নিজস্ব প্রতিবেদক: কোরআন হাদিসের অপব্যাখ্যা দিয়ে পবিত্র জিহাদের কথা বলে যুবসমাজকে উগ্রতার দিকে ধাবিত করছে। ভাইয়ে ভাইয়ে ঘৃণা ও বিদ্বেষ সৃষ্টি করছে। সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্প ছড়িয়ে দিচ্ছে। স্বাধীনতা কিংবা মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে কটূক্তি করছে।
জামায়াতে ইসলামী ও হেফাজতের ইসলামপন্থি আলেমরা ওয়াজ ও তাফসির মাহফিলের নামে মিথ্যাচার করছেন বলে অভিযোগ করেছে মিছবাহুর রহমান চৌধুরীর নেতৃত্বধীন ইসলামী ঐক্যজোট।
হেফাজতের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তার অভিযান সমর্থন করে তিনি বলেন, ‘তাণ্ডব থেকে মহাতাণ্ডবের দিকে যাওয়ার আগেই দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এই অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে শুরু করেছে। বিলম্ব হলেও সরকারের বোধোদয় হয়েছে।
সুনির্দিষ্ট অভিযোগে তাণ্ডব সৃষ্টিকারীদের গ্রেপ্তারের ব্যাপারে সমর্থন আছে জানিয়ে মিছবাহুর বলেন, ‘তবে সতর্ক থাকতে হবে, কোনো অবস্থায় যেন কোনো নির্দোষ ব্যক্তি গ্রেপ্তার কিংবা হয়রানির শিকার না হন।
হেফাজতের সদ্য বিলুপ্ত কমিটির নেতাদের ‘কুচক্রী’ উল্লেখ করে ইসলামী ঐক্যজোট নেতা বলেন, ‘তারা সরকার পতনের লক্ষ্যে দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র বাস্তবায়ন করতে চাচ্ছিল। তবে মহান আল্লাহর দয়ায় সরকারের সঠিক ও সময়োপযোগী পদক্ষেপের কারণে এবং দেশবাসীর সমর্থনে দেশ এক গভীর ষড়যন্ত্রের হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে।’
মঙ্গলবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলন করে এসব কথা বলেন মিছবাহুর।
ওয়াজে মিথ্যাচারের অভিযোগ এনে তিনি বলেন, ‘কোরআন হাদিসের অপব্যাখ্যা দিয়ে পবিত্র জিহাদের কথা বলে যুবসমাজকে উগ্রতার দিকে ধাবিত করছে। ভাইয়ে ভাইয়ে ঘৃণা ও বিদ্বেষ সৃষ্টি করছে। সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্প ছড়িয়ে দিচ্ছে। স্বাধীনতা কিংবা মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে কটূক্তি করছে।’
সংবাদ সম্মেলনে হেফাজতে ইসলামের বিদেশি অর্থ সংগ্রহকারী ও জোগানদাতা এবং বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে খেলাফত মজলিসের সম্পৃক্ততা থাকলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবিও জানানো হয়।
গত সেপ্টেম্বরে শাহ আহমদ শফীর মৃত্যুর পর হেফাজতের নেতৃত্ব আন্তর্জাতিক উগ্রবাদীর অনুসারী, ক্ষমতা লোভী একদল আলেম নামধারী কুচক্রীর হাতে চলে যায় বলেও অভিযোগ করেন মিছবাহুর।
কওমি বোর্ডকে হেফাজতমুক্ত করার দাবি
কওমি মাদ্রাসা পরিচালনার কর্তৃপক্ষ আল হাইয়াতুল উলইয়া লিল জামিয়াতিল কাওমিয়্যাহ বাংলাদেশ এবং কওমি শিক্ষাবোর্ড বেফাকুল মাদারাসিল আরাবিয়ায় যে হেফাজত নেতারা আছেন, তাদের বহিষ্কার করে শান্তিপ্রিয় কওমি আলেমদের নিয়োগ দেয়ারও দাবি করা হয় সংবাদ সম্মেলনে।
মার্চের শেষ থেকে এপ্রিলের শুরু পর্যন্ত যেসব কওমি মাদ্রাসার ছাত্র সহিংসতা চালিয়েছে, তাদের ছাত্রত্ব বাতিলেরও দাবি জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে আবাসিক হাফিজিয়া মাদ্রাসা এবং কওমি মাদ্রাসা খুলে দেয়ার দাবিও জানায় ইসলামী ঐক্যজোট। পাশাপাশি গরিব কওমি শিক্ষকদের অনুদানের ব্যবস্থা করার কথাও বলা হয়।
বারিধারা মাদ্রাসার সাবেক প্রিন্সিপাল শায়খুল হাদিস আল্লামা ওয়াহিদুজ্জামান, মানিকগঞ্জের দারুল উলুম মাদ্রাসা প্রিন্সিপাল শাইখুল হাদিস মুফতি মনিরুজ্জামান রাব্বানী, বাংলাদেশ ইসলামী ঐক্যজোটের সাংগঠনিক সম্পাদক মুফতি মাওলানা বোরহান উদ্দিন আজিজী, মুফতী মাওলানা তাজুল ইসলামও এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
সাননিউজ/ এমআর