নিজস্ব প্রতিবেদক : বিএনপির সংসদ সদস্য হারুনুর রশীদ বলেছেন, আমাদের ধর্মগ্রন্থ কোরআন। আমি দায়িত্ব নিয়ে বলছি, কোরআনে ধর্ম নিরপেক্ষতার কোনো স্থান নাই। সুতরাং আমি মনে করি সংবিধানে একটি বড় অসঙ্গতি রয়েছে। সংবিধান সভা-সমাবেশের কথা বলা হয়েছে। সেগুলোর কী কোনো অস্তিত্ব আছে? আজ ভিন্নমত প্রকাশের কোনো স্বাধীনতা আছে? কেউ ভিন্নমত প্রকাশ করতে পারছে?
বৃহস্পতিবার (১৭ জুন) জাতীয় সংসদে ২০২১-২২ অর্থ বছরের প্রস্তাবিত বাজেটের উপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, এবারের বাজেট অত্যন্ত বৈদেশিক নির্ভর। এবারের বাজেট ৫০ বছরের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি ঘাটতির বাজেট। এর বাস্তবায়ন করোনাকালে মোটেই সম্ভব নয়। সেই দক্ষতাও নেই। এই মহাজোট সরকারের এটি ১৩তম বাজেট। এর আগে ১২টি বাজেট সংসদে উত্থাপিত হয়। যার কোনোটিই বাস্তবায়িত হয়নি।
তিনি আরও বলেন, একটি রাষ্ট্রের আর্থিক কাঠামোতে দৃষ্টি দিতে গেলে সেখানে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর অবস্থার দিকে তাকাতে হবে। আমি নিঃসন্দেহে বলব বাংলাদেশের শেয়ার বাজার ঢাকা মেডিকেল কলেজে হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি আছে। সেখানে চোখ একটু খুলছে, আবার বন্ধ করছে। চোখ খুলেই দেখে দরবেশ বাবা চারদিকে ঘিরে আছে। তখন চোখ বন্ধ করে রাখে।
ব্যাংকগুলো সাংঘাতিকভাবে আক্রান্ত। লাখ লাখ-কোটি কোটি টাকা ঋণ নিচ্ছে। কিন্তু ফেরত দিচ্ছে না। ঋণখেলাপি হচ্ছে না। তারা দেদারছে আনন্দ ফুর্তি করে ঘুরে বেড়াচ্ছে। যে কারণে ব্যাংকগুলো বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে ভর্তি। বঙ্গবন্ধু চিকিৎসক পরিষদের ডাক্তাররা এগুলোকে চিকিৎসা দিচ্ছে। আর অন্যান্য যে আর্থিক প্রতিষ্ঠান আছে, সেগুলো নিঃসন্দেহে আইলার মত একটি ভয়াবহ দুর্যোগ কবলিত।
বিএনপির এই সংসদ সদস্য বলেন, আজ আমরা অপহরণ-গুম-খুনের কথা বলছি। এই কিছুদিন আগেই একজন আলেম নিখোঁজ হয়েছেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন- খোঁজ নিচ্ছি। আজ যদি তাকে ফিরিয়ে দিতে না পারেন, এটা রাষ্ট্রের জন্য বড় ব্যর্থতা হবে। আদনানকে অবশ্যই ফিরিয়ে দিতে হবে। তার পরিবারের আহাজারি আপনাকে শুনতে হবে।
তিনি বলেন, সংবিধানে যেকোনো দণ্ডিত আসামিকে রাষ্ট্রপতির মাফ করার ক্ষমতা রয়েছে। এই মহাজোট সরকার আমলে প্রায় ৪০ থেকে ৫০ জন খুনি দণ্ডিত আসামিদের মাফ করা হয়েছে। এটি অত্যন্ত নাড়া দিয়েছে বিশ্বকে। কিছুদিন আগে আল-জাজিরা অল প্রাইম মিনিস্টার ম্যান প্রতিবেদনটি যার প্রমাণ। এতে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়েছে। তিনবারের প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে রাজনৈতিক চিকিৎসার সুযোগ দেওয়া হচ্ছে না। আর দণ্ডিত আসামিদের আপনারা মাফ করে দিচ্ছেন।
জাতীয় সংসদের সরকারি ও বিরোধী দল একাকার দাবি করে তিনি বলেন, আমাদের বিরোধী দলনেতা বাইরে বলছেন বিরোধীদলের কোনো মূল্য নাই। সরকারি দলের মন্ত্রীরা বরাবরই বলছেন প্রধানমন্ত্রী ছাড়া আমার কাছে কেউ অপরিহার্য নয়। এভাবে কী কোনো রাষ্ট্র চলতে পারে? সরকারি-বিরোধীদল সম্মিলিত মেধা শক্তিতে রাষ্ট্র পরিচালনা করতে হবে।
তিনি বলেন, সুপ্রিম কোর্টের ৫০ বছর বয়স হয়ে গেছে। এখন পর্যন্ত এখানে বিচারক নিয়োগের কোনো কাঠামো নীতিমালা তৈরি করতে পারেনি। নির্বাচন কমিশন দরকার কি? এটাকে বিলুপ্ত করে দেন। ইতিমধ্যেই শুনছি নির্বাচন কমিশনের এনআইডি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে যাচ্ছে।
দেশে সবার জন্য আইনের শাসন নেই দাবি করে তিনি বলেন, ৫০ বছর পর পাসপোর্ট থেকে আপনি ইসরাইলের শব্দটি বাদ দিলেন। নিঃসন্দেহে এটি অগ্রহণযোগ্য এবং এটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এটাকে পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে নেয়ার জন্য অনুরোধ করব।
সান নিউজ/এমএইচ