নিজস্ব প্রতিবেদক : বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, করোনার দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশ সাবধানতা অবলম্বন করছে না। ভারতের লকডাউন দিচ্ছে আবার ইউরোপেও লকডাউন। কিন্তু বাংলাদেশে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। কারণ, তাদের সামনে কিছু অনুষ্ঠান রয়েছে। যেখানে সংক্রমণের হার ৩ এর নিচে নেমে এসেছিল, সেখানে সংক্রমণের হার গতকাল সোমবার ১০ এর উপরে।
মঙ্গলবার (১৬ মার্চ) জাতীয় প্রেস ক্লাবের আবদুস সালাম হলে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী সংস্কৃতি দল আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
খন্দকার মোশাররফ বলেন, গত বছর ৮ মার্চ করোনা এদেশে দেখা দিয়েছিল। শুরুতে কিন্তু এ সরকার এই করোনা পরিস্থিতিকে এভোয়েড করেছে তাদের একটি জাতীয় প্রোগ্রামকে সামনে রেখে। কিন্তু সেই প্রোগ্রাম হয় নাই। তখন সরকারের পক্ষ থেকে অনেকেই বলেছে যে আমরা প্রস্তুত। কিন্তু যখন টেস্ট করা শুরু হল তখন একটি মাত্র প্রতিষ্ঠান আইডিসিআর, টিকা ক্রয় মাত্র একটি প্রতিষ্ঠানে থেকে তারা করেছে। বিকল্প চেষ্টা তারা করল না, সারাবিশ্ব কিন্তু একাধিক সোর্স থেকে টিকা ক্রয় করেছে। ইউরোপ যে দামে টিকা ক্রয় করেছে তার থেকে দ্বিগুণ দামে বাংলাদেশ ক্রয় করেছে। সরকারের নানা অবহেলার কারণে আজকে আবার করোনা বৃদ্ধি পাচ্ছে। সারা পৃথিবীতেই এটা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই করোনা তার চরিত্র বদল করে বৃদ্ধি পাচ্ছে সারা পৃথিবী ব্যবস্থা নিচ্ছে। কিন্তু বাংলাদেশ সাবধানতা অবলম্বন করছে না।
করোনা বিষয়ে সরকার এখনও উদাসিন মন্তব্য করে তিনি বলেন, এটা যখন বাড়বে তখন বাড়াতেই শুরু করবে। আমরা মনে করি, সরকার এখনও উদাসীন কিংবা ইচ্ছাকৃতভাবে করোনার দ্বিতীয় ঢেউটাকে প্রতিহত করার বিষয়ে। যে কর্মকান্ডগুলো করা দরকার তার একটাও তারা করছে না।
তিনি বলেন, এই সময় আমরা দেখতে পাচ্ছি বিদেশ থেকে মেহমানরা বাংলাদেশে আসছে। করোনারি ঊর্ধ্বমুখী অবস্থায় তারা যে আসছে গত মার্চ মাসে, ভারতের প্রধানমন্ত্রীর আসার কথা ছিল। তখন তিনি বলেছিলেন করোনার কারণে তিনি আসবেন না। গত মার্চ মাসে করোনা সংক্রমনের যে হার ও মৃত্যুহার তারচেয়ে এখন সংক্রমণ অনেক বেশি। তারপরও যে তারা আসছেন এজন্য তাদেরকে আমরা স্বাগত জানাই।
সরকার প্রধানদের আগমনে সকল রাজনৈতিক ও সামাজিক অনুষ্ঠান বন্ধ করে দেয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন বিএনপি এই নেতা বলেন, কেন এটা করা হয়েছে। সরকারপ্রধান অতীতেও বাংলাদেশ এসেছে। আমরা বলছি এই খবরগুলি সরকার প্রধানরা জানেন যে তাদের আগমন উপলক্ষে জনগণকে দুর্ভোগকে ফেলা হচ্ছে, তাহলে তারা লজ্জিত হবে। তিনি দশ দিন যাবত সকল রাজনৈতিক সামাজিক অনুষ্ঠান বন্ধের নির্দেশনা প্রত্যাহারের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
তিস্তা চুক্তি নিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বলেন, তিস্তা চুক্তি নিয়ে বহু দিন যাবৎ আলাপ-আলোচনা চলছে। গতবার যখন দুই প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে আলাপ আলোচনা হল তখন এই তিস্তা চুক্তির বিষয়ে এজেন্ডাও ছিল না। এবং দুই সারকার থেকেই বলা হয়েছে যে এটা এজেন্ডায় ছিল না। ভারতে কেন্দ্রীয় সরকার থেকে বলা হল, আমাদের তো কোন আপত্তি নাই, কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সরকার এতে রাজি হচ্ছেন না। এখন আমাদের পরাষ্ট্রমন্ত্রী বলছেন ১০ বছর আগে নাকি এই তিস্তা চুক্তির পাতায় পাতায় সই হয়ে রয়েছে। এখন জনগণের পক্ষ থেকে আমাদের জিজ্ঞাসা, আপনারা তো ১০ বছর ধরে ক্ষমতায়, আর আজকে যে বললেন ১০ বছর ধরে পাতায় পাতায় স্বাক্ষর হয়ে রয়েছে, তাহলে কী রহস্য রয়েছে যে এ বিষয়টা কি আপনারা জনগণের সামনে তুলে ধরলেন না। যদি পাতায় পাতায় সই হয়ে থাকে তাহলে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর এই সফরে তিস্তা চুক্তি স্বাক্ষর সম্পাদন শেষ হবে। এবং জনগণের কাছে প্রকাশ করবেন।
টিএস/বিএস