নিজস্ব প্রতিবেদক: কুমিল্লা-৭ আসনের সংসদ সদস্য, সাবেক ডেপুটি স্পিকার, বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক মো. আলী আশরাফের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
শুক্রবার (৩০ জুলাই) প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের প্রেস উইং থেকে পাঠানো এক শোক বার্তায় মরহুমের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন। শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার মৃত্যুতে আমরা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শের সৈনিক ও দেশপ্রেমিক জননেতাকে হারালাম।
শুক্রবার বিকেল ৪টায় রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন তিনি। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৪ বছর। নিউমোনিয়া রোগে আক্রান্ত হয়ে লাইফ সাপোর্টে ছিলেন তিনি।
সাবেক ডেপুটি স্পিকার আশরাফ আলী বার্ধক্যজনিত কারণে বেশ কিছুদিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন। ডায়াবেটিসেও ভুগছেন তিনি।
গত ১০ জুলাই তাকে স্কয়ার হাসপাতাল ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে ১৩ জুলাই তাকে আইসিইউতে নেয়া হয়।
আলী আশরাফ এ নিয়ে পঞ্চমবার জাতীয় সংসদে কুমিল্লার ভোটারদের প্রতিনিধিত্ব করছেন। ২০০০ সালে আলী আশরাফ ডেপুটি স্পিকার নির্বাচিত হন।
তিনি আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় অর্থ ও পরিকল্পনা সম্পাদক ও কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্বেও ছিলেন।
চান্দিনার গল্লাই মুন্সিবাড়ির মরহুম মো. ইসমাইল হোসেন মুন্সির ছেলে অধ্যাপক মো. আলী আশরাফ এমপি ১৯৬২ সালে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজে অধ্যয়নরত অবস্থায় বাংলাদেশ ছাত্রলীগে যোগদান করে রাজনীতির অঙ্গনে পা রাখেন।
১৯৭০-এর পাকিস্তান সংসদ নির্বাচনে তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচনে ‘মই’ প্রতীক নিয়ে অংশগ্রহণ করেন। ওই নির্বাচনে জয় না পেলেও ‘মাছ’ প্রতীক নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে ১৯৭৩ সালের প্রথম বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের সর্বকনিষ্ঠ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হন।
পরবর্তী সময়ে আওয়ামী লীগ যতগুলো নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছে তার প্রত্যেকটিতেই তিনি আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী হয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। তিনি ১৯৯৬, ২০০৮, ২০১৪ এবং ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পঞ্চমবারের মতো বিজয় লাভ করেন। ২০০০ সালে সপ্তম জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকারের দায়িত্ব পালন করেন। মৃত্যুর মধ্য দিয়ে প্রায় ৬০ বছরের বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনের ইতি টানেন।
এর আগে অধ্যাপক মো. আলী আশরাফ এমপি পিত্তথলিতে পাথরসংক্রান্ত সমস্যায় গত ২ জুলাই রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে ভর্তি হন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শরীরে নানা রোগের উপসর্গ দেখা দেয়। সঙ্গে নিউমোনিয়া রোগেও আক্রান্ত হন। পরবর্তী সময়ে ৯ জুলাই তাঁকে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) স্থানান্তর করা হয়। সেখানে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে ২১ জুলাই বিকেল ৩টায় লাইফ সাপোর্টে নেয়া হয়।
সান নিউজ/এফএআর