নিজস্ব প্রতিবেদক : বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘জনগণের কাছে সরকারের কোনো জবাবদিহিতা নেই। এজন্য গণতান্ত্রিক সব প্রতিষ্ঠানকে হাতের মুঠোয় নিয়ে একদলীয় অপশাসনের জগদ্দল পাথর জনগণের বুকের ওপর চাপিয়ে দেয়া হয়েছে। গণমাধ্যমকে হুমকি ও ভয় দেখিয়ে এবং নির্যাতন করে কব্জা করার অপচেষ্টা চলছে। গণমাধ্যমের স্বাধীনতা এখন সম্পূর্ণরূপে বিপন্ন।
শনিবার (২৬ জুন) জাতিসংঘ ঘোষিত নির্যাতিতদের সমর্থনে আন্তর্জাতিক দিবস উপলক্ষে দেয়া বাণীতে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, দেশে এখন চরম দুঃসময় চলছে। রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করে অবৈধ শাসকগোষ্ঠী জনগণের ওপর এখন ফ্যাসিবাদী জুলুম চালাচ্ছে। এক্ষেত্রে গুম ও বিচার বহির্ভূত হত্যাই হচ্ছে বর্তমান শাসকগোষ্ঠীর প্রধান অস্ত্র। রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী, মানবাধিকারকর্মী, রাজনৈতিক বিশ্লেষক যাঁরা গণতন্ত্রের পক্ষে সোচ্চার, তাঁরা সরকারি জুলুমের শিকার হয়ে কেউ গুম হচ্ছেন, পঙ্গু হচ্ছেন, অথবা চিরদিনের জন্য হারিয়ে যাচ্ছেন।’
ফখরুল বলেন, জাতিসংঘ ঘোষিত নির্যাতিতদের সমর্থনে আন্তর্জাতিক দিবসে আমি বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বের নির্যাতিত ব্যক্তি, গোষ্ঠী ও সম্প্রদায়ের প্রতি জানাই গভীর সমবেদনা ও সহমর্মিতা। যুগে যুগে মানুষ বিভিন্ন রাষ্ট্রের স্বৈরশাসক ও নিষ্ঠুর একনায়ক-একদলীয় শাসনের দ্বারা নির্যাতিত হয়েছে, এখনো হচ্ছে। এখনো বিশ্বব্যাপী কোনো না কোনো অঞ্চলে ভাষা, বর্ণ, জাতি ও সম্প্রদায় নিয়ে সংঘাত চলছে। রাজনৈতিক ভিন্ন মতের ওপর অসহিষ্ণু শাসকরা চালাচ্ছে নির্দয় অত্যাচার। জনগণের ভোটের অধিকার কেড়ে নির্বাচনের নামে প্রহসন ও তামাশা চলছে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, বিশ্বব্যাপী করোনার মরণঘাতি আগ্রাসনের মধ্যেও বিএনপি নেতাকর্মীসহ ভিন্নমত পোষণকারীদের বিরুদ্ধে গুম, মিথ্যা মামলা ও গ্রেফতারের হিড়িক থেমে থাকছে না। বরং সরকারের জুলুমের গতি আগের মতোই চলমান। জাতির সব অর্জন ও এগিয়ে যাওয়া এখন অন্ধকারে হারিয়ে যেতে বসেছে। জুলুম-নির্যাতনের ধারাবাহিকতায় গণতন্ত্রের ওপর সর্বোচ্চ আঘাত হানা হচ্ছে। এই নৈরাজ্যের অমানিশা আমাদের দূরীভূত করতেই হবে।
তিনি বলেন, 'গণতন্ত্রের মা' বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে সম্পূর্ণ অসত্য ও বানোয়াট মামলায় প্রতিহিংসামূলক সাজা দিয়ে কারাবন্দি করে রাষ্ট্রীয় দমন-পীড়ন চালানো হয়েছে। কারাবন্দি অবস্থায় সুচিকিৎসার অভাবে তাঁর জীবনকে সংকটাপন্ন করে তোলা হয়েছে। তাঁর সুচিকিৎসার অধিকারও কেড়ে নেয়া হয়েছে। তাঁর সুস্থতার জন্য বিদেশে উন্নত চিকিৎসার প্রয়োজন হলেও সরকার তাঁর বিদেশ যাওয়ার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে রেখেছে। এটা সরকারের প্রতিহিংসা ও চরম নির্যাতনের বহিঃপ্রকাশ ছাড়া আর কিছুই নয়।
আন্তর্জাতিক নির্যাতনবিরোধী দিবসে দেশের গণতন্ত্রকামী জনগণকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে সব নির্যাতনের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানান মির্জা ফখরুল।
সাননিউজ/এমএইচ