নিজস্ব প্রতিবেদক : দেশে আজকে নারীরা বন্দি বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, আজকে শুধু মাত্র নারীরা নয়, সমগ্র বাংলাদেশের মানুষ নির্যাতিত। তারা বন্দি। তারা তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়েছে।
ফখরুল বলেন, আজকে স্বাধীনতার সূবর্ণ জয়ন্তী পালিত হচ্ছে, স্বাধীনতার সূবর্ণ জয়ন্তীতে আমাদের যারা অধিকারের জন্য আন্দোলন করছে, আমাদের ছাত্র নেতা, লেখক, সাংবাদিকদের উপর নির্মম নির্যাতন চলছে। আজকে দুর্ভাগ্য এই জাতির, ৫০ বছর পরেও আমরা বলতে পারি না যে, আমরা স্বাধীন। মা-বোনেরা নিরাপদে চলাফেরা করতে পারেন না। তারাও বলতে পারেন না যে, তারা স্বাধীন।
সোমবার (৮ মার্চ) দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ‘আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে' জাতীয়তাবাদী মহিলা দল আয়োজিত র্যালী পূর্ব এক সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, এই সরকার সকলের স্বাধীনতাকে হরণ করে নিয়েছে। বাক- স্বাধীনতাকে হরণ করেছে। তাদের মৌলিক ও গণতান্ত্রিক স্বাধীনতাকে হরণ করে নিয়েছে। সুতরাং তখনই নারীদের অধিকার আদায় হবে, তখনই নারীদের অধিকারগুলো সংরক্ষিত করা যাবে যখন সত্যিকার অর্থে বাংলাদেশে একটি গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠা হবে।
পুরুষতান্ত্রিক সমাজ ও অন্ধকার থেকে বেরিয়ে এসে সবাইকে আলোতে আসতে হবে বলেও মন্তব্য করেন মির্জা ফখরুল।
আন্তর্জাতিক নারী দিবস প্রসঙ্গে বিএনপি মহাসচিব বলেন, এদিনে স্মরণ করতে চাই, বেগম রোকেয়াকে। যিনি এই উপমহাদেশে, বিশেষ করে বাংলাদেশে নারীদের উন্নয়নের জন্য, তাদেরকে অন্ধকার থেকে আলোতে নিয়ে আসার জন্য প্রকৃত ভূমিকা পালন করেছিলেন। এরপরই যে মহিলাকে সবেচেয়ে বেশী, যে নারী নেত্রীকে সবেচেয়ে বেশী শ্রদ্ধা জানাতে চাই, তিনি বেগম খালেদা জিয়া। উনি বাংলাদেশের উন্নয়নের জন্য সবচেয়ে বড় কাজটি করেছিলেন। মেয়েদের বিনা বেতনে গ্রাজুয়েশনের ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন। এটা খালেদা জিয়ার একটা যুগান্তকারী পদক্ষেপ ছিল।
মির্জা ফখরুল বলেন, সমগ্র পৃথিবীতে নারীদের যে অধিকার, সেই অধিকারকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য এবং সেই অধিকারগুলোকে সুসংগঠিত করার জন্য সকল মানুষই সচেতনভাবে দায়িত্ব পালন করে। যারা দেশ পরিচালনা করছেন, তাদের সবচেয়ে বড় দায়িত্ব পালন করতে হয়। কিন্তু দুর্ভাগ্য বাংলাদেশের, এখানে যারা নারীদের অধিকারের বিষয়ে সবচেয়ে বেশী দায়িত্ব পালন করেছেন তাদেরকে সবচেয়ে বেশী অবহেলা করা হয়।
সংক্ষিপ্ত পথসভা শেষে মহিলা দলের উদ্যাগে র্যালী অনুষ্ঠিত হয়। র্যালিটি বিএনপির কার্যালয় থেকে কাকরাইল মোড় হয়ে কেন্দ্রীয় অফিসের সামনে এসে শেষ হয়।
র্যালিতে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ছবি সম্বলিত ফেস্টুন নিয়ে মহিলা দলের নেত্রী-কর্মীরা অংশ নেন। এসময় তারা জিয়ার সৈনিক এক হও লড়াই করোসহ বিভিন্ন স্লোগানে রাজপথ মুখরিত করে তোলেন।
মহিলা দলের আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে সকাল থেকেই বিএনপির কার্যালয়সহ আশ-পাশের এলাকায় কঠোর নিরাপত্তার বলয় গড়ে তোলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। নিরাপত্তায় পোশাকধারী পুলিশের পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন সংস্থার সদস্যদেরকেও মোতায়েন করা হয়।
আয়োজক সংগঠনের সভাপতি আফরোজা আব্বাসের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদের সঞ্চালনায় সভায় বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক নূরে আরা সাফা প্রমুখ বক্তব্যে রাখেন।
সাননিউজ/টিএস/এম