নিজস্ব প্রতিবেদক : আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক পর্যায়ে ব্যর্থতার চিত্র ফুটে উঠছে। এ প্রেক্ষিতে উগ্রবাদিদের হামলা মোকাবেলায় কতটা শক্তিশালী আওয়ামী লীগ, এ প্রশ্ন এখন দলটির নেতাকর্মীদের মাঝে। নেতাকর্মীরা বলছেন, সাম্প্রতিক সময়ে হেফাজতে ইসলামের ডাকা হরতালের দিন রাজধানী ঢাকাসহ দেশের কোথাও দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের খোঁজে পাওয়া যায়নি। এতেই সাংগঠনিক দুর্বলতা ও ব্যর্থতা ফুটে উঠেছে।
তৃণমূলের অনেক নেতাকর্মীরাই বলছেন, এ ব্যর্থতার জেরেই মূলত বিভাগীয় সাংগঠনিক পর্যায়ে পরিবর্তন আনা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার নির্দেশক্রমে সাংগঠনিক সম্পাদকদের বিভাগীয় দায়িত্ব পুনর্বিন্যাস করা হয়েছে বলে দলটির দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানান।
সান সিউজ অনলাইন পোর্টালের সাথে কথা হয় স্বেচ্ছা সেবকলীগের কর্মী গোলাম মোস্তফার সাথে। তিনি বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে হেফাজতে ইসলামের ডাকা হরতালে সাংগঠনিক দুর্বলতা ও ব্যর্থতা ফুটে উঠেছে। এই জন্যই সাংগঠনিক সম্পাদকদের বিভাগীয় দায়িত্বে পরিবর্তন আনা হয়েছে। সেদিন হেফাযতের আক্রমন ঠেকাতে তৃণমূলের কর্মীরাই মাঠেছিল। আমাদের আত্বরক্ষার্থে আমাদেরই দাড়াতে হয়েছিল। রাজপথে কোথাও কেন্দ্রীয় নেতাদের দেখা মেলেনি।
সূত্রে আরও জানা যায়,দলটির বেশ কয়েকজন বিভাগীয় পর্যায়ের দায়িত্বে থাকা সাংগঠনিক সম্পাদকদের মানছেনা জেলার নেতারা। এর থেকেই কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদকদের বিভাগীয় দায়িত্ব পরিবর্তন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আওয়ামী লীগের সম্পাদকমণ্ডলীর একজন সদস্য বলেন, চার জেলার ওই বিভাগে দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদককে দায়িত্ব পরিবর্তন করতে গিয়ে বাকি দুই সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব পরিবর্তন করতে হয়েছে। সাংগঠনিক সম্পাদকদের বিরুদ্ধে অভিযোগের শেষ নেই।
তবে এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা বিভাগের দায়িত্ব পাওয়া মির্জা আযম সাননিউজ পোর্টালকে বলেন, এটা দলের একটা রুটিন ওয়ার্ক। যার দায়িত্ব অন্য বিভাগে দেয়া হয়েছে তিনি সাংগঠনিক সম্পাদক পদেই আছেন। এতে বিশেষ কিছু পরিবর্তন হয়নি।
তবে এ বিষয়ে মির্জা আযম সাংগঠনিক দূর্বলতার কথা স্বীকার করে বলেন, আমি ঢাকা বিভাগের দায়িত্বে পাওয়ার পর দেখলাম পুরনো কমিটি দিয়েই চলছে। বারবার নির্দেশনা দেয়ার পরও এখনও পর্যন্ত পূর্ণাঙ্গ কমিটি করতে পারে নাই জেলার নেতারা।
তিনি বলেন, আমরা কি সংঘবদ্ধ? না আমরা সংঘবদ্ধ নই। কারণ এখনও অপূর্ণাঙ্গ কমিটি দিয়েই চলছে আওয়ামী লীগ। তাই সাংগঠনিক শক্তি বৃদ্ধি করতে যত দ্রুত সম্ভব পূর্ণাঙ্গ কমিটি করতেই হবে। নতুবা উগ্রবাদি জামায়াত-শিবির ও হেফাজতের তান্ডব ঠেকানো সম্ভব হবেনা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আওয়ামী লীগের একজন সাংগঠনিক সম্পাদক বলেন, সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডে দুর্বলতার জন্যই বিভাগ পরিবর্তন করে দেয়া হয়েছে। নেত্রীকে দলের তৃণমূলের বিষয়ে সঠিক সময়ে, সঠিক তথ্য না দেয়াও অন্যতম কারণ হতে পারে।
পুনর্বিন্যাস করা তালিকা অনুযায়ী সিলেট বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন আহমদ হোসেন। তিনি আগে চট্টগ্রাম বিভাগের দায়িত্বে ছিলেন। তার জায়গায় চট্টগ্রাম বিভাগের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপনকে। তিনি ছিলেন রংপুর বিভাগের দায়িত্বে। রংপুর বিভাগে নতুন করে দায়িত্ব পেয়েছেন সাখাওয়াত হোসেন শফিক। তিনি আগে সিলেট বিভাগের দায়িত্বে ছিলেন।
এ ছাড়া খুলনা বিভাগে বিএম মোজাম্মেল হক, রাজশাহী বিভাগে এস এম কামাল হোসেন, ঢাকা বিভাগে মির্জা আজম, বরিশাল বিভাগে অ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন ও ময়মনসিংহ বিভাগে শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল বহাল রয়েছেন।
সান নিউজ/এমআর/