নিজস্ব প্রতিবেদক: করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের অ্যাম্বুলেন্স ও টেলিমেডিসিন সার্ভিসের পর এবার ফ্রি অক্সিজেন সেবা চালু করেছে আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ।
যে কেউ ০৯৬১১৯৯৭৭৭ হটলাইন নম্বরে ফোন করলে স্বেচ্ছাসেবক লীগের পক্ষ থেকে ফ্রি অক্সিজেন সিলিন্ডার সরবরাহ করা হবে বলেন সংগঠন নেতারা।
মঙ্গলবার (২০ এপ্রিল) রাজধানীর কলাবাগান মাঠে ফ্রি অক্সিজেন সার্ভিসের উদ্বোধন করেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম।
অনুষ্ঠানের শুরুতে সংগঠনটির সাধারস সম্পাদক এ কে এম আফজালুর রহমান বাবু বলেন, স্বেচ্ছাসেবকলীগ গত বছরও করোনার প্রথম ঢেউয়ে বিভিন্ন ত্রাণ সামগ্রী ও স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রী নিয়ে মানুষের পাশে ছিল। তারই ধারাবাহিকতায় এবার আমরা বিনামূল্যে অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিসের পর করোনা আক্রান্তদের বিনামূল্যে অক্সিজেন দিতে যাচ্ছি।
বর্তমানে হাসপাতালে বেড ও আইসিইউর প্রচণ্ড সংকট চলছে। রোগীরা জানেন না কোন হাসপাতালে সিট বা আইসিইউ আছে কি না? এরকম ভুক্তভোগীকে তাৎক্ষণিক সেবা দিতেই বিনামূল্যে এ সার্ভিস চালু করেছে স্বেচ্ছাসেবকলীগ বলেন তিনি।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, আমাদের সবাইকে মাস্ক পরিধান করে ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে করোনার এই ভয়াবহতা থেকে নিজেদের সুরক্ষিত রাখতে হবে। আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ একটি মানবিক সংগঠন। রাজনৈতিক কার্যক্রমের পাশাপাশি মানবিক কাজ স্বেচ্ছাসেবক লীগ সব সময় প্রাধান্য দিয়ে থাকে।
স্বেচ্ছাসেবক লীগ এর আগে ১০ টি ফ্রি এম্বুলেন্স ও ২ টি লাশবাহী এম্বুলেন্স দিয়েছে,৪৩ জন ডাক্তার দিয়ে ২৪ ঘন্টা টেলিমেডিসিন সার্ভিস দিচ্ছে। এর পরিধি প্রয়োজনে আরও বাড়ানো হবে। আজ ফ্রি অক্সিজেন সার্ভিসের মাধ্যমে বিপদগ্রস্ত মানুষের পাশে আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ যেভাবে দাঁড়াচ্ছে এটি অত্যন্ত মহৎ উদ্যোগ। আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে এ উদ্যোগকে স্বাগত জানান নাছিম।
এসময় তিনি জামায়াত, বিএনপি ও হেফাজতে ইসলামকে একই মুদ্রার এপিঠ ওপিঠ বলে মন্তব্য করেছেন।
তিনি বলেন, ধর্মকে ঢাল করে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করতে পারবে না। সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে সরকার অবস্থান নিয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। ধর্মনিরপেক্ষ নীতি বাংলাদেশে থাকবে। বাংলাদেশের মানুষকে নিয়ে আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে দেশের উন্নয়নে কাজ করে যাবো।তারা বাংলাদেশের বিরুদ্ধে, স্বাধীনতার বিরুদ্ধে, আমাদের জাতীয় সংগীত ও পতাকার বিরুদ্ধে। তারা বাংলাদেশকে পাকিস্তান বানাতে চায়।
নাছিম বলেন,বিএনপি-জামায়াত-হেফাজত একসঙ্গে হয়ে দানবীয় কায়দায় দাঙ্গা হাঙ্গামা করতে চায়। তারা বাংলাদেশকে সন্ত্রাসী রাষ্ট্রের তকমা দিতে চায়। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী সব শক্তিকে ঐক্যবদ্ধভাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে কাজ করতে হবে।
আওয়ামী লীগের আরেক সিনিয়র নেতা সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক মন্তব্য করেন, সহিংসতায় জড়িত হেফাজতের প্রতি দূর্বলতা দেখানোর কোন সুযোগ নেই। কাউকেই ছাড় দেয়া হবে না। অংকুরেই হেফাজতকে শেষ করতে হবে বাড়তে দেওয়া যাবে না। হেফাজত বাড়লে দেশ আফগানিস্তান হয়ে যাবে।
এসময় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলামকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, আপনি আর আপনার দল ক্রাকডাউন হয়ে গেছেন। হেফাজতের নেতাকর্মীদের মুক্তি চাওয়ার বিষয়ে আপনাদের লজ্জা থাকা উচিত।
যেখানেই একটু কচুরিপানা ধরে সেখানেই বিএনপি দেখে একটু পার হওয়া যায় কিনা। তাদের এই ধরনের রাজনীতির কারণে জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। তাই এদেশের মানুষ বিএনপির কোন আন্দোলন সংগ্রামে সাড়া দেয় না। তাদেরকে কঠোরভাবে বলতে চাই, যারা এই দেশকে অস্থিতিশীল করার অপচেষ্টা চালিয়েছেন বা যারাই এর সঙ্গে জড়িত আছেন তাদের কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না বলেও হুঁশিয়ারী উচ্চারণ করেন নানক।
বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীর দিনে যারা দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করেছেন, বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদ প্রাঙ্গণে যারা রক্তাক্ত করেছেন, বিশৃঙ্খলা করে অগ্নিসংযোগ করেছেন তাদের প্রতি দুর্বলতা দেখানোর কোনো সুযোগ নেই।
আওয়ামী লীগের সভাপতি মন্ডলির সদস্য আরও বলেন, যারা ধর্মের নাম ব্যবহার করে এদেশের ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের বিপথে নিতে চান তারা মতলববাজ। তাদেরকে বরদাস্ত করা হবে না। আমাদের সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে এই ধরনের মতলববাজদের প্রতিহত করতে হবে।
স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি নির্মল রঞ্জন গুহর সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক আফজালুর রহমান বাবুর সঞ্চালনায় করোনা মোকাবেলায় স্বেচ্ছাসেবক লীগের ফ্রি অক্সিজেন সার্ভিসের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতি ম রাজ্জাক, কাজী মোয়াজ্জেম হোসেন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোবাশ্বের চৌধুরী, খায়রুল হাসান জুয়েল, গ্রন্থনা ও প্রকাশনা সম্পাদক কেএম মনোয়ারুল ইসলাম বিপুল, সদস্য জাহাঙ্গীর হোসেন বাবর সহ স্বেচ্ছাসেবক লীগের কেন্দ্রীয় ও মহানগর নেতারা।
সান নিউজ/এমআর/আরআই