নিজস্ব প্রতিবেদক:দেশের বর্তমান করোনা দুর্যোগ ও লকডাউনের ফলে খেটে খাওয়া মানুষ আজ সংকটাপন্ন। এই অবস্থায় নিম্ন ও নিম্ন মধ্যবিত্ত আয়ের মানুষের খাবারের ব্যবস্থা না করে লকডাউন বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত অবাস্তব চিন্তার ফসল ছাড়া অন্য কিছুই নয় বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির (বাংলাদেশ ন্যাপ) চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গানি ও মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া।
তারা বলেন, কঠোর লকডাউনের কোনো আলামত নেই সাধারণের চোখে। ব্যাংক, কলকারখানা, গার্মেন্টস, সীমিত পরিসর ও সময়ে নিত্যপ্রয়োজনীয় দোকান-প্রতিষ্ঠান খোলা, বন্ধ গণপরিবহন, সাধারণ যানবাহন। এতে কেউ হাঁটে, কেউ ঘাটে আর সাধারণ জনগণ নিরুপায় নিষ্ক্রিয় হয়ে ঘরে আটকা।
মঙ্গলবার (২০ এপ্রিল) গণমাধ্যমে প্রেরিত এক বিবৃতিতে নেতৃদ্বয় এসব কথা বলেন।
তারা বলেন, করোনার মত মহামারীর থাবা থেকে আমরা কীভাবে মুক্তি পাব, সে প্রশ্নে যাওয়ার আগে আমাদের আর্থিক সামর্থ্যকে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে আনা উচিত। আমাদের অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি শ্রম-নির্ভর, কৃষি-গার্মেন্টস ও প্রবাসীর অর্জননির্ভর। সাম্প্রতিককালে কৃষি থেকে খাদ্য নিরাপত্তা মোটামুটি নিশ্চিত থাকলেও দেশের অর্থনীতির নিয়ামক গার্মেন্টসশিল্প ও প্রবাসীর আয় করোনার প্রাদুর্ভাবে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত। দেশের অভ্যন্তরে শ্রমজীবী, প্রাতিষ্ঠানিক শ্রমিক/কর্মচারী, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, সাধারণ জনগোষ্ঠীর অর্থনীতি মারাত্মক বিপর্যয়ে পড়েছে।
নেতৃদ্বয় আরও বলেন, লকডাউন কঠোর করতে হলে সংকটে থাকা সাধারণ মানুষকে ঘরে রাখতে হবে। ঘরে রাখা সম্ভব তাদের আর্থিক প্রণোদনা দেয়ার মাধ্যমে। সরকার ঘোষিত আড়াই হাজার টাকা করে মাসিক প্রণোদনা দিলে ১ মাসে ৩০-৩৫ হাজার কোটি টাকার বিষয়।
যদি লকডাউন দীর্ঘ মেয়াদে করতে হয়, তবে কি দেশ সে ভার বহন করতে সক্ষম হবে? ঘাড় খড়্গ নিয়ে সরকার যদি তা করেও, তবে কি পরবর্তী সময়ে ঘুরে দাঁড়ানোর শক্তি অবশিষ্ট থাকবে কি? বর্তমান সময়ে তা বাস্তবায়ন করা অনেকের মতে অসম্ভব। এ অবস্থায় ঢিলেঢালা লকডাউনের ভার দেশ আর বহন করতে পারে না।
নেতৃদ্বয় বলেন, বিজ্ঞানীরা শুরু থেকেই বলছেন, দ্বিতীয় এমনকি তৃতীয় ধাক্কা আসবে। তাতে কর্ণপাত না করে আমরা মগ্ন ছিলাম সংক্রমণ এবং মৃত্যু হ্রাসের কৃতিত্বে অবগাহনে। পরিস্থিতি যখন আবার খারাপের দিকে, তখন আইসিইউ, অক্সিজেন ও ন্যাজাল ক্যানোলার অভাব স্বাস্থ্যকর্মীদের দুশ্চিন্তায় ফেলছে।
এই অভাব দূর করে সক্ষমতা বাড়ানোর জন্য যথেষ্ট সময় পেয়েছিলাম আমরা, যার সঠিক ব্যবহার হয়নি। অর্থহীন বাক্যব্যয় না করে, এখনো এসবেই দ্বিগুণ মনোযোগ দেয়া প্রয়োজন দেশের স্বাস্থ্য নেতৃত্বের।
সাননিউজ/টিএস/এএসএম