নিজস্ব প্রতিবেদক: আওয়ামী লীগ অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে নতুন প্রজন্মকে ইতিহাস থেকে বঞ্চিত করে তাদেরকে ভ্রান্ত ইতিহাস দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, শুধু ক্ষমতায় টিকে থাকতে এক ব্যক্তি ও এক পরিবারকে মহিমান্বিত করতে তারা মিথ্যা ইতিহাস দিয়ে যাচ্ছে।
রোববার জাতীয় প্রেসক্লাবের মিলনায়তনে '৭ মার্চ উপলক্ষে' এক আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
বিএনপির স্বাধীনতার সূবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন জাতীয় কমিটি এই সভার আয়োজন করে।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আওয়ামী লীগ অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে নতুন প্রজন্মকে ইতিহাস থেকে বঞ্চিত করে তাদেরকে ভ্রান্ত ইতিহাস দিচ্ছে। ধারণা দিচ্ছে- একটা মাত্র দল, একটা ব্যক্তি। আমরা সেই ধারণার বিপরীতে প্রকৃত সত্য তুলে ধরতে চাই।
তিনি বলেন, তাদের (আওয়ামী লীগ) বক্তব্যের কোথাও তোফায়েল আহমেদের কথা খুঁজে পাবেন না। তারা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর কথা একবারও উচ্চারণ করেন না। এমনকি মুক্তিযুদ্ধে যে সর্বাধিনায়ক ছিলেন, এমএজি ওসমানী, তার নামও একবারও উচ্চারণ করে না। আর যুদ্ধকালীন যে সরকার, যিনি নেতৃত্ব দিলেন 'তাজউদ্দিন আহমেদ' তার নামও একবারও উচ্চারণ করে না। কত সংকীর্ণ এরা! কত ভয়ঙ্কর। শুধু তাদের ব্যক্তিগত স্বার্থে, ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য এবং নিজেদের একজন মানুষ ও একটি পরিবারকে মহিমান্বিত করবার জন্য মিথ্যা ইতিহাস মানুষের উপর চাপিয়ে দিচ্ছে।
ফখরুল বলেন, এই ৭ মার্চ করা উচিত কি উচিত নয়, এটা নিয়ে অনেক কথা হয়েছে। তাদের উদ্দেশ্য বলতে চাই, ৫০ বছর আগে এই ঘটনাগুলো ঘটেছিল। আর ৫০ বছর পরে নতুন প্রজন্মের নতুন ইতিহাস জানার অধিকার রয়েছে। আজকে যে রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট, সেই প্রেক্ষাপটে সত্যকে এড়িয়ে গিয়ে সম্পূর্ণভাবে একটা দলীয় ধারণা এই জাতির উপরে চাপিয়ে দেয়া হচ্ছে। আমরা সেই জায়গায়, এদেশের সবচেয়ে বড় দল হিসেবে মনে করি, এই সত্যি ইতিহাস ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে তুলে ধরা উচিত।
সূবর্ণ জয়ন্তী উদযাপনের বিষয় নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে বিএনপি বসেছিল উল্লেখ করে ফখরুল বলেন, সাংবাদিকরা বলেছিলেন, আপনারা কেন সূবর্ণ জয়ন্তী পালন করছেন। স্বাধীনতা কি একা আওয়ামী লীগের। না কোনো ব্যক্তির? স্বাধীনতা হচ্ছে, সমগ্র দেশের।
স্বাধীনতার সূবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন জাতীয় কমিটির আহ্বায়ক ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেনের সভাপতিত্বে সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, বেগম সেলিমা রহমান ও ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বক্তব্যে রাখেন।
১৯৭১ সালের এই দিনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের যুগান্তকারী ভাষণের স্মারক হিসেবে দিনটি অবিস্মরণীয় হয়ে আছে। এই দিনে তৎকালীন রেসকোর্স ময়দানের (বর্তমানে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) বিশাল জনসমাবেশে দেয়া ওই ভাষণে বঙ্গবন্ধু বাঙালি জাতিকে স্বাধীনতাযুদ্ধের চূড়ান্ত প্রস্তুতি নেয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন।
বিশাল জনসমুদ্রে দাঁড়িয়ে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।
পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে লড়াই শুরু করার আহ্বানের অধীর অপেক্ষায় ছিল বাঙালি জাতি। বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের উদ্দীপ্ত ঘোষণায় বাঙালি জাতি পেয়ে যায় স্বাধীনতার দিকনির্দেশনা।
সাননিউজ/টিএস/আরআই