মোহাম্মদ (একেএম) সামসুজ্জোহা, মা ভাষা সৈনিক নাগিনা জোহা ও বড় ভাই মুক্তিযোদ্ধা একেএম নাসিম ওসমানসহ ওসমানের কবর ঢেকে যায়। পাশেই একাধিক মুক্তিযোদ্ধাসহ অনেকগুলো সাধারণ কবরের অস্তিত্বও হারিয়ে যায়।
কবরস্থানের দেখভালের দায়িত্বে থাকা জাকারিয়া বলেন, ‘এটা শ্মশানের মাটি কিনা আমি নিশ্চিত না। তবে ঠিকাদাররা শ্মশান ও কবরস্থানের উন্নয়ন কাজ করেছেন।’
নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ঠিকাদার মো. মামুন বলেন, ‘কবরস্থানে শ্মশানের মাটি ফেলা আমাদের উদ্দেশ্য ছিল না।’
এ বিষয়ে কবরস্থান মসজিদের ইমাম বদর শাহ বলেন, ‘কবরস্থানে শ্মশানের মাটি দেওয়া সমীচীন নয়। এখানে শুধু ধর্মীয় বিষয়ই না, এটা মানবিক দিক থেকেই উচিত নয়। নাপাক মাটি কবরে দেওয়া উচিত নয়।’
তবে ঠিকাদার মামুন মিয়ার বক্তব্য অনুযায়ী কবরস্থানের জন্য আপনিই মাটি চেয়েছিলেন জানিয়ে বক্তব্য চাইলে ইমাম বদর শাহ এর কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি।
সান নিউজ/ এমবি