নিজস্ব প্রতিবেদক : সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলায় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, আজকে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট হয়েছে সুনামগঞ্জের শাল্লা থানায়। ওবায়দুল কাদের সাহেব বললেন, এটা বিএনপি করেছে। ধরা পড়লো কে? এক নম্বর আসামী ধরা পড়লো যুবলীগের। আর আপনারা বলছেন, এর সঙ্গে বিএনপি জড়িত। বন্ধুরা, সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা এবং সাম্প্রদায়িক অসম্প্রীতি যা কিছু হয়েছে সব আওয়ামী লীগের আমলে হয়েছে।
বুধবার (২৪ মার্চ) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের মিলনায়তনে ৯০'র ডাকসু ও সর্বদলীয় ছাত্রঐক্য আয়োজিত এক সভায় তিনি এসব মন্তব্য করেন। ‘২৪ মার্চ কালো দিবস’ উপলক্ষে এই আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন ডাকসুর সাবেক ভিপি আমানউল্লাহ আমান।
রোহিঙ্গা শিবিরে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ৭ ঘণ্টায় প্রায় ৫ হাজার বাড়ি পুড়ে গেছে এবং জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী ১৫ জন মারা গেছে। আমরা বারবার করে বলেছি, রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান করতে হবে। কারণ এতোটুকু জায়গায় ১২ লক্ষ লোককে রাখা, তাদের ভরণ পোষণ করা এবং তাদের সুন্দরভাবে রাখা বাংলাদেশের মতো গরীব দেশের পক্ষে...। ও আমরা তো আবার গরীব নই। আমরা না কি উচ্চ দিকে যাচ্ছি। খুব কঠিন হয়ে যাচ্ছে আর কি।
সরকারকে উদ্দেশ্য করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমরা বলেছি, এটাকে সমাধান করার চেষ্টা করেন। আপনারা সমাধান করার চেষ্টা করছেন না। আপনারা এই সমস্যাটাকে নিয়ে ব্যবহার করার চেষ্টা করছেন। দেখেন কোন উদ্যোগ নাই। আজ পর্যন্ত আমাদের প্রধানমন্ত্রী শুধু রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানের জন্য কোন রাষ্ট্র সফর করেননি। সেই চীন। এতো চমৎকার বন্ধুত্ব আমাদের। ব্যবসা ও বাণিজ্য হচ্ছে, খুব ভালো। সেই চীন তো রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধান করবার জন্য আমার পাশে এসে দাঁড়ায় নাই। কেনো? আপনাদের (সরকার) ব্যর্থতার জন্য। আপনাদের কূটনৈতিক ব্যর্থতার জন্য সমগ্র বিশ্বকে আপনাদের পক্ষে আনতে পারেনি।
তিনি বলেন, আমাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রী বলেন, ভারতের সঙ্গে আমাদের স্বামী-স্ত্রী ও রক্তের সম্পর্ক আছে। কিন্তু সেই ভারত তো আমার পক্ষে রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে কথা বলে নাই।
করোনা ছড়িয়ে পড়েছে উল্লেখ করে ফখরুল বলেন, করোনাকে সুষ্ঠুভাবে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য না কি প্রধানমন্ত্রী এর মধ্যে একটি পুরস্কারও পেয়েছেন। অথচ আজকে সমস্ত বাংলাদেশে করোনা ছড়িয়ে পড়েছে। কিন্তু এটা নিয়ন্ত্রণের জন্য যে সমস্ত কাজগুলো করার কথা ছিল, সেগুলো তারা করেনি।
তিনি বলেন, আজকের পত্রিকায় আপনারা দেখেছেন যে, প্রায় সাড়ে ৩ হাজারের মতো সংক্রমিত হয়েছে। এটা হচ্ছে সরকারের হিসেবে। এই হিসেব যে সঠিক নয়, আমার বাসায় যে ছেলেটা কাজ করে, ও গতকাল টেস্ট করতে গিয়েছিল। ফিরে এসে বলে যে, স্যার ফরম নাই। এই রকম সারাদেশে টেস্টের কোন ফরম পাওয়া যায় না। টেস্ট হয় না। এতে যতটুকু হয় তাতেই ৩ হাজার ৪৭৫ না কি কত জন এসেছে।
বর্তমান সরকার অত্যান্ত কৌশলি সরকার মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, সব সময়ই বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে। কারণ এটা অবলম্বন না করলে তারা ক্ষমতায় থাকতে পারবে না। তারা তো জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে ক্ষমতায় আসেনি। তারা জনগণ থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন।
আওয়ামী লীগ সরকার দেশ ও জাতিকে বিভক্ত করে ফেলেছে বলেও মন্তব্য করেন ফখরুল।
নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমাদের একটা কথা মনে রাখতে হবে। আমাদেরকে কিন্তু গণতন্ত্র কেউ এনে দেবে না। গণতন্ত্র আমাদেরকেই নিয়ে আসতে হবে। এজন্য আমাদের সমস্ত শক্তিগুলোকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
ডাকসুর সাবেক ভিপি আমান উল্লাহ আমানের সভাপতিত্বে সভায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, বিশেষ সম্পাদক ডা. আসাদুজ্জামান রিপন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, নির্বাহী কমিটির সদস্য নাজিম উদ্দিন আলম প্রমুখ বক্তব্যে রাখেন।
সাননিউজ/টিএস/এম